এ বার ছটের ব্রত পালন করবেন না রাবড়ীদেবী। আজ নিজেই এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, দুই ছেলের বৌ না আসা পর্যন্ত আর ছট ব্রত করবেন না। বিহারের অন্যতম শাসক পরিবারের কর্ত্রীর এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সব কিছু ঠিক নেই যাদব পরিবারে। তাই বাধ্য হয়ে লালু-পত্নী তথা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ীদেবীর এই সিদ্ধান্ত।
প্রতিবার ধুমধাম করে ছট পালন করেন রাবড়ী-লালুপ্রসাদ। ১০ নম্বর সার্কুলার রোডের দরজা ছটের দিন আমজনতা থেকে তাবড় নেতার জন্য খুলে দেওয়া হয়। নিজের দলের নেতা থেকে বিরোধী দলের নেতা, সকলেই হাজির হন সেখানে। নিজের হাতে সকলকে প্রসাদ দেন লালু-রাবড়ী। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিহারের যাদব-পরিবারের এই অনুষ্ঠান বিহারের রাজনৈতিক প্রথাই হয়ে গিয়েছিল। ছটের প্রস্তুতি থেকেই তা শিরোনামে উঠে আসত। সেই প্রথা আচমকা বন্ধ করা হচ্ছে কেন তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
রাবড়ীদেবী জানিয়েছেন, ‘‘মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এখন একা হাতে সব কিছু করতে কষ্ট হয়। ছেলেদের বৌ-রা এলে পুজোর কাজে সাহায্য করবে। তখন আবার শুরু করব।’’ কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, গত বারও তো একই পরিস্থিতিতে ছট ব্রতের আয়োজন করেছিলেন তিনি। বড় মেয়ে মিসা ভারতীকে সাহায্য করতে দেখা গিয়েছিল। এমনিতে লোকের অভাব নেই যাদব পরিবারে।
গত কয়েক দিন ধরেই রাজ্যের সংবাদমাধ্যমে লালুপ্রসাদের ছোট ছেলে তথা উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে তুমুল আলোচনা চলেছে। তাতে যথেষ্ট ক্ষোভ ছড়িয়েছে যাদব পরিবারের অভ্যন্তরে। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা লালুপ্রসাদের বড় ছেলে তেজপ্রতাপ যাদব প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আসলে ছোট ভাই তাঁর উপরে বসায় প্রথম থেকেই ক্ষুব্ধ বড় ছেলে তেজপ্রতাপ। কারণ পিতা তেজস্বীকেই তাঁর রাজনৈতিক উত্তরসূরী বেছে নিয়েছেন। যদিও মা রাবড়ী দেবী জ্যেষ্ঠের অধিকারকেই স্বীকার করেন।
ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, গৃহবিবাদ সামাল দিতে রীতিমতো নাস্তানাবুদ লালুপ্রসাদ। আর তাই এ বার ছটের উৎসবে দরজা বন্ধ রাখতে চাইছেন রাবড়ী। কোনও পারিবারিক অস্থিরতাকে সামনে আসতে দিতে রাজি নন তিনি। উত্তরপ্রদেশের যাদব-পরিবার থেকে শিক্ষা নিয়েই এগোতে চাইছে বিহারের যাদব কুলপতি।