চড়া সুরে: রাফাল বিক্ষোভে রাহুলেরা। বুধবার সংসদ চত্বরে। পিটিআই
সংসদীয় দলের বৈঠকে রাফাল নিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা। তার পরে সংসদে গাঁধী মূর্তির সামনে রাফাল দুর্নীতির বিরুদ্ধে ধর্না। হাতে রঙিন কাগজে তৈরি ‘রাফাল’ বিমান। এক ডানায় মোদী, আর এক ডানায় অনিল অম্বানীর ছবি। পরে লোকসভায় রাফালে জেপিসি তদন্তের দাবিতে হাঙ্গামা। শেষে বিকেলে কংগ্রেসের সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন।
সিএজি রিপোর্টকে ঢাল করে বিজেপি তথা মোদী সরকার যে দিন রাহুল গাঁধীর আক্রমণ ভোঁতা করে দেওয়ার পরিকল্পনায় ছিল, সে দিন রাহুল দিনভর রাফাল নিয়েই নিশানা করলেন মোদী সরকারকে।
সিএজি রিপোর্টের পাল্টা হিসেবে রাহুল অস্ত্র করলেন রাফাল চুক্তির নতুন ফাঁস হওয়া তথ্য। তা হল— রাফাল কেনার সময় যাঁরা ফ্রান্সের সঙ্গে দর কষাকষি করেছিলেন, সেই সব বিশেষজ্ঞই মোদীর রাফাল চুক্তি নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন।
আরও পড়ুন: তুমুল হর্ষধ্বনি, বলিউডি গানের প্যারোডি, মমতা সমাবেশে পৌঁছতেই উৎসবের মেজাজ কেজরীবালের মঞ্চে
ইউপিএ-সরকারের ১২৬টি যুদ্ধবিমান কেনার প্রস্তাব বাতিল করে দিয়ে মাত্র ৩৬টি রাফাল কেনার পিছনে মোদী সরকারের দাবি ছিল, অনেক সস্তায় তাড়াতাড়ি বিমান মিলবে। কিন্তু ফ্রান্সের সঙ্গে দর কষাকষির জন্য তৈরি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দলের তিন বিশেষজ্ঞই সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছিলেন। আপত্তি জানিয়ে তাঁরা নোটও পাঠান সরকারকে। তাঁদের প্রধান যুক্তি ছিল, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রতিনিধি দল দর কষাকষি করে ন্যূনতম দাম ঠিক করেছিলেন ৫০৬ কোটি ইউরো। কিন্তু চূড়ান্ত দাম ঠিক হয় ৭৮৭ কোটি ইউরো, যা ৫৫ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন: বেজায় অসন্তুষ্ট মমতা, যন্তরমন্তরের মঞ্চ থেকে কঠিন বার্তা কংগ্রেসকে
আজ সরকার দাবি তুলেছে, সিএজি-র রিপোর্টেই স্পষ্ট যে রাফাল চুক্তিতে দুর্নীতি হয়নি। কিন্তু সিএজি রিপোর্টকে ‘কভার-আপ’ আখ্যা দিয়ে রাহুলের প্রশ্ন, বিশেষজ্ঞদের সেই আপত্তি জানানো নোট সিএজি-র রিপোর্টে কোথায়? রাহুল বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, সস্তায় অনেক তাড়াতাড়ি যুদ্ধবিমান হাতে মিলবে। কিন্তু এই নোট তো প্রধানমন্ত্রীর সেই যুক্তি খণ্ডন করছে। বিশেষজ্ঞরা তাঁদের ভাষায় রাফাল-চুক্তিকে ডাকাতি বলেছেন!’’ সিএজি-র রিপোর্ট পেশের পর সাংবাদিক সম্মেলন করে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘রাফাল চুক্তিতে আসলে প্রধানমন্ত্রী বায়ুসেনার থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ছিনিয়ে অনিল অম্বানীকে দিয়ে দিয়েছেন।’’
এই তথ্য সুপ্রিম কোর্টকে কেন দেওয়া হয়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল গাঁধী। তাঁর যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টের কাছে সরকার এই তথ্য দিলে, আদালত হয়তো অন্য রায় দিত।