প্রিয়ঙ্কা বঢরার জন্য খোলা জমি রেখে উত্তরপ্রদেশে সংগঠনের রদবদল করল কংগ্রেস।
গত কয়েক দিন ধরেই উত্তরপ্রদেশের রণকৌশল স্থির করার জন্য সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী ও রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা গুলাম নবি আজাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন প্রিয়ঙ্কা। আজও উত্তরপ্রদেশে দলের সভাপতি রাজ বব্বরকে করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার বৈঠকে আজাদের বাড়িতে যান প্রিয়ঙ্কা। পরে আজাদ জানান, উত্তরপ্রদেশে নির্বাচন ঘোষণা হলে প্রিয়ঙ্কা প্রতি বারের মতো অমেঠী ও রায়বরেলীতে প্রচার করবেন। রাজ্যের আরও কেন্দ্র থেকেও তাঁকে প্রচার করানোর প্রস্তাব আছে। সময় এলে সেটিও বিবেচনা করা হবে। যার অর্থ, দাদা ও মায়ের নির্বাচনী কেন্দ্রের বাইরে গিয়েই প্রচার করবেন প্রিয়ঙ্কা।
তবে আজ দলের প্রাক্তন সভাপতি নির্মল ক্ষেত্রীকে সরিয়ে রাজ বব্বরকে সভাপতি করা হলেও প্রচার কমিটি ও সমন্বয় কমিটি এখনও গঠন করা হয়নি। দলের সূত্রের মতে, সে রকম একটি পদে প্রিয়ঙ্কাকে ভবিষ্যতে বসানো যেতেই পারে। অনেক দিন ধরেই কংগ্রেসের নির্বাচনী কৌশলী প্রশান্ত কিশোর বলে আসছেন, রাহুল কিংবা প্রিয়ঙ্কাকে মুখ করে উত্তরপ্রদেশের ভোটে যেতে। কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্ব জানেন, যে কাউকেই মুখ করা হোক না কেন, লখনউয়ের গদি দখল করা সামনের নির্বাচনে সম্ভব নয়। দলের এক নেতা তো বলেই ফেললেন, ‘‘আসলে কংগ্রেস ও বিজেপি, দু’জনেই তৃতীয় অবস্থানের দৌড়ে লড়ছে। প্রথমে এগিয়ে মায়াবতী। দ্বিতীয় স্থানে সমাজবাদী পার্টি।’’ এই অবস্থায় প্রিয়ঙ্কাকে মুখ করে পরে হারের দায় যাতে তাঁর ঘাড়ে এসে না পড়ে, সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে হচ্ছে কংগ্রেস নেতৃত্বকে।
আরও পড়ুন: যশবন্তের খোঁচায় বিব্রত বিজেপি
যে কারণে আজ গুলাম নবি বলেন, আমাদের কোনও তাড়াহুড়ো নেই। এমনকী, শীলা দীক্ষিত বা অন্য কাউকে দলের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী করা হবে কি না, তা স্থির করারও অনেক সময় আছে। আজাদ বলেন, ‘‘নির্বাচন ঘোষণা হবে ডিসেম্বর মাস নাগাদ। এক বার প্রচার শুরু হলে জল কোন দিকে গড়ায়, কোন নেতার আবির্ভাব ঘটে, সে সব কিছু বিচার করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ তবে জাতপাতে ভরা উত্তরপ্রদেশে আজ এক পঞ্জাবী নেতা রাজ বব্বরকে দলের সভাপতি করা হয়েছে, তা নিয়ে দলের কর্মীদের মধ্যেই অনেক অসন্তোষ রয়েছে। কারণ, রাজ বব্বর অভিনেতা থেকে নেতা হয়েছেন। তার উপর এখন তিনি রাজ্যসভার সাংসদ, তা-ও উত্তরপ্রদেশ থেকে নয়। দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব সামলাননি সে ভাবে, অথচ উত্তরপ্রদেশের মতো বড় রাজ্যের ভার তাঁকে দেওয়া হল!
দলের সাফাই, রাজ বব্বর চার বারের সাংসদ। জন্মও উত্তরপ্রদেশে। ফলে তিনি পাক্কা ইউপিওয়ালা। কিন্তু ঘটনাচক্রে চার বারের সাংসদের মধ্যে দু’বার তিনি ছিলেন সমাজবাদী পার্টিতে। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, অপেক্ষাকৃত লঘু মুখকে দায়িত্বে আনা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে রাহুল ও প্রিয়ঙ্কার উপরে প্রচারের আলো থাকে। তার উপর রাজ বব্বরের নতুন টিমে বিতর্কিত নেতা ইমরান মাসুদকে নিয়ে আসা হয়েছে, যিনি অতীতে নরেন্দ্র মোদীকে ‘টুকরো টুকরো’ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, ‘‘কংগ্রেসের মানসিকতা এর থেকেই বোঝা যায়। নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে যিনি প্ররোচনামূলক মন্তব্য করেছিলেন, তাঁকে পুরস্কৃত করা হল।’’