অভাবের ঠেলা, লাঙল টানছে নাবালিকারাই

বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও সুদখোর মহাজনদের থেকে টাকা নিয়ে শোধ করতে পারছেন না অনেক চাষি। তাঁদের থেকে জোর করে টাকা আদায়ের অভিযোগও উঠছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

সেহর শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৭ ০৩:৪১
Share:

বেহাল: মেয়েদের নিয়েই চাষের কাজে নেমেছেন সর্দার বারেলা। মধ্যপ্রদেশের সেহর জেলার এই ছবি ইতিমধ্যেই ভাইরাল। ছবি: পিটিআই।

ষাট বছর আগে বিখ্যাত ছবি ‘মাদার ইন্ডিয়া’-য় অভাবী মায়ের সঙ্গে চাষের কাজ করতে গিয়ে লাঙল কাঁধে তুলে নিয়েছিল তাঁর দুই ছেলে। সেই ছবিটাই এত বছর পরে ফিরে এল আবার। বলদ কেনার টাকা নেই। চাষ করতে তাই এ বার নাবালিকা দুই মেয়ের ঘাড়েই লাঙল তুলে দিলেন মধ্যপ্রদেশের এক কৃষক। বলিউডি ছবি নয়, বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে দুই নাবালিকা কন্যাকে দিয়ে এমন ভাবে জমি চাষ করানোর ঘটনা ঘিরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সর্বত্র।

Advertisement

বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও সুদখোর মহাজনদের থেকে টাকা নিয়ে শোধ করতে পারছেন না অনেক চাষি। তাঁদের থেকে জোর করে টাকা আদায়ের অভিযোগও উঠছে। ঋণের জালে জড়িয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চাষিদের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে চলেছে নিয়মিত ভাবে।

বিশেষ করে বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে এই সঙ্কট বিরাট ভাবে দেখা দিয়েছে। আর তা নিয়ে রাজনৈতিক চাপের মধ্যে পড়ে গিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। গত মাসেই মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌরে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে ছয় জন চাষির মৃত্যুর ঘটনা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষকদের আন্দোলন শুরু হয়েছিল। তার পরেও ঋণের জালে জড়িয়ে একের পর এক কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে এ রাজ্যেও। এ বার মধ্যপ্রদেশের সেহর জেলার বসন্তপুর পাঙ্গড়ি এলাকায় নিজের মেয়েদের দিয়ে হাল চাষ করানোর ঘটনা কৃষকদের চরম আর্থিক সঙ্কটকে ফের এক বার সামনে এনে দিল। যা নিয়ে চাপের মধ্যে পড়ে গেল বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ সরকার।

Advertisement

সর্দার বারেলা নামে ওই চাষিটি জানিয়েছেন, লাঙল চালাতে বলদ কেনার মতো টাকা নেই তাঁর। সে জন্যই এই ভাবে নিজের মেয়েদের দিয়ে লাঙল চালিয়েছেন তিনি। ওই কৃষকের দুই কন্যা ১৪ বছরের রাধিকা আর ১১ বছরের কুন্তীকে টাকার অভাবে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হয়েছে। তার পরেই বাবাকে চাষের কাজে এ ভাবে সাহায্য করে দুই কন্যা।

আরও পড়ুন: মসুলে পৌঁছেই জয়ের খবর দিলেন প্রধানমন্ত্রী

এমন ছবি সামনে আসায় চরম অস্বস্তিতে মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিংহ চৌহানের সরকার। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে প্রশাসন। জেলা জনসংযোগ অধিকর্তা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে সরকারি স্তরে খোঁজখবর করা হয়েছে। এই ভাবে নাবালিকা মেয়েদের দিয়ে চাষ না করানোর জন্য ওই চাষিকে ইতিমধ্যেই বলা হয়েছে। কোন ধরনের সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকটিকে সাহায্য করা যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সৌজন্যে টিএনআইই ভিডিও

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন