কংগ্রেস বিরোধিতায় একমত মমতা-কারাট

বিরোধী জোটের নেতৃত্বে এখনই কংগ্রেসকে চান না তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সুর প্রকাশ কারাটেরও। সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদকও কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী জোটের পক্ষে নন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০৫:২৬
Share:

বিরোধী জোটের নেতৃত্বে এখনই কংগ্রেসকে চান না তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সুর প্রকাশ কারাটেরও। সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদকও কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী জোটের পক্ষে নন। তাঁর যুক্তি, কংগ্রেস ইউপিএ-র মতো জোট তৈরি করতে চাইলেও তা সফল হবে না। কারণ সেই জোটকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো বিশ্বাসযোগ্যতা কংগ্রেসের নেই।

Advertisement

মমতা অবশ্য কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিরোধী জোটের কথা বলছেন। কারাট সে রাস্তাতেও হাঁটতে নারাজ। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও অ-বিজেপি, অ-কংগ্রেসি দলগুলির জোট নিয়ে মমতার সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন। কিন্তু কারাটের দাবি, সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হবে।

গোরক্ষপুর-ফুলপুরে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি ও মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টির জোটের কাছে হার মানতে হয়েছে বিজেপিকে। সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি শিবিরের আশা ছিল, উত্তরপ্রদেশের উপনির্বাচনের ফল দেখে কারাট জোট রাজনীতি নিয়ে তাঁর অবস্থান বদলাবেন। কিন্তু উল্টে আরও কড়া অবস্থান নিয়েছেন কারাট। তাঁর যুক্তি, ‘রাজ্য স্তরে অ-বিজেপি ভোটকে এক জায়গায় এনে ফেলাটাই লোকসভা ভোটে বিজেপিকে হারানোর সব থেকে কার্যকরী কৌশল হতে পারে।’ যার অর্থ, যে রাজ্যে বা যে আসনে বিজেপির বিরুদ্ধে যে সব থেকে শক্তিশালী, সিপিএম তাকেই সমর্থন করবে। দলের অন্দর মহলে প্রশ্ন, দল এই নির্বাচনী কৌশল নিলে পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম কী করবে? সেখানে কি বিজেপিকে হারাতে সিপিএমের কর্মী-সমর্থকরা তৃণমূলের প্রার্থীকে ভোট দেবেন?

Advertisement

ইয়েচুরি শিবির চাইছে, পশ্চিমবঙ্গে তো বটেই, জাতীয় স্তরেও কংগ্রেস তথা অ-বিজেপি দলগুলির প্রাক-নির্বাচনী জোট হোক। কিন্তু কারাটের যুক্তি, উত্তরপ্রদেশের উপনির্বাচন দেখিয়ে দিয়েছে, জাতীয় স্তরে অ-বিজেপি পার্টিগুলির জোট বা ফ্রন্ট তৈরিটা কোনও কৌশল নয়। তার বদলে রাজ্য স্তরে বড় দলগুলির জোট হলে, সেখানে ছোট দলগুলি সমর্থন করতে পারে। এখানেও আলিমুদ্দিনের নেতাদের প্রশ্ন— তা হলে পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম কি তৃণমূলের সঙ্গে জোট করবে?

কারাট তাঁর যুক্তি প্রমাণ করতে প্রয়াত জ্যোতি বসুর উদাহরণ টেনেছেন। মনে করিয়েছেন, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর ১৯৯৩-এ উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে জ্যোতি বসু চার দিন ধরে সেই রাজ্যে বিজেপিকে হারাতে প্রচার করেছিলেন। যে দল বিজেপিকে হারাতে পারবে, তাকেই সমর্থনের ডাক দিয়েছিলেন জ্যোতিবাবু। তার পরে সপা-বসপার জোট সরকার তৈরি হয়। একই ভাবে মধ্যপ্রদেশ-রাজস্থানে ওই বছরের ভোটেও বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ রোখার কৌশল নিয়েছিল সিপিএম। তাতে লাভবান হয়েছিল কংগ্রেস।

কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বিরোধী জোটকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো বিকল্প নীতি কংগ্রেসের কাছে নেই বলেই কারাটের দাবি। তাঁর যুক্তি— বিজু জনতা দল, তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি, তেলুগু দেশমের মতো আঞ্চলিক দলগুলি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট মেনে নেবে না। আবার কংগ্রেসকে জোটের নেতৃত্ব ছাড়তেও রাজি হবে না বেশ কিছু দল। সিপিএমও কংগ্রেসের সঙ্গে জাতীয় স্তরের জোটে যাচ্ছে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement