মোদীকে ঘুষের ভিডিয়ো নিয়ে তির রাহুলের

রাহুল গাঁধী টুইট করেন, ‘‘এ ভাবেই নরেন্দ্র মোদী ও ইয়েদুরাপ্পা কর্নাটক লুঠের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সৌভাগ্য, কর্নাটকের জনতা এটি হতে দেবেন না।’’ রাহুলের নির্দেশে আজ দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কাছেও যায় কংগ্রেসের এক প্রতিনিধিদল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৮ ০৩:১৭
Share:

রাহুল গাঁধী।

কর্নাটকে ভোটের একদিন আগে ঘুষ-ভিডিয়ো নিয়ে তুলকালাম দিল্লি থেকে বেঙ্গালুরু। আর তা নিয়েই এ বার দুর্নীতি প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী।

Advertisement

বৃহস্পতিবার কর্নাটক বিধানসভা ভোটের প্রচার শেষ হওয়ার পরে একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে একটি স্থানীয় চ্যানেলের মাধ্যমে। পরে প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে দলের কার্যকরী সভাপতি দীনেশ গুণ্ডু রাও এবং রাজ্যের মন্ত্রী রামলিঙ্গ রেড্ডি ওই ভিডিয়ো প্রকাশ করেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, ওই ভিডিয়োয় সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি কে জি বালকৃষ্ণণের জামাই শ্রীরঞ্জনের সঙ্গে খনি কেলেঙ্কারিতে মূল অভিযুক্ত রেড্ডি ভাইদের ঘনিষ্ঠ বিজেপি প্রার্থী শ্রীরামুলু এবং আরও কয়েক জনের কথোপকথন রয়েছে। সেই কথোপকথনে ১০০ কোটি টাকার বেশি ঘুষ দিয়ে একটি মামলার রায়কে প্রভাবিত করার কথাও বলা হয়েছে বলে অভিযোগ। রাহুল গাঁধী টুইট করেন, ‘‘এ ভাবেই নরেন্দ্র মোদী ও ইয়েদুরাপ্পা কর্নাটক লুঠের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সৌভাগ্য, কর্নাটকের জনতা এটি হতে দেবেন না।’’ রাহুলের নির্দেশে আজ দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কাছেও যায় কংগ্রেসের এক প্রতিনিধিদল।

কমিশনের কাছে কংগ্রেস দাবি করে, অবিলম্বে শ্রীরামুলুর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তাঁকে গ্রেফতার করতে হবে এবং তাঁকে ‘অযোগ্য’ ঘোষণা করে তাঁর ভোটে লড়া বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গেই রাজ্য নির্বাচন কমিশন ওই ভিডিয়ো না দেখানোর যে নির্দেশ দিয়েছে, তা প্রত্যাহার করতে হবে। বিতর্কের মুখে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ গত কালই দাবি করেন, ‘‘এমন অনেক ভুয়ো ভিডিও আসবে। সেগুলিকে অন্ধ ভাবে মেনে নেওয়ার কোনও কারণ নেই।’’

Advertisement

অমিত শাহ যা-ই বলুন, কর্নাটকের মহাগুরুত্বপূর্ণ ভোটের ঠিক মুখে এমন ভিডিয়োকে হাতিয়ার করে বিজেপিকে বিপাকে ফেলার সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ রাহুল গাঁধী। এবং তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য ভোটে বিজেপির প্রধান সেনাপতি নরেন্দ্র মোদী-ই। আজ মোদীকে ফের নিশানা করে রাহুল বলেন, ‘‘এ ভাবেই প্রধানমন্ত্রী কর্নাটকে নিজের স্বপ্নের টিম তৈরি করছেন! সদ্য জেল থেকে বেরনো নেতাদের ‘মোদী-ময়’ করে রেড্ডিদের দিয়ে লুঠ করাতে চাইছেন!’’ ঘরোয়া মহলে বিজেপি নেতারা ভিডিয়োটিকে খুব বেশি আমল না দিয়ে পাল্টা বলছেন, ওটি জাল না হলেও অন্তত আট বছরের পুরনো। কারণ, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বালকৃষ্ণণ অবসর নিয়েছেন ২০১০ সালে। কংগ্রেসের পাল্টা বক্তব্য, ভিডিয়ো পুরনো হতেই পারে। ঘটনা হল, যে দুর্নীতি মামলাটি নিয়ে ভিডিয়োয় আলোচনা হয়েছে, অবসরের ঠিক আগের দিন তার রায় দিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বালকৃষ্ণণ। এবং রায় অভিযুক্তদের পক্ষেই গিয়েছিল। সেটি এই ঘুষেরই পরিণতি বলে দাবি কংগ্রেসের। তাদের অভিযোগ, বিষয়টি সময়ের নয়, আসল বিষয় মোদী ও তাঁর দলের কর্মপদ্ধতি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, অভিযোগ সত্যি হলে সুপ্রিম কোর্টের মতো প্রতিষ্ঠানও যে দুর্নীতির আওতার বাইরে নয়, সেটি আরও একবার আলোচনায় উঠে এল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন