জগন্নাথ-দর্শনে লাইন গড়া কঠিন, জানাল ওড়িশা

জগন্নাথধামে পান্ডাদের জুলুম ঠেকাতে একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত জুন মাস থেকে তৎপর হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:২৬
Share:

তিরুপতি বা দেশের অন্য কোনও কোনও মন্দিরের মতো ভক্তদের লাইনের শৃঙ্খলা পুরীর শ্রীমন্দিরে বজায় রাখা কঠিন বলে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে জানাল ওড়িশা সরকার। বিষয়টি যাচাই করতে এই মামলার আদালতবান্ধব রঞ্জিত কুমারকে সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত।

Advertisement

জগন্নাথধামে পান্ডাদের জুলুম ঠেকাতে একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত জুন মাস থেকে তৎপর হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মন্দির চত্বরে যত্র তত্র পান্ডাদের জুলুম তথা ‘তোলাবাজি’ ঠেকাতেই দর্শন বা পুজোর জন্য তিরুপতির আদলে ভক্তদের লাইন চালুর কথা উঠেছে। কিন্তু মন্দিরের সেবায়েত থেকে শুরু করে ওড়িশা সরকারেরও বক্তব্য, জগন্নাথ মন্দিরে শুরু থেকে শেষ অবধি লাইন বজায় রেখে চলাচল অসম্ভব। মন্দিরের ভেতরের যা মানচিত্র, তাতে এমনটা হতে পারে না। মন্দিরের সরকার-নিযুক্ত ম্যানেজিং কমিটির সদস্য তথা বর্ষীয়ান সেবায়েত রামচন্দ্র দয়িতাপতি বলেন, ‘‘পুরীর মন্দিরে সবাই জগন্নাথ-দর্শনে আসেন না! কিংবা এলেও তারপরে কেউ মহালক্ষ্মীর মন্দিরে যাবেন, কেউ বা মা বিমলার কাছে। কেউ শুধু প্রসাদ নিতেই ঢোকেন। জগন্নাথ মন্দিরে আরও অনেক দেবতার মন্দির। তিরুপতির মতো লাইন এখানে টিকবে না।’’

এ বছরের শুরু থেকে ভক্তদের চলাচল কিছুটা শৃঙ্খলায় বাঁধা হলেও তাতে মন্দিরের ভিতরে ভক্তদের উপরে সেবায়েতদের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ কমার তেমন সুযোগ নেই। গত অক্টোবরে মন্দিরের ভিতরে অজস্র ব্যারিকেড বসিয়ে পদে-পদে লাইন চালু করার চেষ্টা হয়। তাতে স্থানীয় ভক্তদের ক্ষোভ বন্‌ধের আকার নেয়, ভক্ত বনাম পুলিশ সংঘাতে পুলিশকর্মীরাই আহত হয়েছিলেন। এখন মন্দিরে নয়া নিয়ম অনুযায়ী, ভক্তেরা সবাই সিংহদ্বার দিয়ে ঢুকছেন। বেরোনোর ব্যবস্থা বাকি তিনটি দ্বারের কোনও একটি দিয়ে। মন্দিরে ঢোকার পরে লাইনের অনুশাসন নেই। তা ছাড়া, সেবায়েত এবং পুরীর বাসিন্দারা পরিচয়পত্র দেখিয়ে যে কোনও দরজা দিয়েই ঢুকতে পারেন। সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে কার্যত এই ব্যবস্থা নিয়েই আপত্তি জানিয়ে আদালতবান্ধব রঞ্জিত কুমার মন্দিরের লাইন বা ভিড় নিয়ন্ত্রণে ত্রুটি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ওড়িশার তরফে জানানো হয়েছে, মন্দিরে ভক্তদের আলাদা-আলাদা গন্তব্য। এক লাইনে সমস্যা মিটবে না।

Advertisement

এর পরে বিচারপতি এ কে সিকরির বেঞ্চ বলে, ‘‘আদালতবান্ধব নিজে গিয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখুন।’’ রঞ্জিত ২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি পুরীতে যাবেন বলে জানিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানি ২৭ ফেব্রুয়ারি। ওড়িশা প্রশাসনের অবশ্য বক্তব্য, লাইনের অত কড়াকড়ি না-থাকলেও সেবায়েতদের গতিবিধি মাপতে সিসিটিভি রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন