গাফিলতি ঢাকার চেষ্টা করছে ছত্তীসগঢ় সরকার, অভিযোগ করলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। বন্ধ্যাকরণ-কাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করতে শনিবার ছত্তীসগঢ়ে যান তিনি। সেখানেই দাবি করেন, এই বন্ধ্যাকরণ-কাণ্ড ছত্তীসগঢ়ের বিজেপি সরকারের দুর্নীতির ছবিটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে। না হলে সরকারি শিবিরে ইঁদুর মারার জন্য ব্যবহৃত রাসায়নিক দিয়ে তৈরি নিম্নমানের ওষুধ সরবরাহের অভিযোগ ওঠে কী ভাবে? তা-ই নয়, তদন্ত ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাও করছে রমন সিংহের প্রশাসন।
দিন দুয়েক আগে নিম্নমানের ওষুধ তৈরির অভিযোগে একটি ওষুধ নির্মাতা সংস্থার প্রধান ও তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করেছিলেন খাদ্য ও ওষুধ প্রক্রিয়াকরণ দফতরের (এফডিএ) কর্মীরা। সেই সংস্থার ইউনিটে অভিযান চালাতে গিয়ে এফডিএ-র কর্মীরা খুঁজে পান, বেশ কিছু ওষুধ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। তাঁদের অনুমান, গাফিলতির প্রমাণ লোপাট করতেই এই কাজ। রাহুল আজ সেই তথ্যকে ব্যবহার করে বলেন, “বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার।” এ দিন বিলাসপুরের লাগোয়া আমসেনা গ্রামে যান তিনি। সেখানে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। রাহুলকে সামনে পেয়ে গোটা গ্রামই প্রায় হাজির হয়ে যায়। তবে এ সব দিয়ে যে বিশেষ কিছু হবে না, তা বিলক্ষণ জানেন ফুলবাই-এর স্বামী রূপচাঁদ। বন্ধ্যাকরণের অস্ত্রোপচারের পরই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ফুলবাই। সোমবার মৃত্যু হয় তাঁর। রূপচাঁদের বয়ানে, “রাহুল এলেন। কিন্তু কী হবে? স্ত্রীকে তো ফেরত পাব না। আমার চারটে বাচ্চাও রয়েছে।” সরকারি ক্ষতিপূরণ যে তাঁর এই ক্ষতে মলম লাগাতে পারবে না, সে কথাও জানিয়ে দিয়েছেন রূপচাঁদ। আপাতত শুধু বিচারের আশায় বুক বাঁধছেন রূপচাঁদরা।
কিন্তু তারই বা নিশ্চয়তা কোথায়?
ঘটনার এতগুলো দিন কাটার পরও ডাক্তাররা নিশ্চিত নন, মহিলাদের মৃত্যুর কারণ সংক্রমণ নাকি বিষক্রিয়া। কাল এফডিএ-র কর্মীরা জানিয়েছিলেন, সম্ভবত ইঁদুর মারার জন্য যে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে, সেটিই ব্যবহার করা হয়েছিল অ্যান্টিবায়োটিকে। যাঁরা মারা গিয়েছেন বা যাঁরা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের উপসর্গ দেখেই চিকিৎসকদের ধারণা, সংক্রমণ নয়, বিষক্রিয়াই মৃত্যুর কারণ। এবং ইঁদুর মারার বিষেই এমন উপসর্গ দেখা দেয়। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার আগে সে কথাও জোর দিয়ে বলতে পারছেন না তাঁরা। অতএব তদন্তের কাজ ঠিক কতটা এগোচ্ছে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছেই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির মধ্যে।