বাংলাদেশ সীমান্তে নজর এড়িয়ে কী ভাবে সুড়ঙ্গ?

উত্তর দিনাজপুর জেলায় বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে প্রত্যন্ত গ্রামে আট-দশ ফুট লম্বা চা গাছের জঙ্গল। সেখানেই হঠাৎ আবিষ্কার হওয়া সুড়ঙ্গ নিয়ে এখন তোলপাড় পুলিশ থেকে বিএসএফ। সব মহলেই প্রশ্ন, কবে, কী ভাবে খোঁড়া হল এই সুড়ঙ্গ!

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

ফতেপুর(চোপড়া) শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৭ ০২:০৭
Share:

উত্তর দিনাজপুর জেলায় বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে প্রত্যন্ত গ্রামে আট-দশ ফুট লম্বা চা গাছের জঙ্গল। সেখানেই হঠাৎ আবিষ্কার হওয়া সুড়ঙ্গ নিয়ে এখন তোলপাড় পুলিশ থেকে বিএসএফ। সব মহলেই প্রশ্ন, কবে, কী ভাবে খোঁড়া হল এই সুড়ঙ্গ!

Advertisement

গত সোমবার সুড়ঙ্গটি খুঁজে পেয়েছে বিএসএফ। এর একটি দিক চোপড়া ব্লকের ফতেপুরের কাছে, অন্য দিকটি বাংলাদেশের পুরাতন আটওয়াড়ি গ্রামের পাশে নাগরী নদীর দিকে। সুড়ঙ্গের মধ্যে কোদাল, খুপরি ও বাংলাদেশের পোড়া সিগারেট মিলেছে।

Advertisement

এই সুড়ঙ্গ খুঁড়তে কম করে তিন মাস সময় লেগেছে, মনে করছে পুলিশ ও বিএসএফ। এত দিন ধরে কী ভাবে সকলের চোখে ধুলো দিল খননকারীরা, এই প্রশ্নে চিন্তিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও।

সাধারণ মানুষের বক্তব্য, পাকিস্তান সীমান্তে মাঝে মাঝেই এই ধরনের সুড়ঙ্গের হদিস মেলে। সলমন খানের ‘বজরঙ্গি ভাইজান’-এ রাজস্থানের এমন একটি সুড়ঙ্গের কথা বলা হয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তেও যে এমন কিছু ঘটতে পারে, তার সতর্কবার্তাও ছিল। তবু এত বড় কাণ্ড বিএসএফের চোখ এড়িয়ে যায় কী করে?

আরও পড়ুন:ছেলে কালো, কনে ছাদনাতলা থেকেই পালাল

বিএসএফের আইজি (নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার) রাজেশ মিশ্র অবশ্য বলেন, ‘‘এ পারে চা বাগান, জঙ্গল এলাকায় ঝোপে ঢাকা তিন ফুটের মতো মুখ ছিল। যা চট করে চোখে আসে না। শেষে টহলদারিতেই তো ধরা পড়ল।’’ তবে বিএসএফ সূত্রের খবর, ওই এলাকায় কর্তব্যরতদের কাছে বিশদে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর দাবি করেন, সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সঙ্গে যুক্তদের কয়েক জনকে চিহ্নিতও করা গিয়েছে।

গুপ্তপথ: ৮০ ফুট লম্বা চোপড়ার এই সেই সুড়ঙ্গ। নিজস্ব চিত্র

কেন ওই জায়গাটি বাছাই করেছে দুষ্কৃতীরা? কারণ, এলাকাটি পাকা রাস্তার পাশে। গরুগাড়িতে সীমান্তে পৌঁছনো যায়। পাশের চা বাগানটি পরিত্যক্ত। চা ঝোপ আট-দশ ফুট লম্বা হয়ে গিয়েছে। ফলে, সকলের নজর এড়িয়ে খোঁড়াখুঁড়ি করা কঠিন নয়। এক কিলোমিটারের মধ্যে বসতি। সেখান থেকে রাতবিরেতে লোক যাতায়াত করে। তাই পাহারাদারকে ফাঁকি দেওয়াও সহজ।

বিএসএফের দাবি, সুড়ঙ্গটির বয়েস বড়জোর ১৫-২০ দিন। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’জন কুয়ো-পুকুর খোঁড়ায় পারদর্শীকে জেরা করার কথা ভাবা হচ্ছে। আরও দুই ভারতীয় এবং জনা ছয় বাংলাদেশি এর সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ।

বৃহস্পতিবার সন্দেহভাজন দুষ্কৃতীদের একটি তালিকা বর্ডার গার্ডস অব বাংলাদেশ বা বিজিবিকে দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন