কৃষিঋণ মাফ রাজস্থানেও

নরেন্দ্র মোদী দাবি করেন, তিনি খয়রাতিতে বিশ্বাসী নন। তাই কেন্দ্র কৃষি ঋণ মকুব করেনি। কিন্তু নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশে কৃষি ঋণ মকুব করেছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:৪৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে কৃষক বিক্ষোভ তুঙ্গে। সেই আন্দোলনের মুখে এ বারে মাথা নোয়াতে হল রাজস্থানের বিজেপি সরকারকে। গত ১৩ দিন ধরে জেলাশাসকদের দফতরের সামনে সিপিএমের কৃষক সভার নেতৃত্বে কয়েক হাজার কৃষকের ধর্ণা, জাতীয় সড়ক অবরোধের পরে বুধবার গভীর রাতে বসুন্ধরা রাজে সরকার কৃষি ঋণ মকুব-সহ একগুচ্ছ দাবিদাওয়া মেনে নিয়েছে। রাজস্থানের কৃষিমন্ত্রী প্রভুলাল সাইনির ঘোষণা, ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ মকুব নিয়ে একটি উচ্চস্তরের বিশেষজ্ঞ কমিটি সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে পুরো প্রক্রিয়া ঠিক করবে।

Advertisement

নরেন্দ্র মোদী দাবি করেন, তিনি খয়রাতিতে বিশ্বাসী নন। তাই কেন্দ্র কৃষি ঋণ মকুব করেনি। কিন্তু নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশে কৃষি ঋণ মকুব করেছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। পরে একই রাস্তায় হেঁটেছে মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকারও। আগামী বছর রাজস্থান বিধানসভায় ভোট। চাপের মুখে এ বার সেখানকার বিজেপি সরকারকেও মাথা নোয়াতে হল।

উত্তরপ্রদেশে ঋণ মকুবের পরিসংখ্যান

Advertisement

সত্যিই কি এতে কৃষকদের লাভ হবে? কারণ উত্তরপ্রদেশের অভিজ্ঞতা বলছে, যোগী আদিত্যনাথের সরকার এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত কৃষি ঋণ মকুবের সিদ্ধান্ত নিলেও অনেকের ১০ টাকারও কম ঋণ মকুব হয়েছে! অভিযোগ, রাজস্ব অফিসারদের ঘুষ না দিলে ঋণ মকুব হচ্ছে না। ব্যাঙ্ক কর্তাদের যুক্তি, ওই কৃষকরা প্রায় পুরো ঋণ শোধ করে দিয়েছিলেন। সামান্য কিছু সুদ পাওনা ছিল। সেটাই মকুব করা হয়েছে।

রাজস্থানে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল সিপিএমের কৃষক সভা। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা-সহ একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেও আন্দোলন থামাতে পারেনি সরকার। সোমবার সন্ধ্যা থেকে রাজ্যের চার মন্ত্রী দফায় দফায় কৃষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বাধ্য হন। কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা বলেন, ‘‘বুধবার রাত একটা পর্যন্ত দর কষাকষির পর ওরা ১১ দফা দাবি মানতে রাজি হন।’’

রাজস্থানে কৃষকদের এই সাফল্য আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের প্রতিও বার্তা
বলে মনে করছেন সিপিএমের অধিকাংশ নেতা। তাঁদের মতে, দলের শক্তি না থাকলেও মানুষের সমস্যা তুলে ধরে তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন যে কোনও সরকারই দমাতে পারে না, এটা তার উদাহরণ। কৃষক সভার সভাপতি অমরা রাম বলেন, ‘‘আমরা কৃষক সভার আন্দোলনকে কৃষকদের আন্দোলনে পরিণত করতে পেরেছি।’’

কৃষি ঋণ মকুব ছাড়াও আরও বেশি সহায়ক মূল্যে ফসল কেনা, পশু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গোরক্ষক বাহিনীর হামলা বন্ধ (যদিও দুধ ব্যবসায়ী পেহলু খানের খুনে ৬ গোরক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নিয়েছে বসুন্ধরার পুলিশ!), পশু কেনাবেচার উপর জারি হওয়া নিষেধাজ্ঞা রদ-সহ একগুচ্ছ দাবি মেনেছে বসুন্ধরা সরকার। ৬০ বছরের বেশি বয়সী কৃষকদের ২ হাজার
টাকা করে পেনশন দেওয়ার প্রস্তাবও খতিয়ে দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন