রিপোর্ট এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। তার আগেই বিতর্ক। মুজফ্ফরনগর সংঘর্ষ সংক্রান্ত সেই রিপোর্ট বিহার ভোটে প্রভাব ফেলবে কি না, উঠছে সেই প্রশ্ন।
লোকসভা ভোটের আগে ২০১৩ সালে উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফরনগরে গোষ্ঠীসংঘর্ষ হয়েছিল। মায়াবতীর মতো বিরোধী নেত্রীর অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের ফায়দা তুলতে এই সংঘর্ষের জন্য সমাজবাদী পার্টি ও বিজেপি একযোগে কাজ করেছে। এই ঘটনার পরে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বিষ্ণু সহায়কে দিয়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। সেই কমিশনই এখন রিপোর্ট জমা দিয়েছে। সেটি প্রকাশ্যে না এলেও তাতে বিজেপি নেতাদেরই দায়ী করা হয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। বিজেপি এই রিপোর্ট খারিজ করে এটিকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অ্যাখ্যা দিয়েছে। কিন্তু বিহারে মুলায়ম, লালু, ওয়াইসির মতো নেতারা যদি এটিকে শুধুমাত্র সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় রাজনৈতিক হাতিয়ার করেন, তা হলে বিজেপি তাতে তেমন আশঙ্কারও কিছু দেখছে না। ভয় একটাই— রাজ্যজুড়ে এই রিপোর্ট নিয়ে চড়া সুরে প্রচার হলে তখন কী অবস্থা দাঁড়াবে।
যে ভাবে ভোটের মুখে লালু-নীতীশের সঙ্গ ছেড়ে মুলায়ম আলাদা হয়ে গিয়েছেন, তার পিছনেও বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের হাত রয়েছে বলে বিরোধীরা মনে করছেন। এ বারে ভোটের ঠিক মুখে সহায় কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনে সে রাজ্যে যদি মুলায়ম মেরুকরণের রাজনীতি করতে চান, তা হলে সংখ্যালঘু ভোট ভাগাভাগি হতে পারে। বিজেপি এমনিতেই সংখ্যালঘু ভোটের তেমন প্রত্যাশা রাখে না। মুলায়ম বা ওয়াইসিও বিহারে তেমন বড় শক্তি নয়। কিন্তু এই রিপোর্টকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে তাঁরা যদি বিজেপি বিরোধিতা করে লালুর ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাতে পারেন, তা হলে লাভ বিজেপিরই। তবে বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘বিহার আর উত্তরপ্রদেশ এক নয়। উত্তরপ্রদেশে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতি যতটা কাজ দেয়, বিহারে জাত-পাতের সমীকরণ অনেক বেশি গুরুত্ব পায়। তবু সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় এটি সীমাবদ্ধ থাকলে তা-ও ঠিক আছে। কিন্তু গোটা রাজ্যে প্রচারের মোড় ঘোরালে মুশকিল। বিজেপি যে ভাবে উন্নয়নকে হাতিয়ার করে জাত-পাতের সমীকরণকে ছাপিয়ে দেওয়ার কৌশল নিয়ে এগোতে চাইছে, তাতে ধাক্কা দেবে এই রিপোর্ট।’’
তাই আজ আগেভাগেই এই রিপোর্ট খারিজ করে দিয়েছে বিজেপি। দলের নেতা শ্রীকান্ত শর্মা বলেন, ‘‘আমরা কমিশনের রিপোর্ট খারিজ করি। কমিশন গঠনের সময়ও আমরা বিরোধিতা করেছি। সমাজবাদী পার্টির নেতাদের আড়াল করতেই এই কমিশন গঠন করা হয়েছে। এই রিপোর্ট আগাগোড়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রাজ্যের ইশারাতেই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।’’