Power Cut

Coal Crisis: বিদ্যুৎ সঙ্কটে পঞ্জাব, আশঙ্কা অন্য রাজ্যেও

 কয়লা সরবরাহে এই ঘাটতির জন্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গত কাল সরাসরি তোপ দাগেন পঞ্জাবের নবনিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চণ্ডীগড় শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২১ ০৯:০৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

নিয়ম করে দিনে টানা দুই থেকে তিন ঘণ্টা লোডশেডিং। কখনও কখনও তার বেশিও। বিদ্যুৎ বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত এই পন্থাই নিতে হল পঞ্জাবের প্রধান বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা ‘পঞ্জাব স্টেট পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেড (পিএসপিসিএল)-কে। কিন্তু কেন? কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, কয়লার অভাবের জেরেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন তারা।

Advertisement

মূলত কয়লার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছে বর্তমানে যেটুকু কাঁচামাল রয়েছে, এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে হয়তো আর দিন পাঁচেক উৎপাদন চালিয়ে নেওয়া যাবে, জানাচ্ছেন পিএসপিসিএল কর্তারা। তার পর? উত্তর অমিল। পঞ্জাবের পাশাপাশি কয়লার অভাবে সঙ্কটের মুখে দেশ জুড়ে কমপক্ষে ১৩৫টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। যার জেরে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কায় প্রহর গুনছে দিল্লি, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ। এমনকি ঝাড়খণ্ড ও বিহারও।

কয়লা সরবরাহে এই ঘাটতির জন্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গত কাল সরাসরি তোপ দাগেন পঞ্জাবের নবনিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী। তাঁর দাবি, ‘কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড’-এর একাধিক শাখা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি থাকা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত কয়লার জোগানের অভাবে ধুঁকছে রাজ্যটি। এমনটা চললে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে চন্নী বিষয়টিতে তড়িঘড়ি কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।

Advertisement

কেন্দ্রকে এ দিন কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করেন বিদ্যুৎ সঙ্কটের মুখে থাকা অন্যতম রাজ্য দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়াও।
তাঁর মন্তব্য, ‘‘কেন্দ্র কিছুতেই স্বীকার করবে না যে দেশ বর্তমানে কয়লা-সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সব কিছুর ক্ষেত্রে এ ভাবে চোখ ফিরিয়ে নেওয়ার মনোভাব ভারতের জন্য সাংঘাতিক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।’’ প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রী আর কে সিংহ এ দিন বলেন, ‘‘দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলির ব্যবহারের জন্য শুকনো জ্বালানির জোগানে কোনও টান পড়েনি। ফলে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা একেবারেই ভিত্তিহীন।’’ যার পরেই ওই প্রতিক্রিয়া দেন সিসৌদিয়া।

পিএসপিসিএল কর্তারা জানাচ্ছেন, কৃষিক্ষেত্রে বাড়তি চাহিদার পাশাপাশি উচ্চ তাপমাত্রার জেরে পঞ্জাবে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ৯০০০ মেগাওয়াটের কাছাকাছি। চন্নী এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, কৃষিক্ষেত্রে বিদ্যুতের জোগানে হেরফের এড়াতে গ্রাম ও শহরের গৃহস্থ এলাকায় ঘুরিয়ে ফিরেয়ে লোডশেডিং করে বিদ্যুৎ বাঁচাতে বাধ্য হচ্ছে সংস্থাটি। আশঙ্কার বহর বাড়িয়েছে রাজ্যের স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিও। অধিকাংশেই কয়লার জোগান যেটুকু রয়েছে তাতে দু’দিনও চলবে কি না সন্দেহ। কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী, কয়লাখনি থেকে হাজার কিলোমিটার বা তার বেশি দূরত্বের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির কাছে সবসময় আগামী ৩০ দিনের জন্য জোগান মজুত থাকা জরুরি। যদিও সে নিয়ম যে মানা হয়নি, তা বলাই বাহুল্য।

এ দিকে, আমদানি করা কয়লায় বিদ্যুৎ তৈরি করা গুজরাতের মুন্দ্রার ‘টাটা পাওয়ার’-এ ইতিমধ্যেই উৎপদানে তালা পড়েছে। গুজরাতে ১৮৫০ মেগাওয়াট, পঞ্জাবে ৪৭৫ মেগাওয়াট, রাজস্থানে ৩৮০ মেগাওয়াট, মহারাষ্ট্রে ৭৬০ মেগাওয়াট ও হরিয়ানায় ৩৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ সংস্থাটি। দিল্লির কয়েকটি অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ‘টাটা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড’-ও জানিয়েছে, যেটুকু জোগান রয়েছে তাতে আর দিন দুয়েকের বেশি চালানো যাবে না। ফলে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে লোডশেডিংয়ের দিকে ঝুঁকতে হবে তাদেরও। রাজধানীতে এই আসন্ন সঙ্কট এড়াতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে চিঠি লিখেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন