পাহাড়ে বিপদে পড়লে উদ্ধারের দিশা দেখাতে পারে নতুন যন্ত্র

এ ভাবেই পাহাড়ের কোলে হারিয়ে গিয়েছেন বহু অভিযাত্রী। কখনও বিপদের খবর পেতে দেরি, কখনও সময়ে উদ্ধার না-হওয়া— এ ভাবেই হারিয়ে গিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯ ০৩:১৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

নন্দাদেবী ইস্ট অভিযানে গিয়ে মে মাসে তুষারধসের মুখে পড়েছিল আট বিদেশি অভিযাত্রীর দল। কিন্তু দলটি ঠিক কোথায় বিপদে পড়েছে, তা বুঝতেই কেটে যায় কয়েক দিন। সঙ্গে ছিল খারাপ আবহাওয়ার বাধা। প্রায় এক মাস পরে পাহাড়ের বুক থেকে উদ্ধার হয় সাত অভিযাত্রীর দেহ। অষ্টম অভিযাত্রী আজও নিখোঁজ।

Advertisement

এ ভাবেই পাহাড়ের কোলে হারিয়ে গিয়েছেন বহু অভিযাত্রী। কখনও বিপদের খবর পেতে দেরি, কখনও সময়ে উদ্ধার না-হওয়া— এ ভাবেই হারিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। এই প্রেক্ষিতে সামনে আসছে নতুন এক যন্ত্রের কথা, যার সাহায্যে পাহাড়ের যে-কোনও জায়গা থেকে পর্বতারোহী তাঁর অবস্থানের কথা জানাতে পারবেন। বিপদে পড়ে ওই যন্ত্রের বোতামে চাপ দিলেই জানা যাবে, তিনি ঠিক কোথায় আছেন। তাড়াতাড়ি উদ্ধার করা যাবে তাঁকে। যন্ত্রটির নাম ‘পার্সোনাল লোকেটার বিকন’ (পিএলবি)। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ কোথায় রয়েছে, সেটা জানা যায় তার ব্ল্যাক বক্সের ইমার্জেন্সি লোকেটার ট্রান্সমিটার (ইএলটি) মারফত। একই ভাবে কাজ করবে পিএলবি।

অ্যামেচার রেডিয়ো সোসাইটি অব ইন্ডিয়ার সদস্য আর্য ঘোষ এই যন্ত্র ব্যবহারের আর্জি জানিয়ে চিঠি লিখেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, ক্রীড়ামন্ত্রী কিরণ রিজেজু-কে। ইসরো-র অন্যতম ডিরেক্টর পিভি বেঙ্কিটাকৃষ্ণন তাঁর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, পর্বতারোহীদের ক্ষেত্রে এই যন্ত্র বাধ্যতামূলক করা উচিত।

Advertisement

দুই বাঙালি পর্বতারোহী দেবাশিস বিশ্বাস এবং মলয় মুখোপাধ্যায়ও ওই যন্ত্রের বিষয়ে উৎসাহী। দেবাশিসবাবুর কথায়, ‘‘শুধু পর্বতারোহণ নয়, ট্রেকিংয়ে গেলেও ওই যন্ত্র বাধ্যতামূলক করা উচিত। শুধু দেখতে হবে, যন্ত্রের ওজন যেন বেশি না-হয়।’’ মলয়বাবু বলেন, ‘‘আমরা একটি ছোট যন্ত্র ব্যবহার করি, যেটি উপগ্রহ মারফত কাজ করে। তবে তার সাহায্যে শুধু মেল বা বার্তা পাঠানো যায়। স্যাটেলাইট ফোনও আছে। কিন্তু সীমান্ত এলাকা হওয়ায় হিমালয়ে সেনা ছাড়া অন্য কেউ কোনও ধরনের যোগাযোগ যন্ত্র নিয়ে যেতে পারে না।’’

আর্যবাবু জানান, উপগ্রহ মারফত বিপদগ্রস্ত নাবিক বা বিমানের সঙ্কেত বুঝে নিয়ে তাঁদের সাহায্য করতে মিশন কন্ট্রোল সেন্টার (এমসিসি) রয়েছে বেঙ্গালুরুতে। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাইয়ে রয়েছে রেসকিউ কো-অর্ডিনেশন সেন্টার। এমসিসি থেকে স্থানীয় রেসকিউ সেন্টারে বার্তা পাঠানো হলে উদ্ধারে নামে সেনা বা আধাসেনা। ‘‘কেন্দ্রের উচিত পিএলবি কিনে রাখা। অভিযানে যাওয়ার আগে পর্বতারোহীরা পিএলবি ভাড়া নিয়ে নিজের তথ্য দিয়ে রাখবেন, যা পৌঁছে যাবে এমসিসি-র কাছে। তিনি বিপদে পড়লে পিএলবি-র বোতামে চাপ দিলেই এমসিসি সঙ্গে সঙ্গে তাঁর অবস্থান এবং পরিচয় জানতে পারবে। তাঁর পরিবারও জানতে পারবে বিপদের কথা,’’ বলছেন আর্যবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন