National News

দূষণের প্রতিবাদে তুতিকোরিন রণক্ষেত্র, পুলিশের গুলিতে হত ৯

ওই কপার স্মেল্টিং প্ল্যান্টের জন্য ভূগর্ভস্থ জল বিষিয়ে যাচ্ছে, এই অভিযেগে গত তিন মাস ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, পাকাপাকি ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হোক ওই প্ল্যান্ট। ওই প্ল্যান্ট গড়ার জন্য তামিলনাড়ু সরকার প্রাথমিক ভাবে ২৫ বছরের জন্য লাইসেন্স দিয়েছিল একটি বেসরকারি সংস্থাকে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চেন্নাই শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৮ ২১:০৩
Share:

রণক্ষেত্র তুতিকোরিন।

দূষণের প্রতিবাদে পাকাপাকি ভাবে একটি কপার স্মেল্টিং প্ল্যান্ট বন্ধ করার দাবিকে দাবিয়ে রাখতে মঙ্গলবার পুলিশের লাঠি, গুলি, কাঁদানে গ্যাসে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল তামিলনাড়ুর বন্দর শহর তুতিকোরিন। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হল অন্তত ৯ জনের।

Advertisement

ওই কপার স্মেল্টিং প্ল্যান্টের জন্য ভূগর্ভস্থ জল বিষিয়ে যাচ্ছে, এই অভিযেগে গত তিন মাস ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, পাকাপাকি ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হোক ওই প্ল্যান্ট। ওই প্ল্যান্ট গড়ার জন্য তামিলনাড়ু সরকার প্রাথমিক ভাবে ২৫ বছরের জন্য লাইসেন্স দিয়েছিল একটি বেসরকারি সংস্থাকে। সেই লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তুতি চলছে এই খবর রটে যেতেই তুঙ্গে পৌঁছয় বিক্ষোভ।

চেন্নাই থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে তুতিকোরিনে একটি গির্জার সামনে এ দিন বিক্ষোভে সামিল হন অন্তত হাজার পাঁচেক বিক্ষোভকারী। তাঁরা সেখান থেকে একটি মিছিল বের করে জেলার কালেক্টরের অফিসে যেতে চান। কিন্তু তাঁদের সেই অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। বিক্ষোভকারীদের রুখতে পুলিশ লাঠি চালালে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়েন বিক্ষোভকারীরা। এর পরেই পুলিশ গুলি চালাতে শুরু করে। তাতে ৯ বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়। দিনভর তামিলনাড়ু সরকার মুখে কুলুপ এঁটে থাকলেও পরিস্থিতির গুরুত্ব আঁচ করতে পেরে শেষ পর্যন্ত ওই বিক্ষোভ ও তার ওপর পুলিশি গুলিচালনার ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ই কে পালানিস্বামী।যদিও সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘হিংসা রুখতে আর কোনও উপায় না থাকায় পুলিশকে কড়া হতে হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এলাকায় বাড়তি পুলিশ বাহিনী পাঠানো হয়েছে।’’

Advertisement

বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের লাঠি, গুলি চালানোর ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে কংগেরেস সভাপতি রাহুল গাঁধী বলেন, ‘‘নিরীহ নাগরিকদের খুন করা হয়েছে।’’ তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছেন ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিনও। তিনি বিক্ষোভকারীদের পাসে দাঁড়াতে তুতিকোরিনে যাবেন বলে জানিয়েছেন। তামিল চলচ্চিত্রের দুই জনপ্রিয় তারকা রজনীকান্ত ও কমল হাসন দু’জনই সমর্থন জানিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীদের। দু’জনেই নিরীহ নাগরিকদের ওপর পুলিশের গুলিচালনার তীব্র নিন্দা করেছেন।

এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে পুলিশের গুলিতে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

আরও পড়ুন- বাধা নয় কাবেরীর জল বণ্টনে​

আরও পড়ুন- জল না ছাড়লে কড়া ব্যবস্থা, কর্নাটককে ধমক সুপ্রিম কোর্টের​

২০১৩ সালে এই প্ল্যান্ট থেক বিষাক্ত গ্যাস লিক হওয়ায় শ্বাসকষ্ট ও গলার প্রদাহে অসুস্থ হয়ে পড়েন কয়েকশো মানুষ। এলাকায় দূষণের জন্য ওই বছরই সুপ্রিম কোর্ট ১০০ কোটি টাকা জরিমানা ধার্য করে ওই প্ল্যান্টের বিরুদ্ধে। তার পর সাময়িক ভাবে প্ল্যান্টটি বন্ধ থাকলেও জাতীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনালের অনুমতির ভিত্তিতে সেটি আবার চালু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন