প্রতীকী ছবি।
আগামিকাল অর্থাৎ সোমবার থেকে পেট্রোল পাম্পে ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে দাম নেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিল পেট্রোল পাম্প ডিলারদের বিভিন্ন সংগঠন। কার্ড প্রতি লেনদেনে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক পেট্রোল পাম্পগুলির উপরে এক শতাংশ ট্রানজাকশন ফি চাপানোর প্রতিবাদেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানালেন অল ইন্ডিয়া পেট্রোল পাম্প অ্যাসোসিয়েশন (এআইপিডিএ)-র প্রেসিডেন্ট অজয় বনশাল। বেঙ্গালুরুতে সমস্ত পেট্রল মালিকদের সংগঠনগুলির বৈঠক হয় আজ। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
নোট বাতিলের পর পেট্রোল পাম্পে নগদের তুলনায় কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে সাধারণ মানুষকে ০.৭৫ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল সরকার। তার পর এক দিকে নগদে টান এবং অন্য দিকে কার্ডের ব্যবহারের এই সুযোগে প্রায় প্রতিটা পেট্রোল পাম্পেই সোয়াইপ মেশিনের ব্যবস্থা করা হয়।
তা হলে আচমকা কেন এই সিদ্ধান্ত?
আখিলা কর্ণাটক ফেডারেশন অফ পেট্রোলিয়াম ট্রেডারস এবং বেঙ্গালুরু পেট্রোলিয়াম ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বিআর রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘পেট্রোলিয়াম ডিলারদের লাভ নির্ভর করে অয়েল মার্কেটিং কোম্পানিগুলোর উপরে। যেখান থেকে ০.৩ থেকে ০.৫ শতাংশ নিশ্চিত লাভ হয়ে থাকে। ব্যাঙ্ক যদি প্রতি লেনদেনে ফি হিসাবে এক শতাংশ ধার্য করে, তা হলে আমরা কোথায় যাব?’’ বাধ্য হয়েই তাই কার্ড গ্রহণ বাতিল করতে হচ্ছে বলে তিনি জানান। আরও জানান, ব্যাঙ্ক তাদের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত শুধু মাত্র নগদেই তেলের দাম নেবেন তাঁরা।
ফলে কেন্দ্রীয় সরকার যখন ক্যাশলেস লেনদেনে জোর দেওয়ার কথা বলছে, ঠিক সেই সময়েই একটা বড় ধাক্কা আসতে চলেছে নোটের আকালের এই বাজারে। এখনও বহু মানুষের হাতেই নগদের জোগান পর্যাপ্ত নয়। পেট্রোল পাম্প নগদে ছাড়া দাম না নিলে সাধারণ মানুষের যথেষ্ট হয়রানি হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তা মাথায় রেখে সাধারণ মানুষের কাছে আগাম ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন বিআর রবীন্দ্রনাথ।
দেশে মোট পেট্রোল পাম্পের সংখ্যা ৫৬,১৯০। এর মধ্যে প্রায় ৫৪ হাজার পাম্প রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির খুচরো বিক্রেতা। এর অধিকাংশ পাম্পেই সোয়াইপ মেশিন বসিয়েছে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক। শনিবার রাতে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক এবং অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক ডিলারদের নোটিস পাঠিয়ে জানায় কার্ডে বিক্রির উপর সারচার্জ ধার্য করা হবে।
পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক সূত্রে দাবি, এই সারচার্জ বসানোর খবর তারা জানতই না। ব্যাঙ্কগুলিকে আপাতত এই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখতে বলা হচ্ছে বলেও খবর। কিন্তু স্পষ্ট কোনও নির্দেশিকা এখনও পর্যন্ত মেলেনি।
আরও পড়ুন: এটিএম, কার্ড অকেজো হয়ে যাবে তিন বছরেই! বলছে নীতি আয়োগ