লুঠ রুখে রাহুলের সওয়াল,‘চুরি নয়’

কৃষক খাটিয়া নিলে ‘চোর’, বিজয় মাল্য কোটি কোটি টাকা নিয়ে পালালে হন ‘বাকিদার’! খাটিয়া-লুঠের ধাক্কা সামলাতে গত কাল নাম করেই এমন যুক্তিই তুলে ধরেছিলেন কংগ্রেসের মুখপাত্র। আজ সরাসরি বিজয় মাল্যর নাম করেই ঘুরে দাঁড়াতে চাইলেন রাহুল গাঁধী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৫৪
Share:

সন্ত কবীর নগরে খলীদাবাদের ময়দানে খাট-সভা। বুধবার টুইটারে এ ছবি দিয়েছেন রাহুল গাঁধী নিজেই।

কৃষক খাটিয়া নিলে ‘চোর’, বিজয় মাল্য কোটি কোটি টাকা নিয়ে পালালে হন ‘বাকিদার’! খাটিয়া-লুঠের ধাক্কা সামলাতে গত কাল নাম করেই এমন যুক্তিই তুলে ধরেছিলেন কংগ্রেসের মুখপাত্র। আজ সরাসরি বিজয় মাল্যর নাম করেই ঘুরে দাঁড়াতে চাইলেন রাহুল গাঁধী।

Advertisement

প্রায় এক মাসের ‘মহাযাত্রা’র দ্বিতীয় দিনে আজও হয়েছে ‘খাট-সভা’। আজ যাতে কোনও মতেই খাটিয়া লুঠের ঘটনা লুট করতে না পারে রাহুলের সভা, তার জন্য ছিল ত্রিমুখী সতর্কতা। সভার আগে থেকেই সকলকে পইপই করে বলে দেওয়া হয়েছিল, সভা শেষে কেউ যেন খাটিয়া তুলে নিয়ে না পালান। গত কালের মতো খোলা মাঠে নয়, আজ সভা হয়েছে চার দিকে পর্দা ঘেরা মাঠে। নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল ঢোকা ও বেরনোর পথ।
খাটিয়া লুঠ ঠেকাতে রাখা হয়েছিল বেশ কিছু পাহারাদারও।

প্রথম দিনেই যে ভাবে খাটিয়া লুঠ হয়েছে, সেটাকে অনেকে শুভ লক্ষণ নয় বলে দেখাতে চাইলেও কংগ্রেস তা মানতে নারাজ। তবু এমন ঘটনায় যে রাহুলের সফরের আসল লক্ষ্যই হারিয়ে যাচ্ছে, সেটা বেশ বুঝতে পারছে তারা। যে কারণে গত কালের ওই ঘটনার পরেই রাহুল স্পষ্ট নির্দেশ দেন, প্রতিটি খাট-সভার আগে স্থানীয় মানুষদের পাখি পড়ানোর মতো করে বলে দিতে হবে, যাতে এমন ঘটনা ফের না ঘটে। তিনি যা বলছেন, সেটিই প্রচারের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে হবে। তার পরেই আজ আটঘাট বেঁধে
খাট-সভা করতে নেমেছিল কংগ্রেস।

Advertisement

কাজও হয়েছে তাতে। তবে গত কালের খাটিয়া-লুঠ নিয়ে বিজেপির বিদ্রুপ বন্ধ হয়নি। কংগ্রেস এখন তাই গোটা ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দিতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের দিকে। কাল ও আজ— দু’দিনই কংগ্রেস সহসভাপতির মূল নিশানা ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এক ধাপ এগিয়ে আজ টেনে এনেছেন বিজয় মাল্যর প্রসঙ্গও। বোঝাতে চেয়েছেন, গরিব কৃষকদের উপেক্ষা করছেন প্রধানমন্ত্রী। যাবতীয় ছাড় শুধু বড় বড় শিল্পপতিদেরই। একই অভিযোগ করেছেন টুইট করেও। ঘটা করে আজকের খাট-সভার
ছবি পোস্টও করেছেন টুইটারে।

রাহুল এ দিন তাঁর যাত্রার পথে কৃষকের ঘরে ও বিভিন্ন হাসপাতালে যান। খোঁজখবর নেন কৃষকদের সমস্যার। তার পরেই প্রধানমন্ত্রীকে তোপ দেগে বলতে থাকেন, ইউপিএ আমলে কৃষকদের ৭০ হাজার কোটি টাকার ঋণ মাফ করা হয়েছিল। মোদীও সেটি করতে পারেন। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে তিনি কৃষকদের সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলেও ক্ষমতায় আসার পর কৃষকদের তিনি ভুলে গিয়েছেন। স্যুট-বুটের সরকার চালাচ্ছেন তিনি। ছাড় দিচ্ছেন শুধু বড় শিল্পপতিদের।

বিজেপি নেতারা বুঝতে পারছেন, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস দুর্বল হলেও রাহুল ধীরে ধীরে আক্রমণাত্মক হচ্ছেন। এ বার তাঁকে গুরুত্ব না দিয়ে উপায় নেই। তবে রাহুল যে কৃষকদের ঋণ-মাফের টোপ দিচ্ছেন, তাতে আখেরে আম কৃষকেরই ক্ষতি হবে বলে মনে করছে বিজেপি নেতারা। তাঁদের বক্তব্য কৃষিঋণ মাফ রাহুলের পক্ষ থেকে ভাল রাজনীতি হতে পারে, কিন্তু এটা কোনও ভাবে ভাল অর্থনীতি নয়। মোদী সরকারের লক্ষ্য কৃষকদের সাবলম্বী করা। তাঁরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ঋণ নেবেন এবং তা পরিশোধ করবেন, সেটিই ভাল অর্থনীতি। রাহুল দিচ্ছেন উল্টো পথের হাতছানি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন