মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি-বিরোধী ফেডারাল ফ্রন্ট তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন। সেই জোটে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন প্রকাশ কারাট। সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদকের যুক্তি, ‘‘উনি তো কংগ্রেসকেও এই জোটে রাখার কথা বলেছেন!’’
আবার আসন্ন কর্নাটকের ভোটে সামান্য কিছু আসনেই বামেরা প্রার্থী দেবে। বাকি আসনে বিজেপির বিরুদ্ধে যেখানে যিনি সব চেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী, তাঁকেই সিপিএম সমর্থন করবে। যার অর্থ হল, যে আসনে বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের প্রার্থী শক্তিশালী, সেখানে সিপিএমের কর্মী-সমর্থকরা কংগ্রেসকেই ভোট দেবেন! উত্তরপ্রদেশে দুইে লোকসভা আসনের উপনির্বাচনে একই কৌশল ছিল সিপিএমের।
দলের এই রাজনৈতিক লাইনের প্রবক্তা কারাটই। তা হলে কি বাংলার অধিকাংশ আসনে সিপিএম এ বার তৃণমূলকে সমর্থন করবে? কারণ, রাজ্যের সিংহভাগ আসনে বিজেপির বিপরীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলই সব চেয়ে শক্তিশালী! কারাটের জবাব, ‘‘উনি তো বিজেপির সঙ্গে আঁতাত করছেন!’’
কারাটের জবাব থেকেই স্পষ্ট, সিপিএমের রাজনৈতিক লাইন তৈরির অঙ্ক মমতার জন্যই গুলিয়ে যাচ্ছে! এত দিন অ-কংগ্রেস, অ-বিজেপি বা তৃতীয় ফ্রন্ট— সবেতেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে বামেরা। কিন্তু এ বার সেই ভূমিকায় তৃণমূল নেত্রী অবতীর্ণ। বিজেপি-বিরোধী যে ফ্রন্টই হোক, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বা কংগ্রেসকে রেখে, সেখানে মমতা অপরিহার্য। ফলে কখনও মমতার পিছনে কংগ্রেস, কখনও বিজেপির ছায়া দেখছেন কারাট। আবার সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ব্যক্তিগত ভাবে যে কংগ্রেস, অ-বিজেপি দলগুলির সঙ্গে জোট চাইছেন, সেখানেও মমতা থাকলে সিপিএমের পক্ষে যোগ দেওয়া কঠিন।
মমতার ফেডারাল ফ্রন্টের চেষ্টা নিয়ে ইয়েচুরি আজ বলেন, ‘‘প্রতি বারই লোকসভা ভোটের আগে এই ধরনের চেষ্টা হয়। আগামী লোকসভা ভোটের আগে গঙ্গা-যমুনা দিয়ে অনেক জল বয়ে যাবে। অনেক কিছু হবে। এখনই এ নিয়ে বলার মতো সময় আসেনি।’’ তাঁর পাল্টা যুক্তি, এর আগেও মমতা ফেডারাল ফ্রন্টের চেষ্টা করেছেন। তা সফল হয়নি।
তবে কারাট আজ যে ভাবে কর্নাটকে বিজেপির বিরুদ্ধে সব চেয়ে শক্তিশালী প্রার্থীকে সমর্থনের কথা বলেছেন, তাতে প্রশ্ন উঠেছে, কারাট কি কংগ্রেসের সম্পর্কে ‘নরম সুর’ নিচ্ছেন? খোদ কারাটের ব্যাখ্যা, ‘‘আমরা কোনও দলকে সমর্থনের কথা বলব না। বিজেপিকে হারানোর ডাক দেব।’’ আর ইয়েচুরির বক্তব্য, এপ্রিলে হায়দরাবাদে পার্টি কংগ্রেসেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।