প্রতীকী ছবি।
কাশ্মীরে অমরনাথ যাত্রীদের উপর জঙ্গি হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতেরা তিন জনই স্থানীয় বাসিন্দা।
গত ১০ জুলাই জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামের কাছে অমরনাথ যাত্রী বোঝাই একটি বাসে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। আট জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয় ওই হামলায়। আহত হয়েছিলেন তিরিশ জন পুণ্যার্থী। বাস চালকের তৎপরতায় সে দিন প্রাণ বেঁচেছিল পঞ্চাশ জনেরও বেশি যাত্রীর। হামলার পরপরই গোটা ঘটনার তদন্ত করতে একটি সিট গঠন করে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। যার নেতৃত্বে ছিলেন দক্ষিণ কাশ্মীরের ডিআইজি শ্যামপ্রকাশ পানি।
ঘটনার পরে স্থানীয় কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছিল পুলিশ। পরে তাদের ছেড়েও দেওয়া হয়। কিন্তু গ্রেফতার হয়নি কেউ। আজ জম্মু-কাশ্মীরের আইজিপি মুনির খান সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে জানিয়েছেন, এই তিন জনকে ধরার সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গিদের গোটা পরিকল্পনাটাও তাঁদের কাছে পরিষ্কার হয়েছে। ধৃতদের আজ আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
ধৃত তিন জনের নাম বিলাল আহমেদ রেশি, এজাজ ওয়াগে এবং জাহুর আহমেদ। ধৃত বিলালের দাদা আদিল লস্কর জঙ্গি ছিল। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তার মৃত্যু হয়। তার বদলা নিতেই সম্ভবত ওই জঙ্গিদের সাহায্য করেছিল বিলাল। হামলার ঘটনায় এই তিন জন সরাসরি জড়িত ছিল না বলেই জানিয়েছে পুলিশ। কিন্তু চার জঙ্গিকে হামলা পরিচালনা করতে পুরোপুরি সহযোগিতা করেছিল এরা। মুনির খান আরও জানিয়েছেন, আবু ইসমাইল নামে লস্কর-ই-তইবার এক শীর্ষ স্থানীয় নেতা এই হামলার মূল চক্রী। সে পাকিস্তানের নাগরিক। তাকে সে দিন সাহায্য করেছিল পাকিস্তানের আরও দুই জঙ্গি এবং কাশ্মীরে লস্করের সদস্য ইয়াওয়ার। বাকি দুই পাকিস্তানি জঙ্গির পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে বলে জানান খান।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে ৯ তারিখ হামলার পরিকল্পনা করেছিল জঙ্গিরা। কিন্তু সে দিন বাস যাত্রী বা আধাসামরিক বাহিনীর গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল। তাই পরের দিনটিকে হামলার জন্য বাছা হয়। তদন্তে জানা গিয়েছে, নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের সময়ে পুণ্যার্থী বোঝাই বাসকে ‘শওকত’ আর সিআরপিএফের ভ্যানকে ‘বিলাল’ বলে চিহ্নিত করছিল জঙ্গিরা।
পুলিশের বক্তব্য, ধৃত তিন কাশ্মীরি যুবকই জঙ্গিদের হামলার আসল জায়গাটা স্থির করে দিয়েছিল। খানবালের কাছে বোতেঙ্গো এলাকা। দক্ষিণ কাশ্মীরের খুদওয়ানি আর শ্রীগুফওয়ারা এলাকায় চার জঙ্গিকে থাকার ব্যবস্থাও করে দিয়েছিল তারা। মুনির খান জানান, লস্কর জঙ্গি বশির লস্করির মৃত্যুর বদলা নিতে অমরনাথ যাত্রীদের উপর হামলার ছক কষেছিল আবু ইসমাইল ও তার সঙ্গীরা।