আরতি এবং বিষ্ণু। বিষ্ণু ভিচুর ফেসবুক প্রোফাইল থেকে নেওয়া ছবি।
পুলিশের বিরুদ্ধে নীতিপুলিশগিরির অভিযোগ উঠল। কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের ওই ঘটনা ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে। পরে যদিও রাজ্য পুলিশের তরফে ঘটনার জন্য ক্ষমা চাওয়া হয়েছে।
ঠিক কী হয়েছিল?
পার্কে বসে গল্প করছিলেন যুগলে। হঠাত্ই সেখানে দুই মহিলা পুলিশ হাজির। কোনও কথাবার্তা ছাড়াই তাঁদের থানায় যেতে বলেন। কারণ জিজ্ঞেস করায় বলা হয়, প্রকাশ্যে ‘অশালীন আচরণ’ করেছেন ওই যুগলে। এর পরেই গোটা কথোপকথন ‘ফেসবুক লাইভ’-এ ধরা পড়েছে। কারণ, বিষ্ণু ভিচু সেই সময়েই মোবাইল অন করে ‘লাইভ’ করে দিয়েছিলেন তাঁদের সঙ্গে কী ব্যবহার করছে ‘নীতি পুলিশ’।
ফেসবুক লাইভের সেই ভিডিও। বিষ্ণু ভিচুর প্রোফাইল থেকে নেওয়া...
ভ্যালেন্টাইন’স ডে-র ঠিক এক সপ্তাহ পরে মঙ্গলবার তিরুঅনন্তপুরমের একটি পার্কে প্রেমিকা আরতিকে নিয়ে গিয়েছিলেন বছর চব্বিশের যুবক বিষ্ণু। তাঁদের দাবি, দু’জনে একে অপরের কাঁধে হাত দিয়ে বসেছিলেন। কিন্তু, ওই দুই মহিলা পুলিশকর্মী তাঁদের বিরুদ্ধে পার্কে বসে প্রকাশ্যে অশালীন আচরণের অভিযোগ তোলেন। এর পরেই মোবাইল অন করে ফেসবুক লাইভ করেন বিষ্ণু।
ওই ভিডিওয় দেখা গিয়েছে পুলিশকে বিষ্ণু প্রশ্ন করছেন, ‘‘আমাদের বলুন, কোন অশালীন আচরণ আমরা করেছি? চুম্বন করেছি? এখানে ক্যামেরা আছে। আমরা একে অপরকে আলিঙ্গন করেছি? কাঁধে হাত রাখার কারণে আপনারা আমাদের হেনস্থা করতে পারেন না!’’
আরও খবর
চাকদহ থেকে কেকেআর, সায়নের চোখে এখন স্বপ্ন
কিন্তু, ওই মহিলা পুলিশকর্মীরা বিষ্ণুদের কোনও কথাই শোনেননি। কোনও প্রশ্নের জবাবও দেননি। অন্য পুরুষ সহকর্মীদের ডেকে ওই যুগলকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরে পার্কে বসে প্রকাশ্যে অশালীন আচরণ করার ‘অপরাধ’-এ তাঁদের ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়। সে টাকা দিয়েও দেন বিষ্ণুরা। পরে তিনি বলেন, ‘‘আমরা আসলে হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। বুঝতেই পারছিলাম না, কী অপরাধ করেছি। পুলিশের কাছে আমাদের প্রশ্নের কোনও জবাবও ছিল না। আমরা জরিমানার ফর্মে সই করে টাকা দিয়ে বেরিয়ে আসি। সামনেই আমাদের বিয়ে।’’
যদিও কেরল পুলিশের এক কর্তা এই ঘটনাকে নীতি পুলিশি বলে মানতে নারাজ। তাঁর কথায়, ‘‘থানা অভিযোগ পেয়েছে বলেই পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পুলিশ কিছু করেনি।’’
তবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে যেতেই কের পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল ফেসবুকে এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘পুলিশ আইনের রক্ষক। সমাজের নীতি নির্ধারক নয়।’’ ঘটনাটি তদন্ত করে দেখতে তিনি এক সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন।