৫১ ফুট লম্বা পঞ্চমুখী শিবমূর্তির উদ্বোধনে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। হাওড়ার শেঠ বংশীধর জালান স্মৃতি মন্দিরে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী।
হইচই করে সংসদ অচল করে দেওয়ার রেওয়াজের সমালোচনা করলেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী ভবন কক্ষে রবিবার জওহরলাল নেহরুকে নিয়ে বক্তৃতার ফাঁকে তিনি ওই মনোভাব ব্যক্ত করেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ দিন নেহরুর ১২৫ তম জন্মদিন উদ্যাপনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন রাষ্ট্রপতি। সেখানে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর অবদান স্মরণ করতে গিয়ে তিনি জানান, গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, স্বাধীন কম্পট্রলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান বা পদ তৈরি করা হয়েছে। এগুলি নেহরুরই পরিকল্পনাপ্রসূত। এ প্রসঙ্গেই গণতন্ত্রে সংসদে বিতর্কের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন প্রণববাবু। তাঁর সংযোজন, ‘‘তিনটে ডি-র কথা শুনেছি। ডিবেট (বিতর্ক), ডিসকাশন (আলোচনা) এবং ডিসিশন (সিদ্ধান্ত)। কখনও শুনিনি, আর একটা ডি-ও আছে। ডিসরাপশন (ভেস্তে দেওয়া)। হইচই করে সংসদ বন্ধ করে দাও। হইচই করার জন্য বহু জায়গা আছে।’’
হাওড়ার শিবমূর্তি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে
ওয়াই সি দেবেশ্বর,
লক্ষ্মী মিত্তল প্রমুখ। — নিজস্ব চিত্র।
সাম্প্রতিক কালে সংসদে বিরোধীদের হইচই করে অচলাবস্থা তৈরি গোটা দেশেই চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। সেই প্রেক্ষিতেই রাষ্ট্রপতির ওই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। যা পরবর্তী কালে বিরোধীদের আক্রমণের জন্য দেশের শাসক দল বিজেপি-র হাতিয়ার হতে পারে। তবে রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে প্রণববাবু যখন কংগ্রেস নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন, তখন বিজেপি-র বিরুদ্ধেই সংসদে অচলাবস্থা তৈরির অভিযোগ উঠত।
এ দিন ওই অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী নেহরু স্মারক পুস্তিকা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা বিধান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্র রাষ্ট্রপতিকে রাষ্ট্রপতির এবং নেহরুর আবক্ষ মূর্তি উপহার দেন। ওই মূর্তি দু’টি তৈরি করেছেন ভাস্কর দিলীপ পাল। কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং পিডিএস নেতা সমীর পূততুণ্ড অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।