Protest against Citizenship Amendment Bill

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে উত্তাল উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি, চলছে ১১ ঘণ্টার বনধ

পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশে ধর্মীয় নিপীড়ণের শিকার অমুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের ভারতের স্থায়ী নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৩:৫৮
Share:

গুয়াহাটিতে বিক্ষোভ। ছবি: পিটিআই।

বিতর্কের মধ্যেই সোমবার লোকসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে নাগরিক সংশোধনী বিল (সিএবি)। তা নিয়ে বিক্ষোভে উত্তাল অসম-সহ উত্তর-পূর্বের একাধিক রাজ্য। ইতিমধ্যেই একাধিক জায়গা থেকে বিক্ষোভের খবর সামনে এসেছে। অসমের মালিগাঁও-তে একটি সরকারি বাসে ভাঙচুর চালান বিক্ষোভকারীরা। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি স্কুটি। গুয়াহাটিতে বিধানভবন এবং সেক্রেট্যারিয়ট ভবনের সামনে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধে একদল আন্দোলনকারী।

Advertisement

আন্দোলনের জেরে গুয়াহাটিতে সমস্ত সরকারি অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে স্কুল-কলেজও। তাতে বেশ কয়েক জন জখম হয়েছেন। আন্দোলনের জেরে ট্রেন চলাচলও ব্যাহত হয়েছে। আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে গৌহাটি ইউনিভার্সিটি এবং ডিব্রুগড় ইউনিভার্সিটির সমস্ত পরীক্ষা। অসম রেলের মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিক্ষোভের জেরে একাধিক জায়গায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। কামরূপ জেলার রঙ্গিয়ায় নর্থ-ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলের ডিআরএম-এর দফতরও ঘেরাও করা হয় বলে জানান তিনি।

পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশে ধর্মীয় নিপীড়ণের শিকার অমুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের ভারতের স্থায়ী নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে। তা নিয়ে শুরু থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির। তাদের দাবি, পড়শি দেশ থেকে দলে দলে অমুসলিমরা এসে ভিড় জমালে, তাঁদের জীবনযাত্রায় তার প্রভাব পড়বে। সঙ্কটে পড়বে তাঁদের সংস্কৃতি।

Advertisement

আন্দোলনে নেসো। ছবি: পিটিআই।

আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব বিলে ‘ধর্মীয় বৈষম্য’, আমিত শাহের উপর নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ মার্কিন কমিশনের

তার পরেও সোমবার লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থনে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হয়ে যায়। তাতেই বিক্ষোভ চরমে উঠেছে। অসম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মিজোরাম এবং ত্রিপুরা, এই ছয় রাজ্যে এ দিন ভোর ৫টা থেকে বিকাল ৪টে পর্যন্ত, টানা ১১ ঘণ্টা একজোটে বনধে্র ডাক দিয়েছে নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন (নেসো)। তাদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে কংগ্রেস, অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ), অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আসু), কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি, অল অরুণাচল প্রদেশ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন, খাসি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন এবং নাগা স্টুডেন্টস-এর মতো সংগঠন।

নেসোর চেয়ারম্যান স্যামুয়েল জিরওয়া সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হয়ে গেলে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে বাংলাদেশ থেকে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীরা দলে দলে এসে ভিড় করবেন। এতে সাধারণ মানুষ এত দিন ধরে যে দাবি-দাওয়া জানিয়ে আসছেন, তাকে অসম্মান জানানো হবে।’’

আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব বিলে সমর্থন নিয়ে জেডিইউ-এর সমালোচনায় প্রশান্ত কিশোর

নেসোর পাশাপাশি, এ দিন অসমে ১২ ঘণ্টার বন্‌ধ ডেকেছে এসএফআই, ডিওয়াইএফআই, এআইএসএফ, আইসা, আইপিটিএ-র মতো ১৬টি বাম সংগঠন। এমন পরিস্থিতিতে গৌহাটি ইউনিভার্সিটি এবং ডিব্রুগড় ইউনিভার্সিটির সমস্ত পরীক্ষা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।

অন্য দিকে, এ দিন নাগাল্যান্ডেও বন্‌ধ পালিত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু হর্নবিল উৎসবের জন্য শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে যায় তারা। এক দিন আগে পর্যন্ত নাগরিক সংশোধনী বিলে নিয়ে প্রতিবাদ চালিয়ে গেলেও, বনধে শামিল হয়নি মণিপুরও। গতকাল সংসদে ওই রাজ্যকে ‘ইনার লাইন পারমিট (আইএলপি)’-র আওতায় আনার ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, যার অর্থ, এ বার থেকে অনুমতি ছাড়া বাইরের কেউ ওই রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবেন না। এই ঘোষণার পরই আন্দোলন গুটিয়ে নেয় মণিপুর পিপল এগেইনস্ট সিএবি (ম্যানপ্যাক) সংগঠন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন