‘রাফাল তো সস্তাই হল!’

এত দিন প্রধানমন্ত্রী থেকে সরকারের সব মন্ত্রী শুধু বলে গিয়েছেন, রাফালের দাম বলা যাবে না। কারণ, দেশের নিরাপত্তা জড়িয়ে আছে এতে। আর রাহুল গাঁধী সেই দামের কথা জিজ্ঞাসা করে দেশের নিরাপত্তার সঙ্গেই ছিনিমিনি খেলছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:২০
Share:

রাফালের দাম ‘শোনাল’ বিজেপি। দলীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কথা শোনাতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। সেখানেই তিনি হাল্কা চালে জানিয়ে দিলেন, এনডিএ আমলে আনুষঙ্গিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রতিটি রাফাল বিমানের দাম পড়ছে ১৬০০ কোটি টাকা। ইউপিএ আমলে ওই দাম ছিল বিমানপ্রতি ২০০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, বিমান প্রতি চারশো কোটি টাকা সস্তায় রাফাল পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু রাফালের দাম এ ভাবে দলীয় বৈঠকে জানানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস।

Advertisement

এত দিন প্রধানমন্ত্রী থেকে সরকারের সব মন্ত্রী শুধু বলে গিয়েছেন, রাফালের দাম বলা যাবে না। কারণ, দেশের নিরাপত্তা জড়িয়ে আছে এতে। আর রাহুল গাঁধী সেই দামের কথা জিজ্ঞাসা করে দেশের নিরাপত্তার সঙ্গেই ছিনিমিনি খেলছেন।

তা হলে এখন কোথায় কী ভাবে দাম এল? গত কালও খোদ প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল রাফাল নিয়ে। তিনি তো প্রশ্ন শুনেই উধাও হলেন! গত দু’দিন ধরে বিজেপির সব মন্ত্রী তো দলের কর্মসমিতির বৈঠকেই ব্যস্ত। তা হলে আগের অবস্থান বদলে সরকার কোথায় তা ঘোষণা করল?

Advertisement

খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, বিজেপিরই তথ্য-প্রযুক্তি মোর্চার প্রধান অমিত মালব্য একটি টুইট করেছেন এক বৈদ্যুতিন মাধ্যমের খবর প্রকাশ করে। সেখানে জানিয়েছেন, ইউপিএ আমলে প্রতিটি রাফাল বিমানের দাম ছিল ৭৩৭ কোটি টাকা। আর এনডিএ আমলে বিমান প্রতি পড়ছে ৬৭০ কোটি টাকা। আনুষঙ্গিক অস্ত্রশস্ত্র মিলিয়ে ইউপিএ আমলে প্রতি রাফালের দাম ছিল ২০০০ কোটি টাকা। এনডিএ আমলে সেটি ১৬০০ কোটি টাকা। এখানেও প্রতি বিমানে সঞ্চয় ৪০০ কোটি টাকা।

এ দাবি করেও ক্ষান্ত হননি অমিত মালব্য। জানিয়েছেন, মূল বিমানে এনডিএ জমানার দাম ইউপিএ জমানার থেকে ৯%, আর আনুষঙ্গিক মিলিয়ে ২০% কম (ঠিক এই পরিসংখ্যান অরুণ জেটলিও দিয়েছিলেন)। এই ২০% বাড়তি অর্থ কংগ্রেস দিতে চেয়েছিল কেন? যাতে ঘুষ হিসেবে সে টাকা ফেরত আসে?

কিন্তু এ ভাবে রাফালের দাম ‘শোনানো’য় নতুন ভাবে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কংগ্রেসের প্রশ্ন, রাফালের যে দাম নিয়ে এত গোপনীয়তা তা কেন দলীয় বৈঠকে এমন হালকা চালে ঘোষণা করা হল? কেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তা জানালেন না? তবে কি গণমাধ্যমে খবর ফাঁস করিয়ে সেটিকে সরকারি অবস্থান হিসেবে প্রচার করাই নরেন্দ্র মোদী সরকারের কার্যশৈলী? কংগ্রেসের এক মুখপাত্রের বক্তব্য, ‘‘যদি রাফাল নিয়ে সরকারের কিছু লুকোনোর না থাকে তবে যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ে তদন্ত করা হচ্ছে না কেন?’’

আগামিকালই দিল্লিতে প্রশান্ত ভূষণ, যশবন্ত সিন্‌হারা সাংবাদিক বৈঠক করবেন। অতীতেও তাঁরা অভিযোগ করেছেন, রাফালে অনিল অম্বানীর সংস্থা ‘কমিশন’ পেয়েছে। এখন বায়ুসেনার অফিসারদের রাফাল প্রশস্তির জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন