National News

এ বার মোদীর তোপে মমতা, ‘গণতন্ত্র আর জনগণে আস্থা হারিয়েছেন উনি’

মমতার নাম না করেও মোদী বলেন, ‘‘যাঁরা নিজেদের প্রতি আস্থা হারিয়েছেন, জনসমর্থন হারানোর ভয় করছেন এবং যাঁদের গণতন্ত্র ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা নেই, তাঁরাই এই ধরনের মন্তব্য করতে পারেন। গৃহযুদ্ধ (সিভিল ওয়ার), রক্তস্নান (ব্লাডবাথ)-এর মতো শব্দ তাঁরাই ব্যবহার করতে পারেন, যাঁরা ভারতের নাড়ির স্পন্দন থেকে বিচ্ছিন্ন।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৮ ১৩:২৮
Share:

অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রথমবার মুখ খুলেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন। প্রশ্ন তুললেন, ‘গৃহযুদ্ধ’, ‘রক্তস্নান’-এর মতো শব্দ ব্যবহার করা নিয়ে। একই সঙ্গে নাগরিকপঞ্জি নিয়ে অসমবাসীকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস, এক জন ভারতীয় নাগরিকেরও কোনও সমস্যা হবে না।

Advertisement

গত ৩০ জুলাই প্রকাশিত হয়েছে অসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশিত হয়। তাতে বাদ পড়েছেন প্রায় ৪০ লক্ষ অসমবাসী। আর তার পর থেকে এই এনআরসির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব। এনডিএ তথা মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগেছেন অসমের প্রতিবেশী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি এই তালিকার ফলে ‘গৃহযুদ্ধ’ বা ‘রক্তস্নান’-এর আশঙ্কাও প্রকাশ করেছিলেন মমতা।

প্রধানমন্ত্রী এতদিন বিষয়টিতে নীরব ছিলেন। অবশেষে শনিবার সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আক্রমণের নিশানা করলেন সবচেয়ে সরব সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই। মমতার নাম না করেও মোদী বলেন, ‘‘যাঁরা নিজেদের প্রতি আস্থা হারিয়েছেন, জনসমর্থন হারানোর ভয় করছেন এবং যাঁদের গণতন্ত্র ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা নেই, তাঁরাই এই ধরনের মন্তব্য করতে পারেন। গৃহযুদ্ধ (সিভিল ওয়ার), রক্তস্নান (ব্লাডবাথ)-এর মতো শব্দ তাঁরাই ব্যবহার করতে পারেন, যাঁরা ভারতের নাড়ির স্পন্দন থেকে বিচ্ছিন্ন।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: বিহারে এনআরসি নথি যাচাই শুরু

প্রায় একই দাঁড়িপাল্লায় ফেলে কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, এনআরসি রাজনীতির জন্য নয়, সাধারণ মানুষের জন্য। কিন্তু সেটা নিয়ে কেউ রাজনীতি করলে তা দুর্ভাগ্যজনক। কংগ্রেস এবং তৃণমূল সেটাই করছে। কয়েক দশক ধরে কংগ্রেস বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের প্রশ্নটি জিইয়ে রেখেছে।

আরও পড়ুন: রাফাল অস্ত্রেই প্রচারে রাহুল

একইসঙ্গে এ দিন নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়া প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করতেও কসুর করেননি। তিনি বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, এনআরসি-র জন্য কোনও ভারতীয় নাগরিককে দেশ ছাড়তে হবে না। এখনও বেশ কিছু প্রক্রিয়া বাকি। যাঁরা বাদ পড়েছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব প্রমাণের সব রকম সুযোগ দেওয়া হবে।’’ পুশব্যাক বা অনুপ্রবেশকারীদের দেশে ফেরানোর প্রশ্নে মোদীর জবাব, এমন ভাবার কারণ নেই যে, নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে না পারলেই পুশব্যাক করা হবে। বাদ পড়াদের মধ্যে যাঁরা যে দেশ থেকে ভারতে এসেছেন, সেই দেশ নাগরিক হিসাবে স্বীকার করলে তবেই তাঁদের জন্মভূমিতে ফেরত পাঠানো হবে।

নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশের পর থেকেই বাদ পড়া ৪০ লক্ষ অসমবাসী উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে বলে আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। তারই মধ্যে চলছে নাগরিকপঞ্জি সংশোধনের কাজ। এর পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর এই আশ্বাস কিছুটা হলেও তাঁদের আস্থা বাড়াবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন