Rajnath Singh

শ্রীনগরে রাজনাথ, কাঁধে নিলেন জওয়ানের কফিন

সাম্প্রতিককালে এমন ভয়াবহ হামলা দেখেনি উপত্যকা। ঘটনার পর থেকেই গোটা উপত্যকার পরিস্থিতি থমথমে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৪:৪৪
Share:

নিহত জওয়ানের কফিন বয়ে নিয়ে গেলেন রাজনাথ সিংহ। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

গিয়েছিলেন নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে। তবে শ্রীনগরে জঙ্গি হামলায় নিহত জওয়ানের কফিনও বইতে দেখা গেল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে। তাঁকে সঙ্গ দিলেন জম্মু-কাশ্মীরের ডিজিপি দিলবাগ সিংহ।

Advertisement

জঙ্গি হামলার পর কাশ্মীরের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে শুক্রবার দুপুরে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিমানে চড়ে শ্রীনগর পৌঁছন রাজনাথ। সিআরপিএফ-এর ডিজি আর আর ভাটনগর এবং স্বরাষ্ট্র দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। সবার আগে বদগাওঁতে নিহত জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানান তাঁরা। যার পর বিমানে করে দেহগুলি নিয়ে যাওয়া হয় গাজিয়াবাদের সেনা বেসে। যা নিহত জওয়ানদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

বদগাওঁতে রাজনাথ বলেন, ‘‘সিআরপিএফ জওয়ানদের আত্মবলিদান ভুলবে না দেশ। পুলওয়ামার শহিদ জওয়ানদের শেষ শ্রদ্ধা জানালাম আমি। কথা দিচ্ছি, ওঁদের বলিদান বিফলে যাবে না।’’

Advertisement

এ দিন শ্রীনগরে রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক, নিরাপত্তা বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন রাজনাথ। উপত্যকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন তিনি। হামলা পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনাও হয় তাঁদের মধ্যে। বৈঠক সেরে বেরিয়ে রাজনাথ বলেন, ‘‘নিহত জওয়ানদের শোকগ্রস্ত পরিবার পরিজনদের সবরকমভাবে সাহায্য করা হবে। এ ব্যাপারে রাজ্যগুলিকে অনুরোধ জানিয়েছি। এ ভাবে সেনার মনোবল ভাঙা যাবে না। এর শেষ দেখে ছাড়ব আমরা। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।’’

নিহত জওয়ানের কফিন কাঁধে নিয়ে রাজনাথ সিংহ।

সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা সম্পর্কে এই তথ্যগুলি জানেন? খেলুন কুইজ

আরও পড়ুন: হামলার মূল্য চোকাতেই হবে দোষীদের, হুঁশিয়ারি মোদীর, নাম না করে কড়া বার্তা পাকিস্তানকেও​

গতকাল দুপুর সওয়া ৩টে নাগাদ দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সেনা কনভয়ে হামলা চালায় জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিরা। তাতে ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান প্রাণ হারান। সাম্প্রতিককালে এমন ভয়াবহ হামলা দেখেনি উপত্যকা। ঘটনার পর থেকেই গোটা উপত্যকার পরিস্থিতি থমথমে। রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের নির্দেশে ইতিমধ্যেই উচ্চ সতর্কতা জারি হয়েছে সর্বত্র। কার্ফু জারি হয়েছে বেস কিছু জায়গায়। বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়েতে বন্ধ রাখা হয়েছে যান চলাচল। ওই এলাকা সংলগ্ন বাকি রাস্তাও বন্ধ রাখা হয়েছে। এই মুহূর্তে গলন্দর হয়ে ঘুরপথে যাতায়াত করছেন সাধারণ মানুষ।

হামলার তদন্তে রাজ্য পুলিশকে সাহায্য করতে শুক্রবারই পুলওয়ামা পৌঁছচ্ছেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষী (এনএসজি)বাহিনীর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। পৌঁছবেন ন্যাশনাল বম্ব ডেটা সেন্টারের বিশেষজ্ঞরাও। ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করবেন তাঁরা। তাই যে লেথপোরা হাইওয়ের উপর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, বন্ধ রাখা হয়েছে সেটিও। আধাসামরিক বাহিনীর তিন জওয়ানের দেহ উদ্ধার করা যায়নি এখনও পর্যন্ত। কনভয়ের ধ্বংসাবশেষ থেকে সেগুলি খুঁজে বার করতে ঘটনাস্থলে আরও বাহিনী নামানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: সরকার ও সেনার পাশেই রয়েছে বিরোধীরা, এটা শোকের সময়, বললেন রাহুল​

পুলওয়ামায় হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যে দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠরত কাশ্মীরি পড়ুয়াদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা জম্মু -কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লার। তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টুইটারে রাজনাথ সিংহের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি। এ দিন সকালে নিজের টুইটার হ্যান্ডলে ওমর আব্দুল্লা লেখেন, ‘কাশ্মীরি বা মুসলিমরা সিআরপিএফ-এর ওপর হামলা চালায়নি। হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসবাদীরা। এই ধরনের পরিস্থিতিতে দোষ চাপানোর প্রবণতা দেখা দেয়। তা না হতে দেওয়াই বাঞ্ছনীয়। বরং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একজোট হওয়া উচিত আমাদের। সন্ত্রাসকে হাতিয়ার করে কাউকে বিভাজন সৃষ্টি করতে দেবেন না। রাজনাথজির কাছে আমার আবেদন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন কাশ্মীরিরা। কেউ কলেজে পড়েন তো কেউ আবার কোনও প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। এমন পরিস্থিতিতে তাঁদের নিশানা করা হতে পারে। বিভিন্ন রাজ্যের সরকারকে দয়া করে ওঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিন।’

(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন