কালো টাকার নথিতে চাপে প্রধানমন্ত্রী

অর্থ মন্ত্রক সূত্রের যুক্তি, বিদেশে টাকা গচ্ছিত রাখা মানেই তা কালো টাকা বা বেআইনি নয়। যদি না এ দেশের আয়কর দফতরের থেকে তা গোপন করা হয়ে থাকে। এই যুক্তিই দিয়ে জয়ন্ত সিন্হা বলেন, ‘‘আমি ব্যক্তিগত স্তরে কিছু করিনি। যে সংস্থার হয়ে কাজ করতাম, তার হয়েই যা করার করেছি।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৬
Share:

বিদেশে গচ্ছিত কালো টাকা নিয়ে ফের প্রশ্নের মুখে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

সাংবাদিকদের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠনের তদন্তে জানা গিয়েছে, কর ফাঁকির স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত দেশগুলিতে টাকা পাচার, লগ্নি বা লেনদেন সংক্রান্ত নথিতে ৭১৪ জন ভারতীয়ের নাম রয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত তালিকায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়ন্ত সিন্হা, বিজেপি সাংসদ আর কে সিন্হা, কংগ্রেস নেতা অশোক গহলৌত, অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন, ব্রিটেনে আশ্রয় নেওয়া শিল্পপতি বিজয় মাল্যের পাশাপাশি আরও একঝাঁক নেতা, শিল্পপতি, বলিউডের অভিনেতা, চিকিৎসকের নাম রয়েছে। দেশের বহু কর্পোরেট সংস্থার নামও রয়েছে ‘প্যারাডাইস পেপার্স’ নামের এই নথিতে।

কালো টাকার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও নরেন্দ্র মোদীর সাড়ে তিন বছরের শাসনে এইচএসবিসি-নথি কেলেঙ্কারি এবং ‘পানামা পেপার্স’ ফাঁস হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এই দুই নথিতেই বহু ভারতীয়ের বিদেশে কালো টাকা গচ্ছিত রাখার খবর মিললেও মোদী সরকার সে ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপই করেনি। অথচ পানামা পেপার্স-তদন্তের জেরেই পাকিস্তানের খোদ প্রধানমন্ত্রীকে পর্যন্ত পদত্যাগ করতে হয়েছে। এর মধ্যেই মোদী সরকারের চাপ বাড়িয়ে আজ বিমান প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিন্হার পদত্যাগও দাবি করেছে কংগ্রেস।

Advertisement

আরও পড়ুন:কাশ্মীরে দীনেশ্বর, কথায় না যেতে পাক উস্কানি

অরুণ জেটলির অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, নতুন তথ্যের ভিত্তিতে অবিলম্বে যথোচিত পদক্ষেপ করা হবে। কেন্দ্রীয় প্রত্যক্ষ কর পর্ষদের চেয়ারম্যানের অধীনে তৈরি ‘মাল্টি এজেন্সি গ্রুপ’ এই তদন্তে নজরদারি চালাবে। যাতে আয়কর দফতর, ইডি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, আর্থিক গোয়েন্দা শাখার অফিসাররাও থাকবেন। সেবি-ও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করবে। তা ছাড়া এ পর্যন্ত অন্যান্য তদন্তের ক্ষেত্রে যা যা তথ্য মিলেছে, সব ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও সরকারের দাবি।

অর্থ মন্ত্রক সূত্রের যুক্তি, বিদেশে টাকা গচ্ছিত রাখা মানেই তা কালো টাকা বা বেআইনি নয়। যদি না এ দেশের আয়কর দফতরের থেকে তা গোপন করা হয়ে থাকে। এই যুক্তিই দিয়ে জয়ন্ত সিন্হা বলেন, ‘‘আমি ব্যক্তিগত স্তরে কিছু করিনি। যে সংস্থার হয়ে কাজ করতাম, তার হয়েই যা করার করেছি। সব তথ্যই সরকারি সংস্থাকে জানানো রয়েছে।’’

কী এই ‘প্যারাডাইস পেপার্স’? প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ নথি মূলত বারমুডার আইন সংস্থা অ্যাপলবাই ও সিঙ্গাপুরের এশিয়াসিটি সংস্থার মধ্যে তথ্যের আদানপ্রদান। এই সংস্থা দু’টি মূলত কর ফাঁকি দিতে বিভিন্ন সংস্থাকে কর ফাঁকির স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত দেশে লগ্নিতে সাহায্য করে। বহু দেশের রাঘববোয়ালেরই নাম রয়েছে তাতে। কোন দেশ থেকে কত জন রয়েছেন, সেই হিসেবে ভারতের স্থান প্রথম সারিতেই। ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৯ নম্বরে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন