ফাইল চিত্র।
কেরলে সিপিএমের বিরুদ্ধে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নেমেছিল বিজেপি। সেই ‘জন সুরক্ষা যাত্রা’ ছেড়ে হঠাৎই দিল্লি ফিরে এলেন অমিত শাহ। দলের নেতা-কর্মীদের কার্যত অনাথ করে দিয়ে!
অরুণ জেটলি সবে বাংলাদেশ থেকে দিল্লি ফিরেছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর ডাক পড়ল প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে।
আজ দুপুরে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, অরুণ জেটলির দীর্ঘ বৈঠক এই জল্পনা উসকে দিয়েছে যে, অর্থনীতির আঁধার কাটাতে দীপাবলির আগেই নতুন দাওয়াই ঘোষণা করতে পারে মোদী সরকার। যার ইঙ্গিত দিয়ে আজ শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রী সুরেশ প্রভু জানিয়েছেন, শিল্পকে চাঙ্গা করতে আর্থিক দাওয়াইয়ের রূপরেখা তৈরি করছে সরকার। তাঁর কথায়, ‘‘আমি অর্থ মন্ত্রক, নীতি আয়োগ, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছি, যাতে শিল্পমহল এখন যা উৎপাদন করছে, তার থেকে অনেক বেশি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা যায়।’’ প্রভুর যুক্তি, শিল্পোৎপাদন বাড়লেই আর্থিক বৃদ্ধি বাড়বে।
তবে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বাড়তি খরচের দাওয়াই কাজে দেবে না উল্টো ফল হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ উপদেষ্টা সংস্থা জে পি মর্গানের অর্থনীতিবিদ সাজিদ চেনয়ের মত, নোট বাতিলের ফলে ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প, অসংগঠিত ক্ষেত্র ধাক্কা খেয়েছে বলে জোগানে সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেখানে টাকা ঢেলে চাহিদা বাড়ানোর চেষ্টা করে লাভ হবে না। তাতে রাজকোষ ঘাটতি ও মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে নতুন সমস্যা দেখা দেবে।
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে আজ প্রথমে অমিত শাহ, জেটলির সঙ্গে বৈঠক করেন মোদী। জেটলি বেরিয়ে যাওয়ার পরেও মোদী-অমিত শাহ দীর্ঘ বৈঠক চলে। সেখানে অর্থনীতির পাশাপাশি গুজরাতের ভোটের রণকৌশল, সেখানকার পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয় বলে বিজেপির নেতাদের ধারণা। জিএসটি নিয়ে ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ গুজরাত ভোটে চিন্তায় রেখেছে বিজেপি-কে। আবার জেটলিও সুরেশ প্রভু, পীযূষ গয়ালদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু সন্ধ্যায় দিল্লিতে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের বৈঠকে বক্তৃতা দেওয়ার কথা থাকলেও যাননি জেটলি।
আরও পড়ুন: পাহাড়ে আক্রান্ত দিলীপ, মার খেলেন সঙ্গীরাও
গত কালই অর্থনীতির মন্দা নিয়ে যাবতীয় আক্রমণের জবাব দিয়েছেন মোদী। আজ শিল্পপতি সুনীল মিত্তল বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীর কাজই হল আশার আবহ তৈরি করা। তিনি ঠিক কাজই করছেন।’’ তবে এই অভিযোগও উঠছে যে, মোদী শুধু সেই তথ্যই দেখিয়েছেন, যাতে অর্থনীতির ছবিটা উজ্জ্বল দেখায়। যোজনা কমিশনের প্রাক্তন সদস্য প্রণব সেন যুক্তি দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী ইউপিএ-সরকারের শেষ দু’বছরের সঙ্গে তাঁর সরকারের প্রথম দু’বছরের তুলনা করেছেন। কিন্তু বাস্তব হল, অর্থনীতিতে অধিকাংশ সমস্যাই দেখা গিয়েছে গত ১০ মাসে।