কেরলে ধীবরদের কুর্নিশ রাহুলের

ব্রিটেন থেকে ফিরে সোজা বন্যাবিধ্বস্ত কেরলে হাজির হলেন রাহুল গাঁধী। বন্যাত্রাণে ধীবরদের ভূমিকাকে  কুর্নিশ করে জানিয়ে দিলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে আলাদা মৎস্য মন্ত্রক তৈরি হবে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

আলাপুঝা শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ০৫:৩১
Share:

পরিদর্শন: কেরলের চেঙ্গান্নুরে একটি ত্রাণশিবিরে কথা বলছেন রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।

ব্রিটেন থেকে ফিরে সোজা বন্যাবিধ্বস্ত কেরলে হাজির হলেন রাহুল গাঁধী। বন্যাত্রাণে ধীবরদের ভূমিকাকে কুর্নিশ করে জানিয়ে দিলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে আলাদা মৎস্য মন্ত্রক তৈরি হবে।

Advertisement

কেরলের সাম্প্রতিক বন্যার সময়ে উদ্ধার ও ত্রাণকার্যে ধীবরদের ভূমিকা নিয়ে চর্চা হয়েছে প্রচুর। এক দিকে নিজেদের প্রাণের ঝুঁকিকে উপেক্ষা করে অন্যকে রক্ষার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তাঁরা। অন্য দিকে নিজেদের ভাতার সামান্য টাকাও দিয়েছেন বন্যাত্রাণ তহবিলে। আজ আলাপুঝায় ধীবরদের সেই ভূমিকাকে সম্মান জানাতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল কংগ্রেস। সেখানে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘৩ হাজার ধীবর ৭০ হাজার মানুষের প্রাণরক্ষা করেছেন। যখনই প্রয়োজন হয়েছে তখনই কেরলের পাশে দাঁড়িয়েছেন। রাজ্যের প্রতি আপনাদের এই দায়বদ্ধতাকে কুর্নিশ জানাই।’’ তাঁর মতে, উপকূলরক্ষী বাহিনীর উচিত ভবিষ্যতে ত্রাণকার্যে ধীবরদের সাহায্য নেওয়া। রাহুলের দাবি, কৃষকদের মতোই দেশগঠনে ধীবরদের বিশেষ ভূমিকা আছে। কিন্তু কৃষকদের মতোই তাঁরা সমস্যায় ভুগছেন। রাহুলের প্রতিশ্রুতি, ‘‘কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে আপনাদের সমস্যা সমাধানে আলাদা মৎস্য মন্ত্রক তৈরি হবে। আমি ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিতে চাই না। কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে এই মন্ত্রক তৈরির বিষয়ে কথা দিয়ে গেলাম।’’ ‘ঈশ্বরের নিজের দেশ’ হিসেবে পরিচিত কেরল। রাহুলের মতে, ধীবরেরা ‘ঈশ্বরের নিজের বাহিনী’।

ব্রিটেন সফর সেরে আজ সোজা তিরুঅনন্তপুরমে আসেন রাহুল। তার পরে বন্যাবিধ্বস্ত জেলাগুলি পরিদর্শনে যান। চেঙ্গান্নুর ও আলাপুঝায় ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে এর্নাকুলাম, ওয়েনাড় ও কোঝিকোড়ে যাওয়ার কথা তাঁর। পরে এক টুইটে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কেরলের বন্যায় ভারতের দু’টি চিত্র উঠে এসেছে। একটি যন্ত্রণার সময়ে সব প্রাণীর প্রতি সহমর্মিতার। অন্যটি যন্ত্রণার সময়েও ঘৃণা ও অসহিষ্ণুতার।’’ আজ চেঙ্গান্নুর হেলিপ্যাডে যখন নিজের উড়ান ধরতে আসেন রাহুল তখন সেখানে অপেক্ষায় ছিল একটি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স। বিষয়টি জেনে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের দিকে এগিয়ে যান রাহুল। রোগীর খোঁজ নেন। পরে নিজের হেলিকপ্টারে ফিরে এসে অপেক্ষা শুরু করেন। এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স ওড়ার পরে যাওয়ার ছাড়পত্র পায় তাঁর হেলিকপ্টার। অনেকের মতে, ভিআইপি-র চেয়ে যে রোগীর গুরুত্ব বেশি তা বুঝিয়ে নজির তৈরি করলেন রাহুল।

Advertisement

কেরলের যে লড়াকু মানসিকতার প্রশংসা করেছেন রাহুল, তারই পরিচয় ফের মিলেছে কুট্টানাড় এলাকায়। কেরলের ‘অন্নভাণ্ডার’ হিসেবে এই এলাকা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে নিচু। ফলে কুট্টানাড়ের অনেক অংশই এখনও জলের নীচে। ধ্বংসস্তূপ আর কাদা সরাতে স্বেচ্ছাসেবক সং‌গ্রহের অভিযান শুরু করেন রাজ্যের মন্ত্রী টমাস আইজ্যাক ও জি সুধাকরণ। সাড়া দিয়েছেন প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। প্রায় ১ লক্ষ বাড়ি সাফ করার দায়িত্ব নিয়েছে এই স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী থেকে সাপুড়ে, স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীতে রয়েছেন সব পেশার মানুষই। অন্য বন্যাবিধ্বস্ত এলাকাতেও পুরোদমে চলছে সাফাই অভিযান। আগামিকাল কাজ শুরু হবে কোচি বিমানবন্দরে। ওনাম-এর ছুটির পরে কাল রাজ্যের স্কুল খোলার কথা। তাই ক্যাম্পাস সাফাইয়ের কাজকেও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে প্রশাসন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন