ইটানগরে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
ভোটের আগে জাতীয়তাবাদী আবেগ জাগাতেই নরেন্দ্র মোদী অরুণাচলের চিন সীমান্তে যাচ্ছেন বলে ধারণা ছিল রাজনীতিক ও কূটনীতিকদের একাংশের। আজ মোদীর সফরের পরে চিনের কড়া প্রতিক্রিয়া সেই ধারণাকেই সত্য বলে প্রমাণ করল বলে দাবি তাঁদের।
আজ অরুণাচলে সেলা গিরিপথের একটি সুড়ঙ্গ-সহ কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘অরুণাচলের সড়ক, রেল, বিমান যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের উন্নতি আমাদের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আগের সরকার এই বিষয়টিকে অবহেলা করেছিল।’’ মোদীর সফরের পরেই চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, ‘‘এ নিয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। চিন কখনওই তথাকথিত অরুণাচল প্রদেশের অস্তিত্ব মানেনি। চিন-ভারত সীমান্তের পূর্বে ভারতীয় নেতার গতিবিধিও সমর্থন করি না। ভারতের উচিত নয় এমন কোনও পদক্ষেপ করা যাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি হয়। এতে সীমান্ত সমস্যার মীমাংসা করাও কঠিন হয়ে উঠতে পারে।’’ জবাবে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, ‘‘ভারতের নেতারা অন্য রাজ্যের মতোই মাঝে মাঝে অরুণাচল সফরে যান। ওই রাজ্য ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই বিষয়ে আমাদের অবস্থান বারবার বেজিংকে জানানো হয়েছে।’’
বেজিংয়ের দাবি, অরুণাচল দক্ষিণ তিব্বতের অংশ। অরুণাচল নিয়ে বিবাদ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছাকাছি এলাকা নিয়ে চিন-ভারতের মতবিরোধেরই অংশ। ভারতীয় নেতা ও তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামার অরুণাচল সফর নিয়ে বারবার আপত্তি জানিয়েছে চিন।
কূটনীতিক ও রাজনীতিকদের একাংশের মতে, ডোকলাম পর্বের পরে চিন সম্পর্কে সতর্ক হয়েই চলেছে মোদী সরকার। চিনের উহানে প্রধানমন্ত্রী ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের শীর্ষ বৈঠকের পরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কিছুটা উন্নতিও হয়। কিন্তু এখন ঘরোয়া রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন মোদী। ফলে তাঁর সফরে চিনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা মাথায় রেখেও অরুণাচলে গিয়েছেন তিনি। সেলা গিরিপথে আজ যে সুড়ঙ্গের শিলান্যাস হয়েছে তা দিয়ে সহজেই চিন সীমান্তের তাওয়াং এলাকায় পৌঁছনো যায়। জরুরি অবস্থায় ভারতীয় সেনা দ্রুত যাতায়াতের জন্য এই পথ ব্যবহার করবে। বিরোধী রাজনীতিকদের মতে, এখন এই পদক্ষেপ করে জাতীয়তাবাদী আবেগ উস্কে দিতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী।