কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফুঁসছে কাশ্মীরের একাংশ। পরিস্থিতি সামলাতে ওল্ড শ্রীনগর-সহ উপত্যকার একাংশে কার্ফু জারি করেছে প্রশাসন। ছবি: পিটিআই।
বৃহস্পতিবার রাতে জামাত-এ–ইসলামিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তার পরেই কড়া পদক্ষেপ শুরু হয়েছে জামাতের বিরুদ্ধে। বেআইনি কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগে ইউএপিএ ধারা আনা হয়েছে জামাতের বিরুদ্ধে। আটক করা হয়েছে জামাতের কয়েক জন নেতাকেও। সেই ঘটনার পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীরে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে ক্ষোভে ফুঁসছে কাশ্মীরের একাংশ।
পরিস্থিতি সামলাতে ওল্ড শ্রীনগর-সহ উপত্যকার একাংশে কার্ফু জারি করেছে প্রশাসন। বিধিনিষেধ চাপানো হয়েছে শ্রীনগর, অনন্তনাগ-সহ দক্ষিণ কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায়। কোপ পড়েছে ইন্টারনেটের গতিতেও। বিরাট সংখ্যক পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী নামানো হয়েছে রাস্তায়। আন্দোলন দমনে রাস্তায় বসানো হয়েছে কাঁটাতার। গত রাতে জামাতের উপর নিষেধাজ্ঞার জারির পরেই উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্য কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় চালানো হয়েছে অভিযান। বন্ধ করা হয়েছে বান্দিপোরায় জামাতের একটি স্কুল। আগামী দু’-এক দিনের মধ্যেই নির্ধারিত হবে জামাত পরিচালিত আরও ৭০০ স্কুলের ভাগ্য।
গত সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গ্রেফতার করেছিল জামাতের ৩০ নেতাকে। তার মধ্যে ছিলেন দলীয় প্রধান আব্দুল হামিদ ফায়াজ়, জ়াহিদ আলি, গুলাম কাদির লোন, আব্দুর রউফ, মুদাসির আহমদের মতো শীর্ষস্থানীয় নেতা।
জামাত নিয়ে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি বৃহস্পতিবারই রাজ্যের জেনারেল ক্যাটেগরির দরিদ্রদের জন্য সরকারি চাকরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ এবং রাজ্যের তফসিলি জাতি-জনজাতির পদোন্নতিতে সংরক্ষণের জন্য অধ্যাদেশ জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। রাজ্যে বিধানসভায় এবং নির্বাচিত সরকারের অনুপস্থিতির কারণে রাজ্যপালের মতামত নিয়েই কেন্দ্র এই পদক্ষেপ করেছে। জম্মু-কাশ্মীরের সংরক্ষণ আইনে এতদিন নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী মানুষেরা সংরক্ষণের সুবিধা পেতেন। এ বার থেকে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার মানুষরাও এই সুবিধা পাবেন। এতে কাশ্মীর উপত্যকার পাশাপাশি জম্মুর মানুষরাও সুবিধা পাবেন বলে সরকারি সূত্রে দাবি। এ জন্য একটি অধ্যাদেশ ও সাংবিধানিক নির্দেশ জারি করবে কেন্দ্র। তবে সংবিধানের ৩৭০-তম অনুচ্ছেদ বা ৩৫এ অনুচ্ছেদে কোনও বদল হচ্ছে না বলে কেন্দ্র স্পষ্ট করে দিয়েছে।
যে ভাবে কেন্দ্রীয় সরকার পদক্ষেপ করেছে তা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এবং মেহবুবা মুফতি।