রাহুল গাঁধী।
ইট ছুড়েছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। পাটকেল ধেয়ে এল আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের দিকে।
মোদী সরকার বিচারবিভাগে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছে বলে সুপ্রিম কোর্টের শীর্ষ স্তরে ক্ষোভ ছিলই। এ বার রাহুল গাঁধী অভিযোগ তুললেন, মোদী জমানায় শূন্য পদ ও পাহাড়প্রমাণ মামলার চাপে বিচারব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। অথচ আইনমন্ত্রী মিথ্যে খবর ছড়াতে ব্যস্ত।
রবিশঙ্কর প্রসাদকে এ ভাবে নিশানা করার কারণ, তিন দিন আগেই তিনি অভিযোগ তুলেছিলেন, ভোটের প্রচারে কংগ্রেস কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা-র থেকে সাহায্য নিয়েছিল। সে কথা অস্বীকার করে কংগ্রেস পাল্টা দাবি তোলে, বিজেপিই ২০১৪-র লোকসভা ভোটে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা-র ভারতীয় শাখার সাহায্য নিয়েছিল।
কেমব্রিজ-বিতর্ক তথ্যপ্রযুক্তির বিষয়। রবিশঙ্কর তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীর পাশাপাশি আইনমন্ত্রীও। রাহুল আজ আইনমন্ত্রী রবিশঙ্করের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টে ৫৫ হাজারের বেশি মামলা জমে রয়েছে। ৩০ শতাংশ মামলা পাঁচ বছরের বেশি পুরনো। হাইকোর্টে ৩৭ লক্ষের বেশি মামলা জমেছে। নিম্ন আদালতে জমে থাকা মামলার সংখ্যা আড়াই কোটির বেশি। তা সত্ত্বেও হাইকোর্টের ৪০০ বিচারপতি, নিম্ন আদালতের ৬ হাজার বিচারক পদে নিয়োগ হয়নি। নোট বাতিলের সঙ্গে তুলনা করে একে ‘জুডিশিয়ারি ডিমনিটাইজ্ড’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন রাহুল।
রাহুলের দাবি, অপছন্দের লোককে সরকার বিচারপতিও হতে দিচ্ছে না। তাঁর বক্তব্য, ১০০-র বেশি বিচারপতির নাম সুপারিশ করা হলেও আইন মন্ত্রক তা আটকে রেখেছে। উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি কে এম জোসেফ উত্তরাখণ্ডে রাষ্ট্রপতি শাসন খারিজ করে দিয়েছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রীর অহং-এ আঘাত লেগেছে। সেই কারণে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে তাঁর নিয়োগ আটকে রয়েছে বলে রাহুলের অভিযোগ।
ঘটনা হল, মোদী সরকার বিচারবিভাগের উপর প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছেন এবং প্রধান বিচারপতি সেই চাপের সামনে মাথা নোয়াচ্ছেন বলে কিছু দিন আগেই প্রবীণ বিচারপতিদের একাংশও কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। বর্তমান প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র অক্টোবরে অবসর নেবেন। তাঁর বদলে মোদী সরকার নিজের পছন্দের কাউকে বসাবে কি না, তা নিয়ে শুক্রবারই ইন্দিরা জয়সিংহ, বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যর মতো প্রবীণ আইনজীবীরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।