রাহুল গাঁধী। ফাইল চিত্র।
যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান বা সিরিয়া নয়, মহিলাদের জন্য সব চেয়ে বিপজ্জনক দেশ ভারত— বিশেষজ্ঞদের এক সমীক্ষায় তেমন তথ্যই উঠে এসেছে। তালিকায় শীর্ষে ভারত রয়েছে, এই খবর প্রকাশিত হতেই বিষয়টি নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী।
তিনি আজ টুইটারে বলেছেন, ‘‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী বাগানে ঘুরে বেড়িয়ে যোগাসন করছেন। আর মহিলাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং হিংসা চলছেই। আফগানিস্তান, সিরিয়া, সৌদি আরবকে টেক্কা দিচ্ছে ভারত। কী লজ্জা!’’
নারী-সুরক্ষা নিয়ে একই ধরনের সমীক্ষা হয়েছিল ২০১১ সালে। তখন ভারত ছিল চতুর্থ স্থানে। আর সে বার সব চেয়ে উপরে ছিল আফগানিস্তান। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এ বছরের সমীক্ষায় ভারতের শীর্ষে পৌঁছে যাওয়ার অর্থ হল, এ দেশে মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য এখনও যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ২০১২ সালে রাজধানী দিল্লিতে বাসে গণধর্ষণের মতো ভয়াবহ ঘটনার পরেও মহিলাদের সুরক্ষা জাতীয় স্তরে গুরুত্ব পায়নি।’’
ভারত সরকারেরই তথ্য বলছে, ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে ৮৩ শতাংশ অপরাধ বেড়েছে। প্রতি ঘণ্টায় এখানে চারটি ধর্ষণের খবর মেলে। শুধু ধর্ষণ বা যৌন হিংসা নয়, বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন করে জেনেছেন, পাচার, যৌন দাসত্ব, পরিচারিকা হিসেবে কাজ, জোর করে বিয়ে, কন্যাভ্রূণ হত্যা— এই সব ক্ষেত্রেও ভারতের অবস্থা সব চেয়ে ভয়াবহ। এই সমীক্ষা নিয়ে ভারতের মহিলা ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেনি।
মহিলাদের পক্ষে বিপজ্জনক দেশ হিসেবে ভারতের পরেই রয়েছে আফগানিস্তান। সে দেশে নারী-সুরক্ষা নিয়ে কর্মরত কিম্বারলি ওটিস বলছেন, ছোট মেয়ে এবং মহিলারা আফগানিস্তানে তীব্র লিঙ্গ-বৈষম্য, নিগ্রহ, দারিদ্র এবং আরও নানা মানবাধিকার বিরোধী হিংসার শিকার।
এই তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে সিরিয়া। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে যথাক্রমে সোমালিয়া ও সৌদি আরব। মহিলাদের পক্ষে বিপজ্জনক দেশের তালিকায় এ বার ঢুকে গিয়েছে আমেরিকাও, দশম স্থানে। যা দেখে অনেকেই স্তম্ভিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, #মিটু আন্দোলনের জন্যই আমেরিকাও এ বার চলে এসেছে তালিকায়। ওয়াশিংটনে পারিবারিক হিংসার বিরুদ্ধে কর্মরত সিন্ডি সাউথওয়ার্থ বলেছেন, ‘‘মানুষ ভাবে, বিরাট আয়ের অর্থ আপনি নারীবিদ্বেষ থেকে মুক্ত। দুঃখের সঙ্গে বলছি, ব্যাপারটা ঠিক তেমন নয়।’’