National News

ব্যর্থ জলদস্যুদের হানা, ভারতীয় নৌসেনাকে ধন্যবাদ চিনা বাহিনীর

তুমুল উত্তেজনার মাঝেই হঠাৎ ‘মিত্রতা’র অবকাশ। সোমালি জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযানের জন্য ভারতীয় নৌসেনাকে ধন্যবাদ জানাল চিনা নৌসেনা। এডেন উপসাগরে জলদস্যুদের হাতে ফের আক্রান্ত হয়েছিল মালয়েশিয়া থেকে ইয়েমেনগামী একটি মালবাহী জাহাজ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৭ ১৭:৫৫
Share:

বিপদ সঙ্কেত পেয়ে সবার আগে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল ভারতীয় নৌসেনা। —প্রতীকী ছবি / সংগৃহীত।

তুমুল উত্তেজনার মাঝেই হঠাৎ ‘মিত্রতা’র অবকাশ। সোমালি জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযানের জন্য ভারতীয় নৌসেনাকে ধন্যবাদ জানাল চিনা নৌসেনা। এডেন উপসাগরে জলদস্যুদের হাতে ফের আক্রান্ত হয়েছিল মালয়েশিয়া থেকে ইয়েমেনগামী একটি মালবাহী জাহাজ। বিপদ সঙ্কেত পেয়েই সর্বাগ্রে ঘটনাস্থলে পৌঁছল ভারতীয় নৌসেনা। রাতভর রক্ষা করল জাহাজটিকে। সকালে ভারতীয় এবং চিনা নৌসেনার যৌথ অভিযানে বিপন্মুক্ত হল জলদস্যুদের হাতে আক্রান্ত জাহাজ। ভারতীয় নৌসেনার এই ভূমিকার প্রশংসা করেছে চিন।

Advertisement

সোমালি জলদস্যুদের হাতে যে জাহাজটি আক্রান্ত হয়েছিল, সেটি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র টুভালুতে রেজিস্টার্ড। এমভি ওএস ৩৫ নামে ওই জাহাজটি মালয়েশিয়ার কেলাং থেকে ইয়েমেনের পোর্ট অব এডেনে যাচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। এডেন উপসাগরে সেটি সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে আক্রান্ত হয়। জাহাজটিকে অপহরণ করার চেষ্টা করে জলদস্যুরা। ব্রিটেনের মেরিটাইম ট্রেড অর্গানাইজেশন ওই জাহাজটির গতিবিধির উপর নজর রাখছিল। জলদস্যু হানার আঁচ পেয়েই ব্রিটেনের সংস্থাটি বিপদ সঙ্কেত দিতে শুরু করে। সে সময় এডেন উপসাগরে টহলদারি চালাচ্ছিল ভারতীয় নৌসেনা। বিপদ সঙ্কেত পেয়েই নৌসেনার গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার আইএনএস মুম্বই এবং গাইডেড মিসাইল ফ্রিগেট আইএনএস তর্কশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। নৌসেনার একটি হেলিকপ্টার মালবাহী জাহাজটির উপর চক্কোর দিতে শুরু করে। রাতভর ভারতীয় নৌসেনা রক্ষা করে জাহাজটিকে, ফলে জলদস্যুরা সেটিকে অপরহণ করে নিয়ে যেতে পারেনি।

আইএনএস মুম্বই এবং আইএনএস তর্কশ নামের দু’টি যুদ্ধজাহাজ জলদস্যু বিরোধী অভিযান চালিয়েছে। —প্রতীকী ছবি / সংগৃহীত।

Advertisement

নৌসেনা সূত্রের খবর, আক্রান্ত জাহজটির ক্যাপ্টেন এবং অন্য নাবিকরা একটি স্ট্রং রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। জলদস্যুরা সেই ঘরে কিছুতেই ঢুকতে পারেনি। জলদস্যু হানার হাত থেকে বাঁচতেই মালবাহী জাহাজগুলিতে এখন এই ধরনের স্ট্রং রুম রাখা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংস্থার কাছ থেকে বিপদ সঙ্কেত পেয়ে ভারতীয় নৌসেনা দ্রুত সেখানে পৌঁছে যাওয়ার পর জলদস্যুরা আর স্ট্রং রুম ভাঙার চেষ্টা চালাতে পারেনি। নৌসেনা ওই জাহাজের ক্যাপ্টেনের সঙ্গেও যোগাযোগ স্থাপন করে ফেলেছিল। দস্যুরা যে জাহাজ অপহরণ করে নিয়ে যেতে পারবে না, সে বিষয়ে তাদের আশ্বস্ত করেছিল ভারতীয় নৌসেনা। সকাল হতেই জাহজটির উপরের ডেকে হেলিকপ্টার থেকেই স্যানিটাইজেশন অভিযান চালানো হয়। ততক্ষণে চিনা, পাকিস্তানি এবং ইতালীয় নৌসেনাও পৌঁছে গিয়েছিল ঘটনাস্থলে। আপার ডেকে ভারতীয় নৌসেনা স্যানিটাইজেশন চালানোর পর। চিনা নৌসেনার একটি বোর্ডিং টিম ওই মালবাহী জাহাজটিতে উঠে পড়ে। গোটা জাহাজে তারা স্যানিটাইজেশন অভিযান চালায়। নিরাপদে স্ট্রং রুম থেকে বার করে আনা হয় জাহাজটির ক্যাপ্টেন ও অন্যান্য কর্মীদের। চিনা বাহিনীর সেই অভিযানকেও ভারতীয় নৌসেনাই এয়ার কভার দেয়। অভিযান শেষে ভারতীয় বাহিনীকে ধন্যবাদ জানায় চিন। তবে কোনও জলদস্যু ধরা পড়েনি। কারণ ভারতীয় ও চিনা নৌসেনাকে হাজির হতে দেখে তারা মালবাহী জাহাজটি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল।

আরও পড়ুন: উত্তর কোরিয়ার দিকে রওনা মার্কিন নৌসেনার স্ট্রাইক গ্রুপ, উত্তাপ তুঙ্গে

২০১০-২০১২ সালে এডেন উপসাগর সোমালি জলদস্যুদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশের নৌসেনা সক্রিয় হওয়ায় জলদস্যুরা পিছু হঠে। গত পাঁচ বছর জলদস্যু হানার ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু সম্প্রতি আবার ওই অঞ্চলে জলদস্যুদের উপদ্রব বেড়েছে। সপ্তাহখানেক আগেই একটি ভারতীয় জাহাজকে অপহরণ করেছে সোমালি জলদস্যুরা। তার পর ওই অঞ্চলে ভারতীয় নৌসেনার সক্রিয়তা ফের বেড়েছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ভিত্তিতে এ বারের দস্যু-হানা ব্যর্থ করে দিল ভারত-চিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন