ফের মোদীকে তোপ রাহুলের। ছবি: এএফপি।
রাফাল-কাণ্ডে এ বার নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ তুললেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস সভাপতির অভিযোগ, দুর্নীতির জন্য বাছাই করা কিছু অফিসার, মন্ত্রী ও শিল্পপতিদের নিয়ে এক ‘মোগাম্বোর মতো মাকড়সার জাল’ তৈরি করা হয়েছিল। সামরিক বাহিনীর অর্থ লুট করার জন্য এই জালের সুতো ছিল মোদী ও তাঁর বন্ধু শিল্পপতিদের হাতে। রাহুলের মন্তব্য, ‘‘রাফাল দুর্নীতি মোদীজির কাণ্ডকারখানারই ঝলক স্পষ্ট।’’
রাহুলের এই অভিযোগের ভিত্তি হল, একটি সংবাদ পোর্টালের তদন্ত রিপোর্ট। যে রিপোর্ট বলছে, মোদী জমানায় ২০১৬-তে প্রশান্ত নারায়ণ সুকুলকে অতিরিক্ত কন্ট্রোলার জেনারেল অব ডিফেন্স অ্যাকাউন্ট নিয়োগ করা হয়। তাঁর স্ত্রী মধুলিকা সুকুল দু’বছর পরে ওই দফতরেরই প্রধানের পদে বসেন। প্রশান্ত সেই সময় বায়ুসেনার ফাইল দেখতেন। তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন তৈরি হয়নি। কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে, প্রশান্তর ভাই শান্তনু সুকুল অনিল অম্বানীর প্রতিরক্ষা সংস্থার হয়ে ২০১৫ থেকে কাজ করতেন। নৌসেনা থেকে অবসর নেওয়ার পরে শান্তনু বিভিন্ন প্রতিরক্ষা সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দিতে সাহায্য করতেন। এখনও তিনি অনিল অম্বানীর সংস্থার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। এর মধ্যে কোনও স্বার্থের সংঘাত রয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছে সংবাদ পোর্টালটি।
রাহুলের যুক্তি, ‘‘আরও অনেকের মুখোশ খুলবে।’’ আজ মধ্যপ্রদেশে প্রচারে গিয়েও মোদীকে কটাক্ষ করে রাহুল বলেন, ‘‘দেশের যে কোনও জায়গায় গিয়ে এখন চৌকিদার বললেই জবাব আসে, চোর হ্যায়। দেশে এক জন বাদে বাকি চৌকিদারেরা সকলেই সৎ। তবু এক জনের জন্য সব চৌকিদারের বদনাম হচ্ছে।’’ মোদীর দৌলতে চৌকিদারদের এই অপমানের জন্য ক্ষমা চান রাহুল।
আরও পড়ুন: শিব-শিব জপছেন চম্বলের দুর্ধর্ষ ডাকু মালখান সিংহ
মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানকেও নিশানা করেন রাহুল। বলেন, ‘‘পানামা কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছে ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহের ছেলের। আমি ভুল করে বলেছিলাম, শিবরাজজির ছেলের নাম রয়েছে পানামা পেপারে। এর জন্য তিনি মানহানির মামলা করার হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু আমি যখন ই-টেন্ডার বা ব্যপমে মানুষের টাকা গায়েব করা, বেআইন খনন বা মিড ডে মিল কেলেঙ্কারির কথা বলি তখন তো তিনি টুঁ শব্দটিও করেন না!’’
আরও পড়ুন: টেলিভিশনে বিজ্ঞাপনের দৌড়ে সবাইকে টপকে গেল বিজেপি
পাল্টা আক্রমণে শিবরাজ ‘পরদেশি’ তকমা দিয়েছেন রাহুলকে। বলিউডি গানের কথা ধার করে বলেছেন, ‘‘ইয়ে তো ঠেহরে পরদেশি, সাথ ক্যায়া নিভায়েঙ্গে, কাম তো মামা হি আয়েঙ্গে।...’’ মধ্যপ্রদেশে অনুগামীরা অনেকেই শিবরাজকে ‘মামা’ বলে থাকেন। মধ্যপ্রদেশে ভোট ২৮ তারিখ। শিবরাজের প্রশ্ন, ‘‘২৮ তারিখের পরে রাহুল কোথায় থাকবেন? তিনি তো দেশে কম, বিদেশেই থাকেন বেশি!’’
শিবরাজের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে প্রাক্ নির্বাচনী কিছু সমীক্ষা। বাস্তবে মিলবে কি না তার কোনও নিশ্চয়তা না থাকলেও, এই সব সমীক্ষার দাবি, ২৩০ আসনের বিধানসভায় বিজেপি পাবে ১২২টি। কংগ্রেসের আসন গত বারের চেয়েও কমবে। যদিও রাহুল এ দিনও বলেছেন, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, তেলঙ্গানা ও মিজোরামে প্রবল কংগ্রেস হাওয়ায় বিজেপি ভেসে যাবে। কমী-সমর্থকদের প্রতি রাহুলের বার্তা, ‘‘বুথ বুথে অটল থাকুন। এক ইঞ্চি পিছোবেন না। সকলকে বার্তা দিন মধ্যপ্রদেশের মানুষ প্রধান বিরোধী দলের পাশে রয়েছে।’’