প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার, ভুবনেশ্বরে।
সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মুসলিমদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিন তালাকের জন্য মুসলিম মহিলাদের কতটা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, বিজেপি’র মহিলা শাখার কর্মীদের তা জেলায় জেলায় গিয়ে দেখেও আসতে বললেন তিনি। পাশাপাশি, কিছুটা আত্মসমালোচনার ঢঙে কথায়-বার্তায় দলীয় কর্মী, নেতাদের সংযত হওয়ার অনুরোধ জানালেন প্রধানমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা পূর্ব ভারত জয়ের নকশা চূড়ান্ত করতে বিজেপি’র জাতীয় কর্মসমিতির দু’দিনের বৈঠক রবিবার শেষ হয় ভুবনেশ্বরে। সেই বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ভাষণে বলেন, ‘‘আমাদের সমাজব্যবস্থায় যদি কোনও গলদ, ভুলভ্রান্তি থেকে থাকে বা থাকে কোনও কুপ্রথা, তা হলে সেই ভুলগুলি কী ভাবে কাটিয়ে ওঠা যায় বা কুপ্রথাগুলি থেকে বেরিয়ে আসা যায়, সে ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করতে হবে। ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য কী ভাবে লড়াই করতে হয়, সেটা তাঁদের শেখাতে হবে। আমাদের এমন একটা দেশ বানাতে হবে, যেখানে কোনও সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য যেন না থাকে। কোনও রকমের বৈষম্যই থাকা চলবে না।’’ তিন তালাকের জন্য মুসলিম মহিলাদের যে অত্যন্ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তাঁর ভাষণে তারও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘জেলায় জেলায় গিয়ে ওঁদের (মুসলিম মহিলাদের) কথা শুনুন। ওঁদের কথা জানতে চান। কিন্তু কখনওই ওঁদের কোনও ভাবে চাপাচাপি করবেন না। ধর্মীয় প্রথার বিরোধিতা করতে উৎসাহ জোগবেন না।’’
পরে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের নির্যাস তুলে ধরতে গিয়ে বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী বলছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে জন ধন (দেশের অর্থনীতি), জল ধন (জলসম্পদ) ও বন্ধন (সাম্প্রদায়িক ঐক্য ও সংহতি)-এর ওপরেই গুরুত্ব আরোপ করেছেন। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে দলের উল্লেখযোগ্য সাফল্যের জন্য তিনি ভুয়সী প্রশংসা করেছেন সবাপতি অমিত শাহের। তাঁকেই ওই জয়ের কাণ্ডারী বলেছেন।’’
তাঁর ভাষণে এ দিন প্রধানমন্ত্রী মোদী বিজেপি’র নেতা, কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘নিজেদের কথাবার্তা, আচার-আচরণে সংযত হোন। হাতে মাইক্রোফোন থাকলেই মনে করবেন না যা কিছু বলে দেওয়া যায়। দলের সাফল্যের পর আত্মতুষ্টিতে ভুগবেন না। বরং কোথায় দুর্বলতা তার পরেও থেকে যাচ্ছে, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন।’’
দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক শেষ হওয়ার পরেই এ দিন দিল্লি রওনা হয়ে যান প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- ধর্মীয় অসহিষ্ণুতায় চারে ভারত! বলছে আন্তর্জাতিক সমীক্ষা