অধরা: কিম পিটার ডেভি
পুরুলিয়া অস্ত্রবর্ষণ কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত কিম ডেভিকে হাতে পেতে নতুন করে চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্র।
১৯৯৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর মধ্যরাতে পুরুলিয়া জেলার ঝালদা, বেলামু, মারামু-সহ সাতটি গ্রামে ‘আন্টোনভ এ এন-২৬’ বিমান থেকে প্রায় বিপুল পরিমাণ একে-৪৭ রাইফেল এবং গোলাবারুদ ফেলা হয়েছিল। এর ক’দিন বাদে বিমানটি ফের ভারতে ঢুকলে ভারতীয় বিমান বাহিনী সেটিকে আটক করে। গ্রেফতার হন ব্রিটিশ নাগরিক পিটার ব্লিচ এবং আরও পাঁচ লাটভীয় নাগরিক। কিন্তু উধাও হয়ে যান অস্ত্রবর্ষণের মূল মাথা কিম পিটার ডেভি।
অস্ত্রবর্ষণ মামলায় ধৃতদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। ২০০০ সালে পাঁচ লাটভীয় বন্দিকে মার্জনা করেন রাষ্ট্রপতি। ২০০৪ সালে মার্জনা করা হয় পিটার ব্লিচকে। তাঁরা নিজেদের দেশে ফিরে যান। ডেভি অবশ্য অধরাই থেকে যান।
কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের খবর, ডেভিকে প্রত্যর্পণের ক্ষেত্রে মানবাধিকারের বিষয়টিই বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে। ভারতের সংশোধনাগারে ডেভির মানবাধিকার কতটা সুরক্ষিত থাকবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ডেনমার্ক। কারণ, সে দেশের আইন অনুযায়ী তাদের নাগরিকদের মানবাধিকারের দিকটি বিশেষ ভাবে সুরক্ষিত।
এই অবস্থায় ডেনমার্কের আইন মন্ত্রক ভারতের বিদেশ মন্ত্রককে চিঠি দিয়ে বলেছে, ডেভিকে পাঠাতে তারা রাজি। কিন্তু তাঁকে ভারতে আটকে রাখা যাবে না। এ ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে হবে ভারতকে। ডেনমার্কের অফিসারদের উপস্থিতিতে সিবিআই তাঁকে জেরা করতে পারে। ডেভি ভারতে থাকাকালীন তাঁর জন্য বিশেষ পরিকাঠামোর বন্দোবস্ত করার কথাও বলা হয়েছে।
মানবাধিকারের প্রশ্ন ওঠার সময় রাজ্যের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল কেন্দ্র। রাজ্য জানায়, সংশোধনাগারে ডেভির উপর যাতে কোনও অমানবিক আচরণ না হয়, তা নিশ্চিত করতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। সে কথা ডেনমার্ককে জানায় কেন্দ্র। তাদের তরফে রাজ্যের অবস্থান সম্পর্কে সন্তোষপ্রকাশও করা হয়েছে। এখন ডেভির জন্য বিশেষ পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করার দাবি ওঠার পরে ফের রাজ্যের বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, সব ঠিক থাকলে ভারতে বিশেষ দল পাঠাতে পারে ডেনমার্ক। তাঁরা গোটা পরিস্থিতি, রাজ্যের প্রস্তাবের বাস্তব সম্ভাবনা যাচাই করবেন। তাঁদের রিপোর্ট সন্তোষজনক হলে ডেভির প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া আরেক ধাপ এগোবে বলে মনে করা হচ্ছে।