‘শিখ দাঙ্গায় নেই কংগ্রেস-যোগ’

গত কাল লন্ডনে পার্লামেন্টের সদস্য ও স্থানীয় রাজনীতিকদের সঙ্গে রাহুলের আলোচনাচক্রে শিখ-বিরোধী দাঙ্গার প্রসঙ্গ ওঠে। ইন্দিরা গাঁধীর হত্যাকাণ্ডের পরে সরকারি হিসেবে ওই দাঙ্গায় প্রাণ গিয়েছিল প্রায় ৩০০০ শিখের

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৮ ০৪:০৭
Share:

আলোচনা:  ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের অনুষ্ঠানে রাহুল গাঁধী। শুক্রবার লন্ডনে। ছবি: পিটিআই।

১৯৮৪ সালের শিখ-বিরোধী দাঙ্গার সঙ্গে কংগ্রেসের যোগ ছিল বলে মনে করেন না দলের বর্তমান সভাপতি রাহুল গাঁধী। তবে তিনি চান, যে কোনও রকম হিংসায় জড়িতদের শাস্তি হোক। এতে তাঁর একশো শতাংশ সমর্থন রয়েছে।

Advertisement

গত কাল লন্ডনে পার্লামেন্টের সদস্য ও স্থানীয় রাজনীতিকদের সঙ্গে রাহুলের আলোচনাচক্রে শিখ-বিরোধী দাঙ্গার প্রসঙ্গ ওঠে। ইন্দিরা গাঁধীর হত্যাকাণ্ডের পরে সরকারি হিসেবে ওই দাঙ্গায় প্রাণ গিয়েছিল প্রায় ৩০০০ শিখের। রাহুল বলেন, ‘‘যে কোনও মানুষের উপরে যে কোনও মানুষের হিংসাই ভুল। ভারতে (শিখ দাঙ্গার) আইনি প্রক্রিয়া চলছে। আমি বলব, ওই সময়ে যা যা অন্যায় হয়েছে, তার শাস্তি হোক। একটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ট্র্যাজেডি যে ঘটেছিল, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু যদি বলেন কংগ্রেস জড়িত ছিল, আমি একমত হব না।’’

শিখ-নিধনে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছিল কংগ্রেসের দুই নেতা জগদীশ টাইটলার এবং সজ্জন কুমারের বিরুদ্ধে। রাহুলের এই মন্তব্যের জেরে তাঁর সমালোচনায় তেড়েফুঁড়ে নেমেছে বিরোধীরা। বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেছেন, ‘‘শিখ দাঙ্গার জন্য ২০১৩ সালে ক্ষমা চেয়েছিলেন মনমোহন সিংহ। রাহুল গাঁধী নিজের নেতৃত্বের সব গুণই জলাঞ্জলি দিলেন।’’ ক্ষুব্ধ শিরোমণি অকালি দলের প্রধান সুখবীর সিংহ বাদলও। তাঁর অভিযোগ, দাঙ্গায় জড়িত কংগ্রেস নেতাদের আড়াল করে রাহুল শিখদের ক্ষতে নুন ছড়িয়ে দিয়েছেন। সরব সুখবীরের স্ত্রী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কৌরও। রাহুলের পাশে দাঁড়িয়ে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম আজ কলকাতায় পাল্টা বলেন, ‘‘কংগ্রেস ওই সময়ে ক্ষমতায় ছিল। রাহুলের বয়স তখন ১৩-১৪। ঘটনাগুলোর জন্য তাঁকে দায়ী করা যায় না। রাহুল কাউকেই রেহাই দেননি। ১৯৮৪-র জন্য মনমোহন সিংহ সংসদে ক্ষমা চেয়েছিলেন।’’

Advertisement

গত কাল লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্সে রাহুলের পরবর্তী আলোচনাচক্রেও শিখ-বিরোধী দাঙ্গার প্রসঙ্গ ওঠে। কংগ্রেস সভাপতি তখন বলেন, ‘‘মনমোহন সিংহ আমাদের সকলের হয়েই কথাগুলো বলেছিলেন।’’ রাহুলের মতে, হিংসা ব্যাপারটা নিয়ে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। হিংসার শিকার যারা হননি তাঁরা অনেকে ভাবেন, ব্যাপারটা অনেকটা সিনেমার মতো। কিন্তু তা নয়। তিনি নিজে হিংসার শিকার। জার্মানির হামবুর্গের মতো লন্ডনেও রাহুল বলেন, ‘‘আমি নিজের ভালবাসার মানুষগুলোকে খুন হতে দেখেছি। আবার আমার বাবার হত্যাকারীর মৃত্যুও দেখেছি। এলটিটিই প্রধান প্রভাকরণের মৃতদেহ ও তার অবমাননা দেখে আমার খারাপ লেগেছিল। কারণ আমি ওঁর জায়গায় আমার বাবাকে এবং ওঁর সন্তানদের জায়গায় নিজেকে দেখছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন