নতুন টিমের আদলটাই ভাল করে গড়ে ওঠেনি। এর মধ্যেই নতুন সদস্যদের কানে যুদ্ধজয়ের মন্ত্র দিলেন রাহুল গাঁধী। স্পষ্ট জানালেন, কাজ করে দেখাতে না পারলে খোয়াতে হবে পদ।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই সনিয়া গাঁধী ও রাহুল সংগঠনের ‘সার্জারি’র কাজটি শুরু করে দিয়েছেন। লোকসভার বিপর্যয় ও উত্তরপ্রদেশে হারের পরে যেটি অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছিল। দিগ্বিজয় সিংহ, গুরুদাস কামাতদের মতো তাবড় নেতাদের সরিয়ে দিয়ে আনা হচ্ছে এক ঝাঁক নবীন মুখ। ভবিষ্যতে যাঁরা হবেন টিম-রাহুলের কাণ্ডারি। এই নতুন সদস্যদের নিজের বাড়িতে ডেকে সম্প্রতি ক্লাস নিয়েছেন রাহুল। সেখানেই খানিকটা কর্পোরেট ধাঁচে রাহুল স্পষ্ট করে দেন, পদ দেওয়ার সঙ্গে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে সুনির্দিষ্ট দায়িত্বও। সেই দায়িত্ব পালন করতে না পারলে কোনও পদই চিরস্থায়ী নয়। এরই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর মোকাবিলায় কংগ্রেসের মন্ত্র কী হবে, তা-ও জানান নবীনদের।
আরও পড়ুন:কেজরীকে লাই ডিটেক্টরে বসার চ্যালেঞ্জ কপিলের
কী সেই মন্ত্র? দলীয় সূত্র বলছে ৫টি মন্ত্র দিয়েছেন রাহুল। তা হলো:
• বিজেপি এবং আরএসএস আলাদা কিছু নয়। আরএসএস তৃণমূল স্তরে সংগঠন ছড়িয়ে দিয়ে আসলে বিজেপিকেই সাহায্য করে। সময়ে সময়ে আরএসএসের লোকেরাই যোগ দেন বিজেপিতে। কংগ্রেসকে একযোগে মোকাবিলা করতে হবে আরএসএস-বিজেপিকে।
• কোনও রাজ্যের দায়িত্ব পেলে, সেখানে মাসে অন্তত ১৫-২০ দিন সময় দিতে হবে। রাজ্যের উঁচু থেকে নিচু তলা পর্যন্ত সব দলীয় কর্মীর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে হবে। দলের কর্মী-নেতারা যেন সহজে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এমন অভিযোগ না ওঠে যে, দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের টিকিই পাওয়া যায় না।
• বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে জেলার নেতাদের। তাঁদের কথা শুনতে হবে। শুধু তাই নয়, তাঁদের অভাব-অভিযোগ শুনে সে সবের সমাধান করতে হবে। প্রয়োজনে অস্ত্রোপচার করতে হবে রাজ্য সংগঠনেও। জেলার উৎসাহী, কর্মঠ নেতাদের ধাপে ধাপে তুলে আনতে হবে রাজ্য স্তরে।
• দিল্লি থেকে খবরদারি করা হবে না। পুরোটাই বিকেন্দ্রীকরণের নীতি মেনে চলবে। এমনকী, কোনও রাজ্যে দলের সভাপতিও যদি বদল করতে হয়, তা হলে দলের সকলের মত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন এই সেনাপতিরাই। তাঁদের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর বসাবে হাইকম্যান্ড।
• এরই সঙ্গে রাহুলের হুঁশিয়ারি, নতুন যাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, কাজ করে দেখাতে হবে তাঁদের। না পারলে পদটিকে চিরস্থায়ী মনে করার কোনও কারণ নেই। ভোটে হার-জিত থাকবে। কিন্তু সংগঠনকে দাঁড় করানোই প্রধান চ্যালেঞ্জ। কংগ্রেস থেকে যাঁরা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছেন, ফেরাতে হবে তাঁদের।