নারায়ণ নারায়ণ। হেলমেট পরার পরামর্শ মহর্ষি নারদের। বৃহস্পতিবার। — নিজস্ব চিত্র
হেলমেটহীন এক মোটরবাইক যুবক দাঁড়িয়ে ছিলেন রাঁচির অ্যালবার্ট এক্কা চকে। হঠাৎ তাঁর কানে কে যেন ফিসফিস করে বলে উঠল, ‘‘নারায়ণ, নারায়ণ।’’ বাইক আরোহী চমকে তাকিয়ে দেখেন পাশে দাঁড়িয়ে আছেন ‘মহর্ষি নারদ’। তাঁর খরতালে তাল ঠুকে বললেন, ‘‘তুম নে হেলমেট নেহি পহেনা বেটা! তব তো তুম বহত জল্দ যমালয় পৌঁছ যাওগে!’’
বাইক আরোহীদের সতর্ক করতে ও হেলমেট পড়ার পরামর্শ দিতে রাঁচির ট্রাফিক পুলিশের উদ্যোগে রাঁচির রাস্তায় ছড়িয়ে পড়েছেন মহর্ষিরা। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে মোড়ে তাঁরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বাইক-আরোহীদের জানাচ্ছেন, স্বর্গ থেকে তিনি লক্ষ করে দেখেছেন, প্রচুর মর্তবাসী হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক চালাচ্ছেন। এই দৃশ্য দেখে তিনি শিউরে উঠেছেন। তাই স্বয়ং তাঁর প্রভু তাঁকে স্বর্গ থেকে মর্তে নেমে মোটরবাইক চালকদের হেলমেট পড়ার পরামর্শ দিতে বলেছেন।
নারদ মুনিরা শুধু পরামর্শ দিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছেন না। বিনা হেলমেটের মোটরবাইক আরোহীকে ধরে একটি শোলার মুকুটও পরিয়ে দিচ্ছেন। তার পর সঙ্গে একটা নিজস্বীও তুলছেন। সর্তক করছেন এর পর যেন ফাঁকা মাথায় তাকে না দেখা যায়।
রাস্তাঘাটে ‘মজা’ হলেও এই অভিনব প্রয়াস বেশ কার্যকরী হয়েছে বলে দাবি ট্রাফিক এসপি সঞ্জয় রঞ্জন সিংহের। বলেন, ‘‘একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই প্রচার চালানো হচ্ছে। নারদ মুনির আশপাশে ট্রাফিক পুলিশও থাকছেন। প্রথমবার সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। পরে ধরা পড়লে জরিমানা ১০০ টাকা।’’
রাঁচর বিরসা চকের সামনে এ রকমই এক মোটরবাইক চালক বিনা হেলমেটে ধরা পড়ে বেশ বিব্রত। মহর্ষি নারদও ছাড়বার পাত্র নন। পরামর্শ দিয়ে আবার নিজস্বী তুলে নিলেন। এর পরই হাজির হন কয়েক জন
ট্রাফিক পুলিশ। ওই নিজস্বী চলে গেল
পুলিশের মোবাইলে। ফের ধরা পড়লেই জরিমানা। এই প্রচারে কোথাও কোথাও ট্রাফিক এসপি ঘুরছেন নারদ মুনির আশপাশে। বলেন, ‘‘কথা শুনছে না মানুষ। তাই ঠাকুর দেবতার আশ্রয়। এই প্রচারকে জোরদার করতে হনুমানজিকেও রাঁচির রাস্তায় নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে।’’