রাইসিনা হিল কি সংবাদমাধ্যমের আওতার বাইরে চলে গেল! আজ দুপুরে মন্ত্রক বণ্টনের পর থেকেই সেই জল্পনা ছড়িয়েছে রাইসিনার দু’ধারে, নর্থ ও সাউথ ব্লকে!
সাধু সাবধান! এনডিএ-র নেতা নির্বাচনের বৈঠকে এই আপ্তবাক্য সমস্ত সাংসদকে শুনিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। যার অর্থ, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে মাখামাখি আদৌ কাঙ্ক্ষিত নয়। অনেক সময়েই সাংসদেরা আলটপকা মন্তব্য করে বসেন। যা নিয়ে পরে প্রবল বিতর্ক সৃষ্টি হয়। খবরের খোঁজে সাংসদ-মন্ত্রীদের বাড়ির সামনে হাজির হয়ে যায় সংবাদমাধ্যম। তাই সমস্ত সাংসদকেই কোনও বিষয়ে না-জেনে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেন মোদী। ‘অফ দ্য রেকর্ড’ কথা বলতেও বারণ করেন।
কর্তার ইচ্ছেয় কর্ম। তাই আজ নির্মলা সীতারামন দায়িত্ব নেওয়ার পরেই নর্থ ব্লকে জল্পনা শুরু হয়ে যায়, নতুন মন্ত্রী নাকি অর্থ মন্ত্রকের করিডরে ইচ্ছেমতো ঘোরাফেরায় বাধানিষেধ জারি করার পক্ষপাতী। সাংবাদিকেরা যাতে আমলাদের ঘরে হুটহাট ঢুকে পড়তে না-পারেন বা নর্থ ব্লকের অলিন্দে চলাফেরার সময়েও আমলাদের সঙ্গে কথা না-বলেন সে দিকে বিশেষ নজর রাখার কথা বলা হয়েছে বলে শোনা যায়। এক কথায় যার মর্মার্থ হল, সরকারি সমস্ত সূত্র থেকে দূরে রাখা হবে সংবাদমাধ্যমকে।
রাজনাথ সিংহের জমানায় এই ধরনের একটি অলিখিত নির্দেশ জারি করেছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব মেহর্ষি। সংবাদমাধ্যমকে বলা হয়, তারা নির্দিষ্ট কক্ষে থাকবে। মুখপাত্র প্রয়োজন মতো সরকারের সিদ্ধান্ত বা সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নের উত্তর থাকলে তার জবাব জেনে এসে বলে যাবেন। মেহর্ষির অবসরের পরে সেই নিয়ম অনেকটা ঢিলে হয়ে যায়। কিন্তু এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছেন অমিত শাহ। ফলে আশঙ্কা রয়েছে, যেখানে অমিত রয়েছেন সেখানে বাধানিষেধ জারি হবেই।
এ তো গেল নর্থ ব্লক। সাউথ ব্লকে রয়েছে প্রতিরক্ষা-বিদেশ মন্ত্রক। নয়া প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথের সঙ্গে সংবাদমাধ্যমের সুসম্পর্ক থাকলেও, সেনার নিয়ম অনুযায়ী সাংবাদিকেরা এখানে যত্রতত্র ঘুরতে পারেন না। আর বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর তো ঝানু কূটনীতিক। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও নন। তিনি এক ধাপ এগিয়ে আজ দায়িত্ব নেওয়ার সময়েও প্রবেশাধিকার দেননি সংবাদমাধ্যমকে। আর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কিংবা রাষ্ট্রপতি ভবনে তো এমনিতেই অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করা সম্ভব নয়।
মন্ত্রক বণ্টক হওয়ার পর থেকেই তাই জল্পনা— এ বার কি সংবাদমাধ্যমের অগম্যই হতে বসেছে রাইসিনা হিল!