হাসি-ঠাট্টাই হল, সহায়ক মূল্য নিয়ে নীরব রইলেন মোদী

খরিফ ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপি নিয়ে টুঁ শব্দটি করলেন না মোদী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৮ ০৩:৩৫
Share:

হাত জোড় করে ভাঙা বাংলায় বললেন, ‘‘নমস্কার বাবু। আপনি কেমন আছেন?’’

Advertisement

‘‘ভাল আছি,’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিকাশ গিরি জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। জানালেন, মাছ চাষ করেন তিনি। বিকাশের সামনে মাছ দেখে মোদীর রসিকতা, ‘‘এ সব দেখে তো বাঙালির মুখে জল এসে যাবে!’’ সুন্দরবনের আর এক চাষির কুশল জানতে চেয়েও মোদী উত্তর পেলেন, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি এক ফসলি জমিতে বছরে তিন-চারটে ফসল তুলছেন।

কুশল বিনিময় হল। হাসিঠাট্টা হল। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের চাষিদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে সরাসরি কথা বলে মোদী সরকারের সাফল্যের প্রচারও হল। কিন্তু খরিফ ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপি নিয়ে টুঁ শব্দটি করলেন না মোদী।

Advertisement

দেশ জুড়ে কৃষকদের ক্ষোভের মুখে বাজেটে অরুণ জেটলি ঘোষণা করেছিলেন, স্বামীনাথন কমিটির সুপারিশ মেনে চাষের খরচের দেড় গুণ ফসলের দাম দেওয়া হবে। কিন্তু কৃষক সভা থেকে শুরু করে কৃষক সংগঠনগুলি প্রশ্ন তুলেছে, কী ভাবে হিসেব করা হবে চাষের খরচ? তার মধ্যে জমির ভাড়া-সহ যাবতীয় খরচ ধরতে হবে। আজও মোদী ফের খরচের দেড় গুণ ফসলের দাম দেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু কবে তা ঘোষণা হবে, তা জানাননি।

মোদী জমানার গত চার বছরে জুন মাসের প্রথমে বা মাঝামাঝি সময়ে খরিফ শস্যের এমএসপি ঘোষণা হয়েছে। এ বার বৃষ্টি এসে গিয়েছে। বীজ বোনা শুরু হবে। অথচ ফসলের দাম ঘোষণা হয়নি। কৃষক সংগঠনগুলি বলছে, এমএসপি ঘোষণা করেই বা কী লাভ? গত বছর চাষিরা বাজারে এমএসপি-র ৪০ শতাংশ কম দাম পেয়েছেন। ডালের দাম পাচ্ছেন না। মোদী সরকার এ দিকে ডাল আমদানি করছে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাষিরা অবশ্য মোদীকে জানিয়েছেন, ভালই আয় হচ্ছে। কেউ বছরে ৮ লক্ষ টাকা আয় করছেন মাছ চাষ করে। অনেককে কাজও দিচ্ছেন। সুন্দরবনে নিচু জমিতে চাষ করেও কেউ কেউ এখন ৩ লক্ষ টাকা আয় করেছেন। আগে আয় হত ৩০-৩৫ হাজার টাকা। মোদী জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের প্রগতিশীল চাষিদের সঙ্গে কথা বলে তাঁর খুব ভাল লেগেছে। প্রশ্ন উঠেছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য এই চাষিদের বাছাই করে কে? সরকারি সূত্রের খবর, ডিজিটাল পরিষেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এই চাষিদের সঙ্গে কথা বলেন। ওই সব কেন্দ্রের লোকেদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার পরে প্রধানমন্ত্রীর দফতরই বাছাই করে। বকলমে স্থানীয় স্তরে পুরো বিষয়টি সামাল দেয় বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন