‘আলফা স্বাধীন’-এর ডেরায়। —নিজস্ব চিত্র
অসমের জঙ্গি সংগঠন ‘আলফা স্বাধীন’-এর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলার এক দিনের মধ্যে বন্ধুর সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। সেই সঙ্গে ওই সংগঠনের প্রশিক্ষণের ছবি ও অন্যান্য ছবিতে খোলাখুলি সমর্থন, অভিনন্দন জানাচ্ছে জনতা। এই পরিস্থিতিতে আলফার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাল অসম পুলিশ।
পুলিশের এডিজিপি (নিরাপত্তা) হরমিত সিংহের নেতৃত্বে খালা হয়েছে বিশেষ সাইবার সেল। হরমিত বলেন,‘‘আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। ইতিমধ্যে ওই অ্যাকাউন্টের ব্যাপারে সব জানিয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে অ্যাকাউন্ট ব্লক করার আবেদন জানানো হয়েছে।’’ যারা ফেসবুকে আলফাকে খোলাখুলি সমর্থন জানিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
এ দিকে নিজেদের ফেসবুকে একটি ভিডিও আপলোড করেছে আলফা স্বাধীন, যা পুলিশকে অস্বস্তির মুখে দাঁড় করিয়েছে। ৪ মে তিনসুকিয়া জেলার কুজুপথার গ্রামে আলফা জঙ্গিদের ঘাঁটিতে অভিযান চালাতে গিয়ে জঙ্গিদের গুলিতে মারা যান বড়দুমসা থানার ওসি ভাস্কর কলিতা। ন’টি গুলি লেগেছিল তাঁর। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ভেদ করে গুলি ঢোকে তাঁর শরীরে। পুলিশের বিরাট বাহিনীও আলফা জঙ্গিদের রুখতে বা ধরতে পারেনি।
দেখুন ভিডিয়ো
আলফা স্বাধীন ওই ঘটনার পরে পুলিশের কাছ থেকে লুঠ করে আনা একে-৪৭ রাইফেল পরীক্ষা করে দেখা এবং পুলিশের অপদার্থতা নিয়ে জঙ্গিদের হাসাহাসি করার একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে। দেখা যায়, জংলা পোষাক পরা সশস্ত্র জঙ্গিরা হাসাহাসি করে বলছে, "অসম পুলিশকে কেমন বোকা বানালাম দ্যাখ। এবার থেকে ওরা মারতে এলে আমরাই আগে মারব। কোনও থামাথামি নেই। ওরা অসমিয়া হয়ে পুলিশে যোগ দিয়ে আমাদেরই গুলি করে মারতে চায়। আক্রমণও ওরাই আগে করেছিল। আমরা করিনি। ওদের ক্ষমা নেই।" ভিডিয়োতে দেখা যায়, কথাবার্তার পরে কলিতার কাছ থেকে ছিনিয়ে আনা রাইফেল থেকে গুলি ছুঁড়ে পরীক্ষা করছে জঙ্গিরা।
আরও পড়ুন: কথা রাখেননি মোদী, ‘রাজধর্ম’ মনে করাতে হেঁটে দিল্লি পাড়ি ওড়িশার যুবকের
আরও পড়ুন: মনোনয়নের পর এবার হোয়াটসঅ্যাপে আইনি নোটিসেরও স্বীকৃতি দিল আদালত
ইতিমধ্যে ওই ভিডিয়োটি ২১ হাজার মানুষ দেখেছেন। শেয়ার হয়েছে ১৬৪ বার। সংখ্যাটা ক্রমেই বাড়ছে। সেই সঙ্গে আজ জাগুনের চা-বাগান থেকে অপহৃত মুহুরি গোপাল উপাধ্যায়ের একটি ভিডিও বার্তাও প্রকাশ করে আলফা স্বাধীন। অজ্ঞাত স্থানে বন্দি গোপালবাবুকে বলতে শোনা যায়, মার্গারিটার বিধায়ক ভাস্কর শর্মা ও বাগানের মালিক রাধা চেতিয়া তাঁর কাছ থেকে আলফা ও এনএসসিএন জঙ্গিদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতেন। চাকরির দায়ে এই কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। এখন তাঁকে মুক্ত করার ব্যাপারে ভাস্করবাবু ও রাধাবাবুকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান গোপালবাবু।