চিন সাগরে তেল উত্তোলনের জন্য ভিয়েতনাম-ভারত চুক্তি নিয়ে গত কালই উষ্মা প্রকাশ করেছে চিন। জানিয়েছে, বিতর্কিত সমুদ্র-জলে এ ধরনের কোনও সমঝোতাকে ভাল নজরে দেখছেন না তাঁরা। কিন্তু চিনা রাষ্ট্রপতি শি চিনফিং আজ যখন ভারতে পা রেখেছেন, ঠিক সেই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিলেন, এ ব্যাপারে বেজিংয়ের ভ্রুকুটি নিয়ে একেবারেই বিচলিত নয় নয়াদিল্লি। ভারতের সঙ্গে চিনের কূটনৈতিক সম্পর্ক যেমন স্বাধীন, তেমনই স্বাধীন ভিয়েতনামের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্কও। ভিয়েতনাম সফর শেষে আজ সন্ধ্যায় দেশে ফেরার সময়ে বিমানে সাংবাদিক বৈঠকে এই বার্তা দেন প্রণববাবু।
তেল চুক্তির ফলে দক্ষিণ চিন সাগরে ভারতের তেল উত্তোলক সংস্থা ওএনজিসি বিদেশ-কে দুটি তেল ব্লক দিতে অঙ্গীকার করেছে হ্যানয়। কিন্তু পূর্ব বা দক্ষিণ চিন সাগরে আধিপত্য বিস্তার করতে আগ্রাসী প্রবণতা নিয়ে চলেছে বেজিংও। যে কারণে, ভিয়েতনামের সঙ্গে ইদানীং তিক্ততা তৈরি হয়েছে তাদের। প্রণববাবুর ভিয়েতনাম সফরে তেল চুক্তি হওয়ার পরের দিনই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বেজিং। চিনের তরফে বলা হয়েছে, দক্ষিণ চিন সাগরে এ ধরনের চুক্তি নিয়ে তাদের আপত্তি রয়েছে।
সেই প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, “ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে কখনও তৃতীয় দেশের প্রিজমের নীচে ফেলে দেখে না। প্রতিটি দেশের সঙ্গে নয়াদিল্লির দ্বিপাক্ষিক ও কৌশলগত সম্পর্ক স্বাধীন।” এক ধাপ এগিয়ে প্রণববাবুর মন্তব্য, “সংশ্লিষ্ট সমুদ্র অঞ্চলে ওএনজিসি ’৯৮ সাল থেকেই কাজ করছে। তাই সব কিছু রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা ঠিক নয়।” রাষ্ট্রপতির কথায়, দক্ষিণ চিন সাগরকে নিয়ে বিতর্কের প্রশ্নে ভারত অংশীদার নয়। তবে নয়াদিল্লি বরাবরই চেয়েছে যাবতীয় বিরোধ মীমাংসা আন্তর্জাতিক আইন মেনে শান্তিপূর্ণ ভাবেই হোক।
তবে ভারত যখন এই তেল চুক্তি করছে, তখনই গত কাল কৌশলে নয়াদিল্লিকেও কিছুটা ধাক্কা দিতে চেয়েছে বেজিং। মলদ্বীপের নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের দায়িত্ব পাওয়ার কথা ছিল ভারতীয় এক বেসরকারি সংস্থার। কিন্তু কৌশলে তা প্রায় ছিনিয়ে নিয়েছে বেজিং।