বিদেশে রাহুলকে ঠেকাতে তৎপর বিজেপি

ভারতে সংখ্যালঘুরা চাকরি না পেলে আইএস-এ যোগ দেবেন, এ কথা বলে দেশের সব সংখ্যালঘুদের দিকে প্রশ্নচিহ্ন তুলেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভির দাবি, ভারত যখন আইএস-এর ভাবনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে, রাহুল তখন এই শক্তিকে প্রশ্রয় দিতে চাইছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৮ ০২:২০
Share:

প্রচার: হামবুর্গের পরে বার্লিন। বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়ান ওভারসিজ় কংগ্রেসের সভায় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। রয়েছেন স্যাম পিত্রোদা-ও। পিটিআই

বহু বছর ধরে বিদেশের মাটিতে একচ্ছত্র আধিপত্য নরেন্দ্র মোদীর। গত এক বছরে সেখানেও থাবা বসাতে শুরু করেছেন রাহুল গাঁধী। প্রধানমন্ত্রী যেমন বিদেশের মাটিতে কংগ্রেসের তুলোধোনা করতেন, কংগ্রেস সভাপতিও আর রাখঢাক না করে তেড়েফুঁড়ে মোদী-বিরোধিতায় নেমেছেন। আর বিদেশের মাটিতে মোদীকে রাহুলের এই ধারালো আক্রমণে নাজেহাল বিজেপি। তাই বেকারত্বের সঙ্গে গণপিটুনি, আইএস-যোগ নিয়ে রাহুলের মন্তব্যের মোকাবিলা করতে আসরে নামল মোদীর দল।

Advertisement

গত কাল জার্মানির হামবুর্গের বক্তৃতার পরে আজ বার্লিনেও বক্তব্য রাখেন রাহুল। তার আগেই রাহুলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। কংগ্রেসের টুইট করা রাহুলের ছবি নিয়েও কটাক্ষ করেছে তারা। আর গুজরাতে দাঁড়িয়ে মোদীর দাবি, উন্নয়ন সুফল থেকে কাউকেই বঞ্চিত করছেন না তিনি।

কালই রাহুল অভিযোগ করেছেন, বেকার-সমস্যাকে মোদী গুরুত্বই দিচ্ছেন না। কিছু অভিজাত ছাড়া উন্নয়নের সুফল থেকে দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘু, গরিবেরা বঞ্চিত। গণপিটুনির জন্য বেকারদের রোষকেই দায়ী করেছেন তিনি। রাহুল বলেন, ‘‘একবিংশ শতাব্দীতে যদি সকলকে যথাযথ জীবন-দৃষ্টি (ভিশন) দেওয়া না-যায়, তা হলে অন্য কেউ দেবে। সেটাই আসল বিপদ। ২০০৩ সালে আমেরিকা ইরাক আক্রমণের পরে আইন এনে এক বিশেষ গোষ্ঠীকে সরকারি ও সামরিক চাকরি থেকে বঞ্চিত করেছিল। তার পরেই জঙ্গিপনা বাড়ে। ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস তৈরি হয়।’’

Advertisement

জবাব দিতে এই কথা লুফে নিয়েছে বিজেপি। সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, ৩৩টি দেশের প্রতিনিধিকে নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে রাহুল সন্ত্রাসবাদকে ঠিক বলছেন! ভারতে সংখ্যালঘুরা চাকরি না পেলে আইএস-এ যোগ দেবেন, এ কথা বলে দেশের সব সংখ্যালঘুদের দিকে প্রশ্নচিহ্ন তুলেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভির দাবি, ভারত যখন আইএস-এর ভাবনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে, রাহুল তখন এই শক্তিকে প্রশ্রয় দিতে চাইছেন।

রাহুলের মন্তব্য নিয়ে চর্চায় কংগ্রেস অখুশি না-হলেও বিজেপির আক্রমণ কিছুটা বিড়ম্বনায় ফেলেছে তাদের। দলের নেতা আর পি এন সিংহ বলেন, ‘‘গাঁধী পরিবার যেখানে নিজেরাই সন্ত্রাসবাদের শিকার, সেখানে রাহুল সন্ত্রাসকে কী করে প্রশ্রয় দিতে পারেন? এ সব বলে বিজেপি প্রকৃত সমস্যাগুলি থেকে নজর ঘোরাতে চাইছে।’’

গুজরাতে মোদীও এ দিন গরিবদের জন্য আবাসন উদ্বোধন করে বোঝাতে চান, তাঁর উন্নয়নের সুফল থেকে পিছিয়ে পড়া শ্রেণি বাদ পড়ছে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আগে নেতাদের ঘর নিয়ে উল্লাস হত। এখন দেশে এমন এক জন প্রধানমন্ত্রী যিনি গরিবদের ঘর দিয়ে আনন্দিত হন।’’ রাজীব গাঁধীর নাম না করে মোদীর কটাক্ষ, আগে ১ টাকা দিল্লি থেকে বেরোলে গরিবের হাতে ১৫ পয়সা যেত। এখন ১ টাকাই যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন