Narendra Modi

Narendra Modi: উন্নাওয়ের রাজ্যে মেয়েরা সুরক্ষিত, মত প্রধানমন্ত্রীর

এক মাসের মধ্যে এই নিয়ে ১০ দিন ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশে কাটল প্রধানমন্ত্রীর। প্রয়াগরাজের মঞ্চ থেকে বার্তা দিলেন নারীদের সুরক্ষা আর ক্ষমতায়নের।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

প্রয়াগরাজ শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:২১
Share:

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে শিশুকে আদর মোদীর। পিটিআই

যোগী আদিত্যনাথের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে উত্তরপ্রদেশের উন্নাও, হাথরসের মতো জায়গায় ঘটেছে গণধর্ষণের ঘটনা। জীবন্ত জ্বালিয়ে খুনও করা হয়েছে নির্যাতিতাকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অবশ্য মনে করেন, যোগী-রাজ্যে মেয়েরা সুরক্ষিত।

Advertisement

গত এক মাসের মধ্যে এই নিয়ে দশম দিন ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশে কাটল প্রধানমন্ত্রীর। এ বার প্রয়াগরাজের মঞ্চ থেকে
তিনি বার্তা দিলেন নারীদের সুরক্ষা আর ক্ষমতায়নের। আজ তিনি বলেন, ‘‘পাঁচ বছর আগে উত্তরপ্রদেশের রাস্তায় মাফিয়াদের রাজত্ব চলত। আমাদের মেয়ে-বোনেরাই তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। তাঁদের পক্ষে রাস্তায় বেরোনো, স্কুল-কলেজে যাওয়া মুশকিল ছিল। কিন্তু যোগী আদিত্যনাথ এই গুন্ডাদের ঠিক জায়গায় পাঠিয়ে দিয়েছেন। এখন উত্তরপ্রদেশে আছে নিরাপত্তা, অধিকার এবং সুযোগ। আমি নিশ্চিত, মা-বোনেদের আশীর্বাদে কেউ আর এই রাজ্যকে অন্ধকারে ঠেলে দিতে পারবে না।’’

মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স তড়িঘড়ি ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ বছর করার বিষয়টিতে আপত্তি তোলার জন্য নাম না করে এ দিন বিরোধীদেরও নিশানা করেছেন মোদী। বলেছেন, ‘‘আমরা মেয়েদের বিয়ের বয়স ২১ বছর করতে চাইছি, যাতে তারা পড়াশোনা করে জীবনে উন্নতি করতে পারে। দেশ তার কন্যাদের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সবাই দেখতে পাচ্ছে, তাতে কাদের অসুবিধে হচ্ছে, কারা তাতে ব্যথা পাচ্ছেন।’’ প্রসঙ্গত, আজই লোকসভায় বিরোধীদের প্রতিবাদের মুখে মেয়েদের বিয়ের বয়স বাড়ানো সংক্রান্ত বাল্যবিবাহ রোধ (সংশোধনী) বিলটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠিয়েছে কেন্দ্র। লোকসভায় বিলটি পেশ করে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেন, মহিলাদের সমান অধিকারের বিষয়টি বিয়ের বয়সের প্রেক্ষিতেও দেখা প্রয়োজন। বিভিন্ন ধর্মে বিবাহ সংক্রান্ত আইনও ভিন্ন।

Advertisement

যদিও কংগ্রেস, এনসিপি, তৃণমূল কংগ্রেস, এমআইএম-সহ বিভিন্ন দলের সাংসদেরা অভিযোগ তোলেন, কোনও আলোচনা না করেই তাড়াহুড়ো করে বিলটি আনা হয়েছে। কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী এবং গৌরব গগৈ বিলটি স্থায়ী কমিটিতে পাঠানোর দাবি তোলেন। অধীর বলেন, সংশোধনী আনার আগে সংশ্লিষ্ট পক্ষের কোনও মতামত নেয়নি সরকার। এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে বলেন, এই নিয়ে দ্বিতীয় বা তৃতীয় বার বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই তড়িঘড়ি বিল আনা হল। তাড়াহুড়োর কথা তুলে তৃণমূলের সৌগত রায়ও বলেন, ‘‘সংখ্যালঘুরা এই বিলের সম্পূর্ণ বিরোধী। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন।’’ আঠারোয় ভোটাধিকার থাকলে বিয়ের অধিকার থাকবে না কেন, প্রশ্ন তোলেন এমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়েইসি। বাল্যবিবাহ রোধ এবং মেয়েদের সমান অধিকারের যুক্তি দিয়েও স্মৃতি জানান, বিলটি স্থায়ী কমিটিতে পাঠানোর সুপারিশ করছে সরকার।

আজ প্রয়াগরাজে এই বিল প্রসঙ্গে মোদীর নিশানায় অবশ্য ছিল মূলত সমাজবাদী পার্টি (এসপি)। সম্প্রতি ওই দলের দুই সাংসদ শফিকুর রহমান বার্ক এবং এস টি হাসান এই বিলের বিরোধিতা করেছিলেন। এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব যদিও দুই সাংসদের মন্তব্যকে ‘ব্যক্তিগত’ বলে উল্লেখ করে দাবি করেছিলেন যে, তাঁদের দল প্রগতিশীল। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ দিনের জনসভায় মোদী-যোগীর মূল লক্ষ্যই ছিল নারীকল্যাণ নিয়ে বিজেপির গুণগান। মোদী আজ তাই এ-ও বলেছেন যে, ‘‘উত্তরপ্রদেশে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় দেওয়া ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ বাড়ি মহিলাদের নামেই নথিভুক্ত। মহিলাদের সত্যিকারের ক্ষমতায়নে সরকারের দায়বদ্ধতা এতেই প্রমাণিত।’’

এ দিনের অনুষ্ঠানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ‘দীনদয়াল অন্তোদয় যোজনা গ্রামীণ মিশন’-এর এক হাজার কোটি টাকা দেন মোদী। সরকারের দাবি, প্রায় ১৬ লক্ষ মহিলা এতে উপকৃত হবেন। ‘মুখ্যমন্ত্রী কন্যা সুমঙ্গল প্রকল্পে’ রাজ্যের এক লক্ষেরও বেশি কন্যাসন্তানকে মাথাপিছু ১৫ হাজার টাকা করে সাহায্যের অর্থও এ দিন দেওয়া হয়েছে। বিজেপির দাবি, মোদীর আজকের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন দু’লক্ষেরও বেশি মহিলা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন