India-Russia Relationship

‘দ্রুত শেষ হোক ইউক্রেন যুদ্ধ’! পুতিনের মুখোমুখি বসে মোদী স্পষ্ট করলেন দিল্লির অবস্থান, কী বললেন রুশ প্রেসিডেন্ট

পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে ভারত-রাশিয়া মজবুত সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন মোদী। জানান, ‘কঠিন পরিস্থিতিতেও’ দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হচ্ছে। একই সঙ্গে মোদী বলেন, “ভারত-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিশ্বশান্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:২১
Share:

(বাঁ দিকে) ভ্লাদিমির পুতিন এবং নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। চিনের তিয়ানজিন শহরে এসসিও সম্মেলনে। ছবি: রয়টার্স।

ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ভারতের অবস্থান আরও এক বার স্পষ্ট করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানালেন, ইউক্রেন সমস্যা মিটিয়ে শান্তিপ্রতিষ্ঠার জন্য সব ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানায় নয়াদিল্লি। একই সঙ্গে মোদী বলেন, “আমি আশাবাদী যে, দ্রুত যুদ্ধ শেষ করতে রাশিয়া এবং ইউক্রেন পদক্ষেপ করবে।”

Advertisement

চিনের তিয়ানজিন শহরে এসসিও সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে পার্শ্ববৈঠক হয় মোদী এবং পুতিনের। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ইঙ্গিত মেলে বৈঠকের আগেই। প্রোটোকলের বাইরে বেরিয়ে একই গাড়িতে বৈঠকস্থলের উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। সেই ঘনিষ্ঠতার রেশ বজায় রেখেই বৈঠকে ভারত-রাশিয়া মজবুত সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন মোদী। জানান, ‘কঠিন পরিস্থিতিতেও’ দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হচ্ছে। একই সঙ্গে মোদী বলেন, “ভারত-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিশ্বশান্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”

দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মোদীকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেন পুতিন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, ভারত এবং রাশিয়ার বিশেষ কৌশলগত অংশীদারির ১৫ বছর পূর্ণ হল। সোমবার বৈঠক নয়াদিল্লি-মস্কো সম্পর্কে আরও গতি আনল বলেও জানান পুতিন। আগেই ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়েছিল, ভারতের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ডিসেম্বরে নয়াদিল্লি যাবেন পুতিন। সোমবার সেই খবরে কার্যত সিলমোহর দেন মোদী। পুতিনের উদ্দেশে তিনি বলেন, “১৪০ কোটি ভারতীয় আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।” ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত কথাবার্তা হয় বলেও জানিয়েছেন মোদী। প্রায় আধ ঘণ্টা বৈঠক হয় মোদী এবং পুতিনের মধ্যে। বৈঠকের পর বিমানে ভারতের উদ্দেশে রওনা দেন মোদী।

Advertisement

সাবেক সোভিয়েত জমানা থেকেই নয়াদিল্লি এবং রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। সোভিয়েট ইউনিয়নের ভাঙনের পরে পরিবর্তিত বিশ্বব্যবস্থাতেও এই বন্ধুত্ব টাল খায়নি। বরং সামরিক, অর্থনৈতিক নানা ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের পর আমেরিকা এবং পশ্চিমিদুনিয়া রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করলেও, ভারত মস্কো থেকে অশোধিত তেল আমদানি অব্যাহত রেখেছে। সেই কারণে ভারতের অধিকাংশ পণ্যে আরও ২৫ শতাংশ (মোট ৫০ শতাংশ) শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। তার পরে অবশ্য ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি তেল আমদানি বন্ধ রেখেছে, এমন খবর নেই।

আমেরিকার সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারি থাকলেও ভারত রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য কখনওই রাশিয়াকে দায়ী করেনি। বরং এ ক্ষেত্রে বরাবরই নয়াদিল্লি মধ্যপন্থা নিয়ে চলেছে। আগে অবশ্য পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে মোদী বলেছিলেন, “এটা যুদ্ধের সময় নয়।” তাই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন তিনি। সোমবারের বৈঠকেও মোদী বোঝালেন, ভারত কূটনীতি এবং আলোচনার মাধ্যমেই ইউক্রেন সঙ্কটের সমাধান চায়। একই সঙ্গে আমেরিকাকেও তিনি বার্তা দিলেন যে, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও ‘পুরনো বন্ধু’ রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে ভারত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement