দাউদ চক্রে আবার নাম জড়াল নেতাদের

গত কাল রাতে মুম্বইয়ের নাগপাড়া এলাকা থেকে একাধিক তোলাবাজির ঘটনায় যুক্ত থাকার অপরাধে গ্রেফতার করা হয় দাউদের ভাই ইকবাল কাসকরকে। এক সময়ে মুম্বইয়ে দাউদের হয়ে তোলাবাজির ব্যবসা সামলানো ইকবাল খুন ও অবৈধ নির্মাণে অভিযুক্ত হওয়ার পরে ফেরার হয়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:১৭
Share:

ফাইল চিত্র।

তোলাবাজির ঘটনায় দাউদ ইব্রাহিম ও তার ভাইয়ের সঙ্গে ফের জড়িয়ে পড়ল দেশের রাজনৈতিক নেতাদের নাম। যা নিয়ে এক বার নতুন করে উত্তাল হল মহারাষ্ট্র। আরব সাগরের সেই ঢেউ এসে পৌঁছেছে দিল্লিতেও। অবিলম্বে অভিযুক্ত নেতাদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে সরকারের শরিক দল শিবসেনা। উদ্বিগ্ন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এ বিষয়ে সার্বিক রিপোর্ট চেয়েছে মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে।

Advertisement

গত কাল রাতে মুম্বইয়ের নাগপাড়া এলাকা থেকে একাধিক তোলাবাজির ঘটনায় যুক্ত থাকার অপরাধে গ্রেফতার করা হয় দাউদের ভাই ইকবাল কাসকরকে। এক সময়ে মুম্বইয়ে দাউদের হয়ে তোলাবাজির ব্যবসা সামলানো ইকবাল খুন ও অবৈধ নির্মাণে অভিযুক্ত হওয়ার পরে ফেরার হয়ে যায়। ২০০৩ সালে তাকে ভারতে ফেরত পাঠায় সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। কিন্তু প্রমাণ না মেলায় ২০০৭ সালে তাকে সব অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয় আদালত। পুলিশ জানিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে ফের তোলাবাজির ব্যবসা শুরু করেছে সে। জিজ্ঞাসাবাদে ইকবালের সঙ্গে একাধিক স্থানীয় কাউন্সিলর-সহ বিভিন্ন দলের নেতাদের যোগসাজশের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি পুলিশ সূত্রের। ওই শিকড় কতটা গভীরে ডালপালা মেলেছে তা খতিয়ে দেখছেন ঠাণে পুলিশের গোয়েন্দারা। পুলিশের একটি সূত্রের মতে, ঠাণের যে এলাকাটিতে ইকবালের গোষ্ঠী সক্রিয় ছিল সেখানে শরদ পওয়ারের দল এনসিপি-র প্রভাব রয়েছে। ওই দলের নেতাদের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের সম্পর্ক ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আগেও দাউদের সঙ্গে রাজনীতিকদের যোগাযোগের অভিযোগে উত্তাল হয়েছে মহারাষ্ট্র রাজনীতি।

মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি তাদের কাছে প্রায় ১০-১২টি তোলাবাজির অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগকারীরা অধিকাংশই নির্মাণ ব্যবসায়ী বা গয়নার দোকানের মালিক। তদন্তে নেমে আটক করা হয় মুমতাজ শেখ ও ইশার আলি জামিলকে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পরেই নাম উঠে আসে দাউদের ভাই ইকবালের। তদন্তে জানা যায়, ভাই দাউদের নাম ভাঙিয়ে গত কয়েক বছর ধরে তোলাবাজির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ইকবাল। ঠাণের এক নির্মাণ ব্যবসায়ীর অভিযোগ, ইকবালকে তিনি চারটি ফ্ল্যাট (যেগুলির মোট দাম ৫ কোটি টাকা) ছেড়ে দেন। নগদ দেন আরও ৩০ লক্ষ টাকা। তারপরেও আরও টাকা দেওয়ার জন্য চাপ বাড়াচ্ছিল ইকবালের লোকেরা। সূত্রের খবর, তখন পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি।

Advertisement

প্রশ্ন হল গোটা ঘটনায় সরাসরি দাউদের কোনও হাত রয়েছে কিনা। তদন্তে নেমে সেই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না মহারাষ্ট্র পুলিশ। একটি বিষয়ে গোয়েন্দারা নিশ্চিত যে, নির্বিঘ্নে যাতে তোলা আসে সে জন্য দাউদের নাম ব্যবহার করে ভয় দেখানো হচ্ছিল। কিন্তু দাউদের নির্দেশে ইকবাল ওই কাজ করেছে কি না তা নিয়ে নিশ্চিত হতে চাইছে পুলিশ। তবে ভয় দেখাতে বিদেশ থেকে শার্প শুটার মুম্বইতে এসে পৌঁছেছিল। ফলে দাউদের হাত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারছে না মহারাষ্ট্র পুলিশ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অফিসারেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সম্প্রতি ভারতের উদ্যোগে ব্রিটেনে থাকা দাউদ ইব্রাহিমের ৪৫ কোটি মার্কিন ডলারের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে সে দেশের সরকার। যা অর্থনৈতিক ভাবে বড় ধাক্কা দাউদের কাছে। সেই ধাক্কা সামলাতে ও টাকার জোগান জারি রাখতে ফের তোলাবাজির ব্যবসায় নেমে থাকতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন