ফের দূষণে মুড়েছে দিল্লি, বৃষ্টির খোঁজে হন্যে রাজধানী

মাঝে দু’দিনের জন্য সাফ হয়েছিল দিল্লির আকাশ। কিন্তু আজ, রবিবার ফের ধোঁয়াশার কবলে রাজধানী। বাতাসে ফের বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে ক্ষতিকর কণার পরিমাণ। আজও কাশি, বুকে অস্বস্তি, চোখ জ্বালার মতো উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হয়েছেন বহু রাজধানীবাসী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:০৭
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

অবস্থা ফের যে কে সেই!

Advertisement

মাঝে দু’দিনের জন্য সাফ হয়েছিল দিল্লির আকাশ। কিন্তু আজ, রবিবার ফের ধোঁয়াশার কবলে রাজধানী। বাতাসে ফের বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে ক্ষতিকর কণার পরিমাণ। আজও কাশি, বুকে অস্বস্তি, চোখ জ্বালার মতো উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হয়েছেন বহু রাজধানীবাসী। সব মিলিয়ে দূষণ প্রশ্নে দিল্লি যে তিমিরে ছিল, ফিরে গিয়েছে সেখানেই! যার জেরে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স তাদের নেউয়ার্ক থেকে দিল্লিগামী উড়ান সোমবার পর্যন্ত বাতিল করে দিয়েছে। এই সূত্রে অন্য আন্তর্জাতিক উড়ানসংস্থাগুলিও একই পথে হাঁটবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। যথারীতি এ দিনও বহু ট্রেন বাতিল হয়েছে।

পরিস্থিতির উন্নতিতে দিল্লিতে ১৫ বছরের পুরনো পেট্রোল গাড়ি ও ১০ বছরের পুরনো ডিজেল গাড়ি চলাচলে অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে দিল্লি সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। পাশাপাশি রাস্তার ধারে গাড়ি পার্ক করা বন্ধের প্রশ্নেও কড়া মনোভাব নেওয়ার জন্য দিল্লি সরকার ও পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জোড়-বিজোড় নীতিতে বিশেষ লাভ না হওয়ায় আদালতের নির্দেশে আগামিকাল থেকে ওই নীতি চালু হচ্ছে না বলে জানিয়েছে দিল্লি সরকার।

Advertisement

দিল্লিতে দূষণের জন্য গাড়ির উপরে বারেবারে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় ক্ষুব্ধ গাড়ি মালিকদের একাংশ। আইআইটি (কানপুর)-এর একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই মুহূর্তে দিল্লিতে মোট গাড়ির সংখ্যা ১ কোটির কিছু বেশি। যা দিল্লির বায়ু দূষণের ৯ শতাংশের জন্য দায়ী। ওই ৯ শতাংশের এক-তৃতীয়াংশ আবার হয়ে থাকে ৬৫ লক্ষ মোটরবাইক ও প্রায় ৮৫ হাজার অটোর দৌলতে। আর ব্যক্তিগত গাড়ির কারণে দূষণের পরিমাণ মোট দূষণের ১০ শতাংশ। তাই দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকায় চলা ওই ৬৫ লক্ষ মোটরবাইকের চলাচল বন্ধ করার সুপারিশ করেছে একাধিক মহল। কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে দিল্লির অর্থনীতি একেবারে ভেঙে পড়বে বলেই মত অনেকের।

পরিবেশবিদেরা বলছেন, যত দিন দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকায় ফসলের গোড়া পোড়ানো, ইট ভাটা, পাথর খাদান, আর্বজনা জ্বালানো বন্ধ না করা হবে, তত দিন দূষণের সমস্যা থেকেই যাবে। পাশাপাশি নির্মাণ কাজ, ডিজেল জেনারেটরের চালানোর ক্ষেত্রে নিয়ম না মানাও দিল্লির পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলেছে।

আজও দিল্লিতে ভাসমান কণার পরিমাণ ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় বহু গুণ বেশি। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এই কণার কারণে গত সাত দিনে এইমস-এ শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা, চোখ ও গলা জ্বালা, কাশির উপসর্গ নিয়ে রুগি আসার সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই হাসপাতালের চিকিৎসক রণদীপ গুলেরিয়া।

মৌসম ভবন জানাচ্ছে, অন্যান্য বারের তুলনায় এ বার দিল্লিতে দ্রুত পারদ নামছে। গত কাল দিল্লির ন্যূনতম তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রিতে নেমে এলেও বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯৮ শতাংশ। অতিরিক্ত জলীয় বাষ্প ও বাতাসে দূষিত কণার জন্যই তৈরি হচ্ছে ধোঁয়াশা। আগামী মঙ্গল-বুধবারে দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকায় হাল্কা বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন। আবহাওয়াবিদেরা মনে করছেন, এতে কুয়াশা বাড়লেও বাতাসে দূষণ স্তর কিছুটা হলেও কমবে। ধোঁয়াশা কমবে। আপাতত সেই বৃষ্টির দিকেই তাকিয়ে গোটা দিল্লি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন