দিল্লিতে রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।
ছুটিতে পাঠানো সিবিআই ডিরেক্টর অলোক বর্মার দায়ের করা মামলা আগামিকাল যখন সুপ্রিম কোর্টে উঠবে, তখন দিল্লিতে সিবিআইয়েরই সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাবেন রাহুল গাঁধী। তার আগে, আজ সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে নরেন্দ্র মোদীর রক্তচাপ বাড়াতে চাইলেন কংগ্রেস সভাপতি। বললেন, ‘‘রাফাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির তদন্ত শুরু হচ্ছিল বলেই রাত ২টোয় সিবিআই ডিরেক্টরকে সরিয়ে দিলেন তিনি। কারণ প্রধানমন্ত্রী জানেন, তদন্ত শুরু হলেই তিনি শেষ।’’
আজ রাজস্থান থেকে দিল্লি ফিরেই সাংবাদিক বৈঠক করেন রাহুল। বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর মানসিক অবস্থাটা চিনুন। নিজের চৌকিদার ভাবমূর্তি বানিয়েছেন। এখন বুঝছেন, ‘দুর্নীতি করেছি, ধরা পড়ে যাচ্ছি।’ তা না-হলে রাত ২টোয় সিবিআই ডিরেক্টরকে সরালেন কেন? সকাল ৯টা-১০টা-১১টায় নয় কেন? আত্মঘাতী পদক্ষেপ রুখতে হত্যার চেষ্টা করতে হল।
এক দিনের জন্য আমি সাংবাদিক হয়ে রাফাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তিনটি প্রশ্ন করতে চাই। কিন্তু তিনি টেবিল ছেড়ে পালিয়ে যাবেন।’’ সিবিআইয়ের অবশ্য দাবি, অলোক বর্মার টেবিলে রাফালের কোনও ফাইলই ছিল না। তাদের কাছে সমস্ত ফাইলের রেকর্ড আছে। এর পাশাপাশি, সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর অভিযোগ করেন, রাফালের কমিশন পাননি বলেই হতাশ রাহুল এত মিথ্যা প্রচার করছেন।
দাসো-র সিইও এরিক ট্রাপিয়ার আজ জানিয়েছেন, ভারত সরকারের চাপে নয়, তাঁরাই অনিল অম্বানীর সংস্থাকে বেছে নিয়েছেন। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যাল-ও সে কথা জানত। রাহুলের যদিও দাবি, ‘‘দাসো ভারত সরকারের হয়ে কথা বলবেই। নইলে তো চুক্তি বাতিল হয়ে যাবে! নিচুতলার অফিসারদের জিজ্ঞাসা করুন। তাঁদের ই-মেল, আলোচনা ইঙ্গিত দিচ্ছে, কী ভাবে অনিলের সংস্থাকে বরাত দিতে বাধ্য করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী একটাও কথা বলেননি। একের পর এক অপরাধ করে চলেছেন তিনি।’’
লোকসভায় বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গেকে দিয়ে আজ প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লিখিয়েছেন রাহুল। কারণ, নিয়মমাফিক প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত কমিটিই সিবিআই প্রধান নিয়োগ করে। তাঁকে হটানোর এক্তিয়ারও শুধু এই কমিটির। রাহুল তাই খড়্গেকে পাশে নিয়ে বলেছেন, ‘‘সিবিআই প্রধানকে সরানোটা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, বিরোধী নেতা, সংবিধান এবং দেশের মানুষের অপমান। এটি অনৈতিক ও অপরাধ।’’
অরুণ জেটলি প্রশ্ন তুলেছিলেন, বর্মা যে রাফালের তদন্তই শুরু করতে চাইছিলেন, তা রাহুল জানলেন কী করে? রাহুলের জবাব, ‘‘যশবন্ত সিন্হা, অরুণ শৌরিরা যে অভিযোগ করেছিলেন, তদন্তই তার পরিণতি। আর জেটলি নিজের মেয়ের সঙ্গে মেহুল চোক্সীর লেনদেনের কথা বলছেন না কেন? সিবিআইয়ের নতুন কার্যনির্বাহী ডিরেক্টরের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ আছে। আসলে প্রধানমন্ত্রী সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে নিজেকে বাঁচাতে মরিয়া। আজকের (বর্মার বাড়ির বাইরে) নজরদারিও তার অঙ্গ।’’