গাঁধীকে স্বচ্ছতায় জুড়ে মোদীর টান চম্পারণে!

রেডিওয় শেষ বার ‘মনের কথা’ শোনাতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর পথেই তিনি নতুন ভারত গড়তে চান। এ বার চম্পারণ সত্যাগ্রহের শতবর্ষ নিয়ে মোদী সরকার এমন মাতামাতি শুরু করেছে যে কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, গাঁধীর পথে হাঁটতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী কার্যত গাঁধীকেই ‘হাইজ্যাক’ করে নিচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩৬
Share:

রেডিওয় শেষ বার ‘মনের কথা’ শোনাতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর পথেই তিনি নতুন ভারত গড়তে চান।

Advertisement

এ বার চম্পারণ সত্যাগ্রহের শতবর্ষ নিয়ে মোদী সরকার এমন মাতামাতি শুরু করেছে যে কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, গাঁধীর পথে হাঁটতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী কার্যত গাঁধীকেই ‘হাইজ্যাক’ করে নিচ্ছেন।

চম্পারণেই প্রথম নীলচাষিদের নিয়ে সত্যাগ্রহ শুরু করেছিলেন গাঁধী। মোদী গাঁধীর চশমাকে স্বচ্ছ ভারত অভিযানের ‘লোগো’ করেছেন আগেই। এ বার গাঁধীর প্রথম সত্যাগ্রহের শতবর্ষে তিনি নিজের ‘স্বচ্ছাগ্রহ’-কে তুলে ধরতে চাইছেন। গত সপ্তাহেই দিল্লির জাতীয় সংগ্রহশালায় ‘স্বচ্ছাগ্রহ’ নামে এক প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে চম্পারণ অভিযানের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। দেশ জুড়েও এই উপলক্ষে একগুচ্ছ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কেন্দ্রের তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রক প্রচার করছে, গাঁধীর সত্যাগ্রহের ভিতে ও মোদীর স্বচ্ছাগ্রহের মাধ্যমে তৈরি হবে স্বচ্ছ ভারত।

Advertisement

কংগ্রেসের নেতারা আঁচও করতে পারেননি যে চম্পারণ সত্যাগ্রহের শতবর্ষকে এমন একটা ‘মহা-ইভেন্ট’-এ পরিণত করে ফেলবেন মোদী। মুখে তাঁরা এর সমালোচনাও করতে পারছেন না। ঘরোয়া আলোচনায় বলছেন, গাঁধীর ভাবাদর্শের সঙ্গে মোদী, বিজেপি বা সঙ্ঘ পরিবারের মতাদর্শের কোনও মিল নেই। আরএসএস এখন প্রচার করছে, গাঁধীও গোরক্ষার কথা বলেছিলেন। কিন্তু বিজেপি-আরএসএস তো ‘গোরক্ষা’ করতে গিয়ে মানুষ পিটিয়ে মেরে ফেলছে। গাঁধী ঠিক এই কারণেই ‘গোরক্ষা’-র বদলে ‘গোসেবা’-র কথা বলেছিলেন।

আরও পড়ুন: বঙ্গ জয়েই বিজেপি-র স্বর্ণযুগ আসবে: অমিত শাহ

চম্পারণ সত্যাগ্রহ নিয়ে মাতামাতি করে আসলে মোদী সরকার নিজেকে কৃষক দরদি বলেও প্রমাণ করতে চাইছে বলে কংগ্রেস মনে করছে। কারণ, ১৯১৭-র ১৫ এপ্রিল নীলচাষিদের অনুরোধেই ট্রেনে করে চম্পারণ পৌঁছন গাঁধী। ব্রিটিশ প্রশাসন তাঁকে আটক করে। কিন্তু তাতে গাঁধীরই লাভ হবে বুঝে শেষমেশ মামলা তুলে নিতে বাধ্য হয় ব্রিটিশ-রাজ। গাঁধী চাষিদের অভিযোগ জমা করতে থাকেন। চম্পারণেই প্রথম জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে কৃষকদের সমস্যাকে জুড়ে নেন গাঁধী। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগে ঠিক এই ভাবেই চাষিদের থেকে ঋণ মকুবের দাবি সংগ্রহ করেছিলেন দলের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। কে আসলে গাঁধীর পথে রয়েছেন, এখান থেকেই তা স্পষ্ট।’’

কিন্তু মানুষ যে বিজেপিকে ভোট দিচ্ছে?

কংগ্রেসের ওই নেতার যুক্তি, ‘‘কে আসল কৃষক দরদি, তা বুঝতে মানুষের সময় লাগবে। যোগী আদিত্যনাথের সরকার যতই কৃষকদের ঋণ মকুব করুক, বাস্তব হলো, উত্তরপ্রদেশের কৃষকদের ঋণের একাংশই মকুব করা হয়েছে। তা-ও সকলের নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন