সেই জায়গা: হোমের এখানে মেরে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল এক কিশোরীকে, পুলিশকে দেখাচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শী। মুজফ্ফরপুরে সোমবার। ছবি: পিটিআই।
মুজফ্ফরপুরের বেসরকারি হোমে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগের তদন্তে নেমে আজ হোমের মেঝে খুঁড়ে দেখল পুলিশ। আদালতের নির্দেশে এই খোঁড়াখুঁড়িতে এখনও কিছুই পাওয়া যায়নি। আদালতে কয়েক জন কিশোরী অভিযোগ করেছিলেন, ধর্ষণের পরে একটি মেয়েকে হত্যা করে হোমের মধ্যেই পুঁতে দেওয়া হয়েছে। মুজফ্ফরপুরের এসএসপি হরপ্রীত কৌর বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। আমরা সব দিক খোলা রেখেই তদন্ত করছি।’’ উল্লেখ্য, হোমের আবাসিকের মধ্যে ২৪ জনই যে ধর্ষণের শিকার, তা ডাক্তারি পরীক্ষায় প্রমাণ হয়েছে। ৩০ জন মানসিক আতঙ্কের শিকার। কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেসের (টিস) গবেষকরা রাজ্যের জুভেনাইল হোমগুলিতে চলতি বছরের প্রথম দিকে বিশেষ অডিট করেন। সেই অডিট রিপোর্টেই বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত মুজফ্ফরপুরের এই হোমে আবাসিকদের উপরে যৌন নির্যাতনের বিষয়টি সামনে আসে। ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮-র মধ্যে ছ’জন কিশোরী ওই আবাস থেকে নিখোঁজ হয়েছে বলেও অভিযোগ। টিস-এর রিপোর্ট সমাজকল্যাণ দফতরে জমা পড়তেই নড়ে বসে রাজ্য। তদন্তের নির্দেশ দেয় মুখ্যমন্ত্রীর অধীনস্থ স্বরাষ্ট্র দফতর। সমাজকল্যাণ দফতরও ঘটনার পৃথক তদন্ত শুরু করে। থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। প্রায় ৩০ জন কিশোরী তাদের উপরে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করে। পুলিশ তদন্তে নেমে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা ব্রজেশ ঠাকুর-সহ ১১ জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের মধ্যে আট জন মহিলাও রয়েছেন। এ ছাড়া জেলা শিশু কল্যাণ সমিতির সদস্য রবি রোশনকেও গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন জেলা শিশু কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান দিলীপ বর্মা।
এ দিনই লোকসভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন জনঅধিকার পার্টির সাংসদ পাপ্পু যাদব। তিনি সিবিআই তদন্তেরও দাবি করেছেন। রাজ্য বিধানসভায় বিরোধীরাও আজ এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে আঙুল তোলেন। বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব বলেন, ‘‘উপমুখ্যমন্ত্রী চেম্বারে বসে অভিযুক্তকে মিষ্টি খাওয়াতেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে তাঁর প্রচারে যেতেন। সরকার মামলা চাপা দিতে চাইছে।’’ জেডিইউ মুখপাত্র নীরজ কুমার বলেন, ‘‘আমাদের সরকার কাউকে বাঁচায় না। তদন্ত চলছে। দোষীদের কড়া সাজা হবে।’’